PMAY প্রকল্পে আড়াই লক্ষ টাকায় বাড়ি নির্মাণের পরেও অবৈধ ঘোষণা! বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে PMAY প্রকল্পের বাড়ি। এমনই হাড়হিম করা ঘটনা ঘটেছে খারগোনের। যদিও এই বিষয়ে খারগোনের জেলা শাসক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট। সরকারি জমির উপর দখল করা বাড়ি উচ্ছেদে আমরা যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করেছি”।
সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের মাঝেই ঘটে এমন ঘটনা। যদিও প্রশাসনের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছে এই ঘটনা নিছকই কাকতালীয়। হাসিনা ফখরুর দাবি তিনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পেয়েছিলেন। তার অ্যাকাউন্টে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ২ লক্ষ টাকা ঢোকার পরই তিনি উচ্ছেদের নোটিশ পান বলে তাঁর দাবি। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং চলতি বছরের ১০ মার্চ আদালত তার নির্মাণ অবৈধ বলে ঘোষণা করেন। তারপরেও তিনি তিনি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ৫০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তার তদন্তে জানতে পারে হাসিনার বাড়িটি প্রায় ৫ বার জিওট্যাগিং করা হয়েছে। প্রথম জিও-ট্যাগিং হয় ২০২০ সালের ২২ জুলাই। চূড়ান্ত জিও-ট্যাগিং হয় ২০২১ সালের ৩ নভেম্বরে। যদিও এব্যাপারে কর্মকর্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে যে বাড়ির কথা বলা হচ্ছে তার ঠিকানা সম্পূর্ণ ভিন্ন, যদিও সেই ঠিকানার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে মুখে কুলুপ প্রশাসনের।
এদিকে যখন অবৈধ বলে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল হাসিনা ফখরুর বাড়ি, তারপর সামনে এসেছে আরও এক ঘটনা। খারগোনের সঞ্জয় নগরের টাওয়ারওয়ালি গালির একতলা বাড়ির দেওয়ালে নীল কালিতে লেখা এই বাড়ি বিক্রির জন্য। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা-আরবানের অধীনে নির্মিত বাড়িটি লীলা বাই ছাগন লালের যিনি একজন সামান্য শ্রমিক হিসাবে কাজ করেন। হাসিনা ফখরুর বাড়িটি ভেঙ্গে দেওয়ার একদিন আগেই লীলা বাইয়ের বাড়িটিতে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালায় উন্মত্ত জনতা। রাম নবমী মিছিল ঘিরে যে হিংসার পরিবেশ গড়ে ওঠে তাতে অন্তত ১০টি বাড়িতে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। হাসিনার মতই লীলা বাই PMAY প্রকল্পের টাকার তার বাড়িটি নির্মাণ করেন। দাঙ্গায় তার বাড়িটি ভেঙ্গে দেওয় উন্মত্ত জনতা।
লীলা বাই বলেন, “১৬ বছর আগে স্বামী মারা গিয়েছেন, বাড়িতে ছেলে আর আমি থাকি। চারবার দফায় দফায় PMAY প্রকল্পের টাকার এই বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। বিক্রয় বিজ্ঞপ্তির নীচে, বাড়িটিতে PMAY-U-এর একটি স্ট্যাম্প রয়েছে যাতে স্পষ্ট লেখা, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ২.৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে PMAY প্রকল্পের অদীনে এই বাড়িটি নির্মাণ করা হয়েছে’।
জেলা প্রশাসনের আধিকারিক বলেছেন যে দাঙ্গার সময় যে ক্ষতি হয়েছে সেই বাবদ ইতিমধ্যেই ৭৬ হাজার টাকা পেয়েছে লীলা বাই। দাঙ্গার দিনের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “সেদিন সন্ধ্যায় মিছিল দেখতে গিয়েছিল। ফিরে এসে দেখি সব শেষ!’ লীলা বাইয়ের ছেলে, পবন একটি দোকানে কাজ করেন তিনি বলেন, “২০১৫ সাল থেকেই আমরা এখানে রয়েছি’, একদিনেই সব শেষ হয়ে গেল”।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তার অর্ন্ততদন্তে জানতে পেরেছে কমপক্ষে আটটি বাড়ি এবং দোকানে অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটানো হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে PMAY প্রকল্পের এই বাড়িও। খারগোনের পুলিশ সুপার বলেন, দাঙ্গার ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১৮০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
Read story in English