CDS Bipin Rawat Death: কুন্নুর সেনা কপ্টার দুর্ঘটনায় প্রয়াত দেশের প্রথম সিডিএস বা প্রতিরক্ষা প্রধান বিপিন রাওয়াত। দেশের সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হওয়ার আগে তিনি ছিলেন ভারতের ২৭তম সেনা প্রধান। বংশপরম্পরায় ভারতীয় সেনাকে সমৃদ্ধ করেছে রাওয়াত পরিবার। বিপিন রাওয়াতের বাবা লেফটান্যান্ট জেনারেল লক্ষ্মণ সিং রাওয়াত ডেপুটি সেনা প্রধান পদে থেকে অবসর নিয়েছেন। তাঁর ঠাকুরদাও ছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্য। ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমি থেকে বেরিয়ে ১৯৭৮ সালে ১১ গোর্খা রেজিমেন্টে যোগ দেন বিপিন রাওয়াত। সেই সময় এই রেজিমেন্টের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন লক্ষ্মণ সিং রাওয়াত।
লৌহ মানসিকতা এবং স্পষ্টবক্তা বিপিন রাওয়াত তাঁর ৪ দশকের কেরিয়ারে সামরিক অফিসার হিসেবে একাধিক সাফল্য পেয়েছেন। দেশের তিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান (সিডিএস) হওয়া, তাঁর সেই সাফল্যে শেষ পালক। ২০২০ সালের পয়লা জানুয়ারি এই পদে আসীন হয়েছিলেন বিপিন রাওয়াত। তাঁর আগে ২০১৬-২০১৯ পর্যন্ত সামলেছেন দেশের সেনা প্রধানের দায়িত্ব। তাঁর আমলেই ঢেলে সাজানো হয়েছিল দেশের পদাতিক বাহিনীকে। আরও দক্ষ এবং ক্ষিপ্র হয়ে উঠেছিল ভারতীয় সেনা। ভবিষ্যতে যেকোনও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বাহিনীকে।
সিমলার সেন্ট এডওয়ার্ড স্কুলের প্রাক্তনী চেয়েছিলেন দেশ-বিশ্বের সামরিক ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে হাতুর তালুর মতো চিনতে। তাই একাধিক সামরিক স্কুল এবং কলেজের পড়ুয়া হয়েছিলেন এই সেনাকর্তা। ৪১ বছরের সামরিক জীবনে বিপিন রাওয়াত ভারতীয় সেনার ইস্টার্ন কমান্ডের এলএসি ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটেলিয়ন, ওয়েস্টার্ন কমান্ড, কাশ্মীর ডিভিশনের রাষ্ট্রীয় রাইফেল, নর্থ-ইস্ট কর্পসের কমান্ডিং অফিসার হিসেবে কাজ করেছেন। সেনা প্রধান হওয়ার আগে ভাইস আর্মি চিফ পদেও দাপটের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। ভারতীয় সেনার দক্ষ এবং অভিজ্ঞ কর্তা হিসেবে কঙ্গোয় পাঠানো শান্তি বাহিনীকে নেতৃত্ব দিয়েছেন বিপিন রাওয়াত। টানা ৪১ বছর দেশসেবার পাশাপাশি একাধিক সামরিক পুরস্কার প্রাপক প্রয়াত এই শীর্ষ সামরিক কর্তা। উত্তম যুদ্ধ সেবা পদক, সেবা পদক, যূষ সেবা পদক মতো একাধিক মেডেল তাঁর গলায় ঝুলেছে।
মুলত তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় রক্ষা, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের পরামর্শদাতা, কৌশল নির্মাণ, প্রতিরক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দের জটিল কাজ সামলানোর দায়িত্ব চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বা দেশের প্রতিরক্ষা প্রধানের। আর সেই কাজ গত দেড় বছর দক্ষতার সঙ্গে করছিলেন বিপিন রাওয়াত। ৮ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যুর সঙ্গেই দেশের প্রতিরক্ষা বিভাগ হারাল দক্ষ অভিভাবক এবং সামরিক পণ্ডিতকে। ভারত হারাল দেশের প্রথম সিডিএস বা চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফকে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন