শহরে ফের ডেঙ্গির আঘাত৷ একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয় আরুশ দত্ত নামে বছর এগারোর এক বালক। জানা গিয়েছে, কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিল সে৷ সোমবার তার অবস্থার আরও অবনতি ঘটতে থাকে, এবং এরপরেই রাতে তাকে ভর্তি করা হয় ওই বেসরকারি হাসপাতালে৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয় তার। কিন্তু মঙ্গলবার ভোরে মৃত্যু হয়েছে তার৷ ডেথ সার্টিফিকেটেও ডেঙ্গির কথা উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকরা৷
মৃত আরুশ দত্ত
কিছুদিন আগেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের চার ছাত্র। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের চিকিৎসা শুরু হয়েছিল। এখানেই শেষ নয়, বেশ কিছুদিন আগেই বিধাননগরের বাসিন্দা বছর দশেকের এক শিশুর মৃত্যু হয় নীলরতন সরকার হাসপাতালে৷ তার আগে ওই একই এলাকারই আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে ৷ এ ক্ষেত্রে শহরের নিকাশি ব্যবস্থারকেই দুষছেন এলাকার বাসিন্দারা৷ অভিযোগ, নিকাশি ব্যবস্থা এতটাই খারাপ শহরের, যে অল্প বৃষ্টিতেই নালা ভরে জল জমে যাচ্ছে আর সেই জলেই বাড়ছে মশার উপদ্রব।
আরও পড়ুন: Dengue Season: বর্ষায় প্রাদুর্ভাব এড়াতে সারাবছরই তৎপর, দাবি পুরসভার
এ দিকে, বেশ কিছুদিন আগে ডেঙ্গি প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন করলে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, “সারাবছরই ওয়ার্ড লেভেল, বোরো লেভেল, সেন্ট্রাল লেভেলে আমাদের ফ্রি-টায়াল সার্ভেলেন্স চলতে থাক। একটা রোড ম্যাপ ছকা থাকে এক্ষেত্রে, সেই ম্যাপ অনুযায়ী আমরা কাজ করি সারা বছর ধরে। আসলে ডেঙ্গির আক্রমনের কোনও নির্দিষ্ট সময় নেই। যেহেতু বর্ষার সময় বৃষ্টির কারণে অ্যাডিশনাল বহু ওয়াটার পকেট তৈরি হয়, সেই কারণে বর্ষায় ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব বাড়ে। তাই আমাদের স্লোগানই হল ‘সজাগ থাকুন বছর ভর, জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর’। পুরো বছরটা জুড়েই আমরা একইরকম তৎপরতায় কাজ করি। সপ্তাহে একদিন করে আমাদের কর্মীরা বাড়ি-বাড়ি গিয়ে প্রচার করেন, এছাড়াও বহু কাজ চলতে থাকে সারা বছরই।”
পাশাপাশি যে সমস্ত এলাকায় ডেঙ্গির প্রাদুর্ভাব বেশি সেসব জায়গায় বিশেষ অভিযান চালাতে বলা হয়েছিল সরকারের তরফে। প্রতিটি এলাকায় ক্যাম্পের সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি বাড়ি-বাড়ি গিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রচার করারও নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, বিপদের আশঙ্কা করে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ জানুয়ারী শুরুতেই সবরকম আগাম ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে স্বাস্থ্য দফতর। তাও ঠেকানো যাচ্ছে না ডেঙ্গির হামলা। পাল্লা দিয়েই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।