হেরোইন, ব্রাউন সুগার, গাঁজা, চরস...তালিকাটা বেশ লম্বা। এরকম রকমারি মাদক রোজই প্রায় বাজেয়াপ্ত করছে পুলিশ। কিন্তু এই গল্প আর পাঁচটা মাদক কারবারীর নয়। গাঁজাসহ এবার পুলিশের জালে ধরা পড়লেন বাংলার প্রাক্তন এক ফুটবলার। ফুটবলপ্রেমীদের কাছে পরিচিত নাম আমজাদ আলি খানের এহেন কীর্তি দেখে হতভম্ব অনেকেই।
মণিপুর থেকে গাঁজা নিয়ে হুগলি যাওয়ার পথে মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন এই ফুটবলারকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশের নার্কোটিক্স শাখা।আমজাদের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে হারপ্রীত সিং, অমিত রায়, বালউইন্দর সিং নামে আরও তিনজনকে। ধৃতদের থেকে ৪৫ প্যাকেট গাঁজা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা।
আরও পড়ুন: ১৭০ কোটি টাকা, ১০৫ কেজি সোনা, তামিলনাড়ুর কন্ট্রাক্টরের গুপ্ত ধন!
এদিন লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, এসটিএফ মারফৎ আগাম খবর পেয়েই সাউথ পোর্ট থানার ১২নং ডক এলাকা থেকে গাঁজাসহ অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে নারকোটিক্স দল। মণিপুর থেকে গাঁজা নিয়ে শিলচর হয়ে হুগলির জাঙ্গিপাড়ার দিকে যাচ্ছিলেন ধৃতরা। বাংলার ওই প্রাক্তন ফুটবলার ছাড়াও এই কাণ্ডে যে তিনজন গ্রেফতার হয়েছে, তারা হলো ট্রাকচালক হরপ্রীত সিং, খালাসি বলবিন্দর সিং, এবং অমিত রায় নামে এক ব্যক্তি। গাঁজা কারবারে ধৃতদের ভূমিকা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
একসময়ের নামী ক্লাবের ফুটবলার, তিনি কিনা গাঁজা কারবারে যুক্ত! লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রাক্তন ফুটবলারের আর্থিক সমস্যা ছিল। তবে কি আর্থিক অনটনই একসময়ের ফুটবলারকে গাঁজার নেশায় কাবু করেছে? কী এমন পরিস্থিতি হল, যে একজন ফুটবলারকে এমন পথ বেছে নিতে হল?
এ প্রসঙ্গে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ রীমা মুখোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "একসময় যাঁদের অবস্থা ভাল ছিল, পরে অভাবের জেরে অনেকেই এমন কিছু পথ বেছে নেন, যেগুলো আমরা ঘৃণার চোখে দেখি। লাইমলাইট চলে গেলে অনেকের মনকেই বিষণ্ণতা গ্রাস করে। তখন হতাশা থেকেও অনেকে এমনটা করে থাকেন। উনি যে পথ বেছেছেন, তা মোটেই ভাল নয়, কিন্তু ওঁর দিকে বোধহয় আমাদের আঙুল তোলাটা ঠিক হবে না। উনি কেন এমন কারবারে যোগ দিলেন, সেটা আমাদের সকলের ভাবা উচিত। এক্ষেত্রে আমাদের সমাজব্যবস্থার একটা ভূমিকা থাকা দরকার। একসময় উনি ফুটবল খেলেছেন, এখন এই অবস্থা, আমাদেরও কি কর্তব্য ছিল না ওঁকে দেখভাল করার?"