"আমায় না বলে চুপি চুপি সিনেমা দেখা হচ্ছে!" একথাই বিড়বিড় করে বলছিলেন মৃন্ময় ভৌমিক। দুপুরবেলায় মৃন্ময়ের খুনসুটিপনা মুখ সন্ধ্যেয় ফ্যাকাশে হয়ে গেল। সন্ধ্যে গড়িয়ে রাত হতেই চোখের কোণে জল ওই তরুণ ব্যবসায়ীর। সিএমআরআই হাসপাতালের এককোণে দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেললেন মৃন্ময়। ততক্ষণে খবর পেয়েছেন যে, সৌমেন নেই।
মাঝেরহাটে ব্রিজ ভেঙে গুরুতর আহত সৌমেন বাগ মৃত্যুর সঙ্গে শেষপর্যন্ত লড়াইয়ে হার মানলেন। মৃন্ময় কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, " দুপুরে সৌমেন ও পাপাইকে নন্দনে দেখি। আমায় না বলে ওরা সিনেমা দেখতে এসেছিল বলে রাগ হয়েছিল। অন্য এক বন্ধুকে বলছিলাম যে ওরা আমাদের না জানিয়ে এখানে এসেছে।" ঢোক গিলে মৃন্ময় আরও বললেন, " বাসে উঠি শুনি যে, ব্রিজ ভেঙে পড়েছে।ভাবলাম ওরা তো বেহালা এলাকায় থাকে। বাইকে করে তো ওরা ওই পথেই ফিরবে। একথা ভেবেই শিউরে উঠেছিলাম। ওদের যখন ফোনে পেলাম না, তখন আরও আঁতকে উঠলাম। খোঁজ না পেয়ে ওদের বাড়ি থেকেও ফোন করে আমায়। এরপরই বুঝতে পারি যে আশঙ্কাই সত্যি।"
সদ্য জন্মদিন কাটিয়েছেন মৃত সৌমেন
এরপর কী করলেন? জবাবে মৃন্ময় বললেন, "ওদের তো চিনতেই পারিনি প্রথম। পাপাই কালো রঙের জামা পরেছিল আজ। সেটা দেখেই শনাক্ত করি। সৌমেনকে ওভাবে দেখতে পাচ্ছিলাম না..." কথা বলতে বলতে আটকে গেল মৃন্ময়ের কন্ঠস্বর।
সৌমেন আর নেই। এসএসকেএমে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃন্ময় কাঁদতে কাঁদতে বললেন, " গত রবিবার ওর জন্মদিন ছিল। ভেবেছিলাম পরে ওর জন্মদিনের সেলিব্রেশন করব। কিন্তু আর হল না।"
এক বন্ধুকে হারিয়েছেন। আরেক বন্ধু পাপাই হাসপাতালে ভর্তি। আপাতত পাপাইকে কাছে পেতে চান মৃন্ময়।