Advertisment

মেডিক্যালে অনশন: স্বাস্থ্য ভবনে আজ বৈঠক, হস্টেল সমস্যা কি মিটবে?

অল ইন্ডিয়া ইনস্টিট্যুট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস)-এর রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে এই আন্দোলনের প্রতি সহমর্মিতার কথা জানানো হয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Medical college Hunger strike Express Photo Shashi Ghosh

ফাইল ছবি।

"মেডিকেল লড়ছে" এই স্লোগানেই ভরে গিয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ প্রাঙ্গন থেকে স্যোশাল মিডিয়া। অনশনের ২৬০ ঘন্টা পেরিয়েছে। শুক্রবার অবধি একাধিক বৈঠকের পর কর্তৃপক্ষ আংশিকভাবে ছাত্রদের দাবি মেনে নিলেও তাতে ফল বিশেষ মিলল না। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নতুন ভবনে মাত্র ২৫৬টি ঘরই বরাদ্দ করা যাবে সিনিয়র ছাত্রদের জন্য। এতে যে হস্টেল সমস্যার সমাধান হবে না, একথা স্পষ্ট। কাজেই কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি ছাত্ররা। বন্ধ হয়নি আন্দোলন।

Advertisment

অনশনকারী ছাত্র অনিকেত এবং দেবাশিসের অবস্থা খারাপ। বাকিদেরও শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। দেবাশিসের পাশে বসেই চোখে মুছে চলেছেন তাঁর মা ললিতা বর্মন, দিনহাটা থেকে সব কাজ ফেলেই এসেছেন বলে জানালেন। তাঁর কথায়, "ছেলেগুলোর থাকার জায়গা নেই, যারা ভবিষ্যতে মানুষকে ভাল রাখার দায়িত্ব নেবে, আজ তাদের একটু ভালভাবে থাকতে চাওয়া কি অন্যায়? যতক্ষণ না ওরা সুবিচার পাচ্ছে আমি যাব না কোথাও, ওদের সঙ্গেই থাকব।"

Kolkata Medical college hunger strike অনশনে অসুস্থ ছেলের পাশে মা। ছবি: ফেসবুক থেকে

এদিকে বিগত ১০ দিনে প্রিন্সিপালের চেয়ারের হাত বদল হয়েছে বেশ কয়েকবার। অধ্যক্ষ উচ্ছল ভদ্র হঠাৎই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন কয়েকদিন আগে। তাঁর জায়গায় সাময়িক দায়িত্বে এসেছিলেন ডাঃ রামানুজ সিনহা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন না জানিয়ে ইস্তফা দিয়েছেন তিনিও। তাঁর জায়গায় ফিরেছেন পূর্বতন অধ্যক্ষ ডাঃ অশোক ভদ্র। শুক্রবার সন্ধ্যাবেলা একদফা বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আগামিকাল ছাত্রদের পাঁচজন প্রতিনিধিকে সঙ্গে নিয়ে ডিরেক্টর অফ মেডিক্যাল এডুকেশনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন কর্তৃপক্ষ। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আশ্বাস মিলেছে।

তবে আজ ২১ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবস কর্মসূচীর ফলে মেডিক্যাল কলেজ হস্টেলের সমস্যার সমাধান কতদূর হবে এই নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার রাত দশটা নাগাদ বড়সড় পুলিশ বাহিনী আসে হাসপাতাল চত্বরে। আধ ঘণ্টা পরে সেখান থেকে তারা বেরিয়েও যায়। কিন্তু কী কারণে পুলিশবাহিনী এসেছিল তার স্পষ্ট উত্তর মেলেনি। এ বিষয়ে হাসপাতালের যুক্তি, ২১ জুলাই-এর আগাম নিরাপত্তার জন্যই এই ব্যবস্থা। যদিও ছাত্ররা নিশ্চিন্ত হতে পারেননি এ কথায়।

এদিকে মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রদের অনশন আন্দোলনের খবর ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়ে। অল ইন্ডিয়া ইনস্টিট্যুট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এআইআইএমএস)-এর রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে এই আন্দোলনের প্রতি সহমর্মিতার কথা জানানো হয়েছে।

aiims press release মেডিক্যাল কলেজের আন্দলোনের সমর্থনে এআইআইএমএস-এর রেসিডেন্ট ডাক্তারদের প্রেস বিবৃতি

আরও পড়ুন: কেমনভাবে থাকেন মেডিক্যাল কলেজে হবু ডাক্তাররা? এভাবেও থাকা যায়?

বলার অপেক্ষা রাখে না, মেডিক্যালের আন্দোলন রাজ্য জুড়ে সাড়া ফেলেছে ইতিমধ্যেই। একাধিক বার্তা এসেছে বিভিন্ন মহল থেকে। কখনও আইনজীবী, কখনও চিকিৎসক সংগঠন, কলেজের প্রাক্তনরা, সকলেই এসে দাঁড়িয়েছেন ছাত্রদের পাশে। সম্প্রতি মেডিক্যাল কলেজ প্রসঙ্গে কবি শঙ্খ ঘোষ বলেন, "কোনও দাবি মেটানোর জন্য অনশন বা ঘেরাওকে ব্যক্তিগতভাবে আমি খুব পছন্দ করি না। কিন্তু কোনো কোনো সঙ্গত দাবি নিয়ে আন্দোলন যখন হয় তখন তার সপক্ষে কথা বলতে চাই। মেডিক্যাল কলেজের অনশনরত এই ছাত্রদের সঙ্গত দাবি মেটানোর জন্য কতৃপক্ষ এখনও কোনো আয়োজন করছেন না কেন, তা আমি বুঝতে পারি না। অন্য সকলের সঙ্গে মিলে আমিও এই অনুরোধ জানাই, যত দ্রুত সম্ভব সমস্যাটির মীমাংসার জন্য কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিন। কোনও কোনও ছেলে এরই মধ্যে শারীরিক যে অবস্থায় পৌঁছেছে সেটা বিশেষভাবে উদ্বেগজনক। আমরা সকলেই দুশ্চিন্তায় আছি।"

kolkata news
Advertisment