Kolkata Nagerbazar blast: 'ঠিক সময় চিকিৎসা হল না বিল্টুর'

Kolkata Nagerbazar Blast Today: "সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে হয়তো ওকে হারাতাম না। ওকে ঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো হয়নি। সব হাসপাতাল ফিরিয়ে দিয়েছে। প্রায় চার ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়েছে।"

Kolkata Nagerbazar Blast Today: "সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে হয়তো ওকে হারাতাম না। ওকে ঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো হয়নি। সব হাসপাতাল ফিরিয়ে দিয়েছে। প্রায় চার ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়েছে।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Blast in Kolkata Nagerbazar:

Blast in Kolkata Nagerbazar: হাসপাতালে মৃত আট বছরের বিভাসের দাদার বন্ধুরা

বাপুজির জন্মদিন, ছুটির দিন, সক্কাল সক্কাল মায়ের হাত ধরে সেসময় ওই অভিশপ্ত জায়গায় দাঁড়িয়েছিল বিল্টু, বা বিভাস ঘোষ। বয়স প্রায় আট, আর চার-পাঁচটা বাচ্চার মতোই চঞ্চল। ওর খেলার সাথীরাই তো বলছে, "ও খুব চঞ্চল ছিল। সারাক্ষণ লাফালাফি করত।" কথাগুলো বলতে গিয়ে জল টলটল করছে বিল্টুর থেকে খানিকটা বড় দীপ দাস, সুকান্ত বিশ্বাস, প্রিয়জিৎ মণ্ডলের চোখে। ওদের সেই আদরের 'ছোট ভাই' আর নেই।

Advertisment

মঙ্গলবার সাতসকালে দমদমের নাগেরবাজারে বিস্ফোরণ প্রাণ কেড়ে নিয়েছে বিল্টুর। যে ঘটনায় পুজোর মুখে শোকে বিহ্বল গোটা এলাকা। যে মুহূর্তে ওরা জেনেছে যে, ওদের ছোট ভাই এই বিস্ফোরণে আহত হয়েছে, সেই মুহূর্ত থেকে ওরা নাওয়াখাওয়া ভুলে বিল্টুর সঙ্গে সঙ্গে ঘুরছে। ভাঙা গলায় বলে, "আমরা ওর দাদা বিকাশের বন্ধু। ওকে আমরা ছোটো ভাইয়ের মতো ভালবাসতাম। কী সব হল। খুব কষ্ট হচ্ছে।" ভাইকে হারিয়ে এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বরে তখন হাউহাউ করে কাঁদছে দমদম মতিঝিল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র, বিল্টুর দাদা বিকাশ। সান্ত্বনা দিতে শোকার্ত মুখে বিকাশকে ঘিরে বিল্টুর আদরের দাদারা।

Advertisment


বিল্টুর এই পরিণতিতে শোকস্তব্ধ দেবদীপ ঘোষ রায়, অভীক দাসরাও। নাগেরবাজারের কাজিপাড়ায় এঁদের বাড়িতেই দীর্ঘদিন ধরে পরিচারিকার কাজ করছেন বিল্টুর মা বাসন্তী ঘোষ, যিনি নিজেও এই বিস্ফোরণে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দেবদীপবাবু কাঁদতে কাঁদতে বললেন, "ও তো আমাদের ঘরের ছেলে। কী হয়ে গেল! আমাদের এলাকা যথেষ্ট শান্ত। এরকম ঘটনা ঘটবে ভাবিনি। এখন পাড়ায় ঢুকতে ভয় লাগবে।" বিল্টুকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল দেবদীপবাবু আরও বললেন, "আমার ছেলে ওমের সমবয়স্ক ও। ওমের খেলার সঙ্গী বিল্টু। ওকে জন্ম থেকে দেখছি। ভাবতে পারছি না ও নেই। ওমের জন্মদিন ১২ তারিখ। গতকালই রাতে ছেলের জন্মদিনের পার্টির প্ল্যান করছিলাম। ছেলে বলছিল, বিল্টুকে ওর জন্মদিনে ডাকবে।"

অভীক দাসের বাড়িতেও কাজ করেন বিল্টুর মা। তিনিও শোকার্ত গলায় বললেন, "বিল্টুকে ছোটবেলা থেকে দেখছি। কল্পনা করতে পারছি না যে ও নেই।"


এদিকে বিল্টুর মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন দেবদীপবাবুরা। তাঁদের অভিযোগ, "প্রথমে বিল্টুকে নাগেরবাজার আইএলএস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওখান থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর পার্ক স্ট্রিটের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানেও ফেরানো হয়। তারপর এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে আসি ওকে। ফলে অনেকটা দেরি হয়ে যায়।" তাঁর বক্তব্য, "সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে হয়তো ওকে হারাতাম না।" বিল্টুর ওই খেলার সাথীরাও আক্ষেপের সুরে বলল, "ওকে ঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো হয়নি। সব হাসপাতাল ফিরিয়ে দিয়েছে। প্রায় চার ঘণ্টা সময় নষ্ট হয়েছে।"