Advertisment

ডাক্তারকে চড় মারিনি, ধাক্কা মেরেছি, বললেন যাদবপুরের ওসি

কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওসির বক্তব্য তুলে ধরা হয়। যে পোস্টে ওসি জানিয়েছেন যে তিনি মেজাজ হারিয়ে ওই চিকিৎসককে ধাক্কা মারেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
জুনিয়র চিকিৎসক নিগ্রহকাণ্ডে মধুরেণ সমাপয়েৎ!

ওসি পুলক দত্ত। ছবি: ফেসবুক।

সিএমআরআই-এর জুনিয়র চিকিৎসককে আপাত নিগ্রহের ঘটনা নয়া মোড় নিল। জুনিয়র চিকিৎসক শ্রীনিবাস গেদামকে নিগ্রহের কথা কার্যত স্বীকার করে নিলেন অভিযুক্ত যাদবপুর থানার ওসি। কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে এ ঘটনায় অভিযুক্ত ওসির বক্তব্য তুলে ধরা হয়। যে পোস্টে অভিযুক্ত ওসি জানিয়েছেন যে তিনি মেজাজ হারিয়ে ওই চিকিৎসককে ধাক্কা মারেন। তবে চড় মারার কথা অস্বীকার করেছেন ওসি পুলক দত্ত।

Advertisment

জুনিয়র চিকিৎসককে নিগ্রহের ঘটনায় এদিন দিনের শেষে ফেসবুকে নীরবতা ভাঙে কলকাতা পুলিশ। পোস্টে অভিযুক্ত ওসির তরফ থেকে গোটা ঘটনার বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। পুলকবাবু জানিয়েছেন, তিনি চলতি মাসের ২৮ তারিখ কোয়ার্টারের বাথরুমে পিছলে পড়ে যান। তখনই বেসিনের কাচের টুকরো বাঁ হাতে লাগে। সে রাতেই সিএমআরআই হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। পরের দিন ডাঃ ছাজার তাঁর অস্ত্রোপচার করেন।

জুনিয়র চিকিৎসকের সঙ্গে গোলমাল প্রসঙ্গে ওই ওসি জানিয়েছেন, প্রেসক্রিপশন দেখতে চেয়ে তাঁর কেবিনে এক ব্যক্তি ঢোকেন, যাঁর গায়ে অ্যাপ্রন ছিল না। প্রেসক্রিপশন দেখে নীচের দোকান থেকে ওষুধ আনার কথা বলা হয় ওসিকে। এ নিয়েই মূলত বচসা বাঁধে। অসুস্থ অবস্থায় তিনি কীভাবে ওষুধ আনবেন, একথা ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করেন ওসি। তাতে ওই ব্যক্তি বলেন, বাড়ির লোককে দিয়ে আনাতে। এরপরই ওসি তাঁকে ফার্মেসির কর্মী ভেবে বলেন, এটা তো তাঁদেরই কাজ। জবাবে পুলকবাবুকে ওই ব্যক্তি হিন্দিতে বলেন, "আপ হসপিটাল সে নিকল যাইয়ে'', যা শুনেই মেজাজ হারান যাদবপুরের ওসি।

এরপর ডান হাত দিয়ে ওই ব্যক্তিকে ধাক্কা মারেন পুলকবাবু। তবে তাঁকে চড় মারেননি বলে দাবি ওসির। এমনকি পরে ওই ব্যক্তি একজন চিকিৎসক জেনে দুঃখপ্রকাশও করেন পুলকবাবু। অ্যাপ্রন পরা ছিল না বলে উনি বোঝেননি শ্রীনিবাস একজন চিকিৎসক। এখানেই অনেকের প্রশ্ন, চিকিৎসকের পরনে অ্যাপ্রন না থাকলে কি তিনি চিকিৎসক নন? আবার কেউ কেউ বলেছেন, ধাক্কা দেওয়াটা কি নিগ্রহ নয়‍?

আরও পড়ুন, ডাক্তারকে ওসির ‘চড়’, কিন্তু এখনও নেই কোনো লিখিত অভিযোগ

এদিকে কিছুদিন আগেই চিকিৎসকদের নিয়ে ফেসবুকে সচেতনতামূলক বার্তা দিয়ে পোস্ট করেছিল লালবাজার। এদিন সেই পোস্টের প্রসঙ্গ টেনে কলকাতা পুলিশের তরফে জানানো হয়, ''ডাক্তারদের নিগ্রহ চরম নিন্দনীয় কাজ ও দণ্ডনীয় অপরাধ। এটা আমরাই বারবার বলেছি। আগামী দিনেও এমন প্রচার চালাব।'' একইসঙ্গে ওই ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, গুরুত্ব দিয়ে এ ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গেও এ ব্যাপারে কথা বলে ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।

kolkata police, কলকাতা পুলিশ জি ডি হাসপাতালের প্রেসক্রিপশন

এ ঘটনা সামনে আসার পরই পুলিশের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে চিকিৎসক মহল। ফেসবুক পোস্টে কলকাতা পুলিশ লিখেছে, দুর্ভাগ্যের বিষয়, কোনও কোনও মহল থেকে বিষয়টিকে 'ডাক্তার বনাম পুলিশ'-এর চেহারা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে, সরকারি হাসপাতাল বা পুলিশ হাসপাতালে না গিয়ে কেন বেসরকারি হাসপাতালে গেলেন ওই ওসি, এ নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।

এ ঘটনায় আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, বাড়িতে দুর্ঘটনার পর প্রথমে জিডি হাসপাতাল ও ডায়াবেটিস ইনস্টিটিউটে যান ওই ওসি। সেখানে প্লাস্টিক সার্জেন ডা. এস এ ফয়জলের অধীনে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু হাসপাতালের ইমার্জেন্সি রুমেই চিকিৎসার দাবি জানান তিনি। ওসির এহেন দাবি নাকচ হওয়ায় তিনি রেগে যান বলে খবর। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে সঙ্গীরা ওসিকে নিয়ে সেখান থেকে সিএমআরআই-তে যান।

kolkata police kolkata news
Advertisment