Advertisment

ব্যাঙ্ক প্রতারণা তদন্তে কলকাতা পুলিসের বিশেষ দল

গোলপার্কে কানাড়া ব্যাঙ্ক এবং মল্লিক বাজারে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের এটিএম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে ইউবিআই ও কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কেও এমন জালিয়াতি হয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা প্রধান।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
atm, এটিএম

কানাড়া ব্যাঙ্কের এই এটিএমে স্কিমার লাগিয়ে টাকা তোলা হয়েছিল। ফাইল ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।

পরশু নিজের ফোনে চারটে মেসেজ পেয়ে চোখ কপালে উঠেছিল প্রশান্ত কুমার নামে এক শহরবাসীর। গড়িয়াহাটে তাঁর কানাড়া ব্যাঙ্কের শাখার অ্যাকাউন্ট থেকে চার বার ১০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা উধাও হয়ে গিয়েছিল। শুধু প্রশান্তবাবুই নন, গত দুদিনে এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছেন এ শহরের আরও অনেক বাসিন্দা। সাম্প্রতিককালে শহরে এত বড় ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনা ঘটেনি, এবং এ নিয়ে এবার নড়েচড়ে বসল লালবাজার। তদন্তের জন্য স্পেশ্যাল ইনভেস্টিগেশন টিম (সিট) গঠন করল কলকাতা পুলিশ।

Advertisment

আজ সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠকে গোয়েন্দা প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী জানান, "এ ঘটনার তদন্তের জন্য আমরা ডিসি সাইবার ক্রাইমের নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করেছি।"

আরও পড়ুন: একাধিক ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনায় শহরে চাঞ্চল্য

এখনও পর্যন্ত এ ঘটনায় শহরে প্রায় ৭৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানান প্রবীণবাবু। তিনি বলেন, "গত ২৪ জুলাই থেকে এটিএম থেকে টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে। প্রায় ৭৬টি অভিযোগ জমা পড়েছে। মোট ১৮-২০ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে।" দিল্লির কিছু এলাকা থেকে এই চুরি পরিচালনা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। মূলত স্কিমিং করেই এই টাকা তোলা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে প্রবীণবাবু আরও জানান, মূলত শহরের দুটি এটিএমে এর প্রভাব পড়েছে। গোলপার্কে কানাড়া ব্যাঙ্ক এবং মল্লিক বাজারে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের এটিএম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে ইউবিআই ও কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কেও এমন জালিয়াতি হয়েছে বলে জানান গোয়েন্দা প্রধান। শহরের সমস্ত এটিএম পরীক্ষা করে দেখার জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে ইতিমধ্যেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। তবে এ ঘটনার জেরে কোনও এটিএম বন্ধ করা হচ্ছে না।

Kolkata bank fraud সাংবাদিক সম্মেলনে গোয়েন্দা প্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠী। ছবি: সৌরদীপ সামন্ত

ব্যাঙ্ক প্রতারণার ঘটনায় কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যেই প্রমাণ সংগ্রহ করেছে বলেও জানা গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, "আমাদের হাতে প্রমাণ আছে। একটা দল এ ঘটনার পেছনে রয়েছে।"

যাঁরা ইতিমধ্যেই টাকা খুইয়েছেন, তাঁদের ৭-১০ দিনের মধ্যে সব টাকা ফেরানোর জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানান প্রবীণবাবু। তিনি বলেন, "আমরা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষর সঙ্গে বৈঠকে ৭-১০ দিনের মধ্যে টাকা ফেরানোর কথা জানিয়েছি, ওঁরা আমাদের এ ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন।" ব্যাঙ্কগুলিতে এ ঘটনায় স্পেশাল ডেস্ক খোলার কথাও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।

ব্যাঙ্ক জালিয়াতি ঠেকাতে শহরবাসীকে সচেতন হতেও পরামর্শ দেন প্রবীণবাবু। তিনি বলেন, এটিএম পিন নম্বর কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। একইসঙ্গে তিনি বলেন, এটিএমে টাকা তুলতে গেলে, আশপাশে কেউ আছেন কিনা দেখে নেওয়া ভাল। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে স্থানীয় থানা বা সাইবার সেলে অভিযোগ জানাতে হবে বলে জানান তিনি। একইসঙ্গে এ ঘটনায় শহরবাসীকে আতঙ্কিত হয়ে না পড়ারও পরামর্শ দেন।

অন্যদিকে, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে স্কিমিং ডিভাইস বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে। বিভিন্ন এটিএমে অ্যান্টি স্কিমিং ডিভাইস বসানো আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

kolkata police kolkata news kolkata ATM
Advertisment