ফিরোজ আহমেদ
হজের সময়ে কলকাতা এয়ারপোর্ট এলাকায় ব্যাপক যানজটের চেনা ছবিটা এবছর থেকে আর দেখা যাবে না। কারণ এবছর থেকে হজযাত্রায় বেশ কিছু কাঠামোগত পরিবর্তন আসতে চলেছে। হজযাত্রীদের সরাসরি বিমানবন্দরে পৌঁছনোর ব্যাপার আর থাকছে না। নিউটাউনের হজ হাউস থেকেই বিশেষ বাসে করে তাঁদের বিমানবন্দর পৌঁছে দেওয়া হবে, তাঁদের মালপত্রও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ সংগ্রহ করবেন হজ হাউস থেকেই। লাগেজ চেকিং এবং স্ক্যানিং তো বটেই, যাত্রীদেরও এই হজ হাউসেই এক প্রস্থ চেকিং সেরে নেওয়া হবে। রাজ্য হজ কমিটির সঙ্গে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, এয়ার ইন্ডিয়া, বিধাননগর কমিশনারেট, সিআইএসএফ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সহ হিডকো ও এনকেডিএ এর আধিকারিকদের নিয়ে বিশেষ বৈঠকের পর হজ কমিটির তরফ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।
হজযাত্রা নিয়ে বিশেষ বৈঠকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। ছবি: ফিরোজ আহমেদ
হজ যাত্রার সময়ে প্রতি বছরই কলকাতা বিমানবন্দর এলাকায় মাত্রাতিরিক্ত গাড়ির চাপ পড়ে এবং তার ফলে যানজট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। এবছর একই সঙ্গে রয়েছে নির্মীয়মাণ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ। ফলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা ছিলই। কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এ কারণেই নিউ টাউন থেকে হজযাত্রীদের একসঙ্গে নিয়ে আসার কথা ভেবেছেন।
বুধবারের বৈঠকে হজযাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে। নিউ টাউনের হজ হাউস থেকে বিমানবন্দরের বাসে নিয়ে যাওয়ার সময়ে তাঁদের খাবারের প্যাকেট এবং জলের বোতল দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
হজ কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউটাউনের হজ হাউসের সামনে হিডকোর নিজস্ব জমির উপর তৈরি হবে এহরাম ক্যাম্প। সেখানে হজযাত্রীদের আত্মীয় পরিজনরা থাকতে পারবেন। হজ হাউসে রাত্রিবাস করতে পারবেন কেবলমাত্র হজ যাত্রীরাই। এছাড়া ওই জমিতে তৈরি হবে মেডিক্যাল ক্যাম্পও। হজ যাত্রীদের যাঁরা বিদায় জানাতে আসবেন, তাঁদের এবার আর বিমানবন্দরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না।
নিউটাউনের হজ হাউসের সামনে হিডকোর নিজস্ব জমির উপর তৈরি হবে এহরাম ক্যাম্প। ছবি: ফিরোজ আহমেদ
হজ কমিটির পক্ষ থেকে পাওয়া এক নকশায় দেখা যাচ্ছে, হজ হাউস এর বাঁ দিকে লাগেজ জমা রাখার জায়গা থাকছে। হজ হাউসের পিছনের দিকে প্রথম বিমানের জন্য অপেক্ষারত হজ যাত্রীদের বাসে করে নিয়ে যাওয়া হবে এবং তাঁদের মালপত্র আলাদা কন্টেনারে করে নিয়ে যাওয়া হবে। অন্যদিকে হজ হাউসের ডান দিকে একটি হল ঘরে দ্বিতীয় বিমানের যাত্রীদেরও ওই একইভাবে নিয়ে যাওয়া হবে।
রাজ্য হজ কমিটির পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, এবছর প্রায় ১০ হাজার মানুষ হজ যাত্রায় যাবেন। ১৭ জুলাই হজের প্রথম বিমান মক্কার উদ্দেশে উড়ে যাবে। এ রাজ্য থেকে এয়ার ইন্ডিয়ার মোট ২৮টি বিমানে চড়ে হজ যাত্রীরা তীর্থস্থানে যাবেন। ১৭ থেকে ২৪ জুলাই পর্যন্ত দিনে দুটি করে বিমান ছাড়বে। শেষ চার দিন ছাড়বে তিনটি করে বিমান। হজ কমিটি সূত্রের খবর, এবছর যাত্রার সূচনা লগ্নে উপস্থিত থাকবেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, এবং অন্যান্য মন্ত্রীরা।