রাজ্য সরকারের সহায়তায় বাংলায় ফিরলেন শ্রমিকেরা। এক্সপ্রেস ফোটো- পার্থ পাল
কুলগারমে নৃশংস হত্যাকাণ্ডে কাশ্মীর থেকে বাংলায় ফিরলেন ১৩৮ জন বাঙালি শ্রমিক। সোমবার তাঁদের স্বাগত জানাতে সরকারের পক্ষে কলকাতা স্টেশনে উপস্থিত থাকলেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। প্রসঙ্গত, ২৯ অক্টোবর কুলগ্রামে জঙ্গিদের গুলিতে বাংলার পাঁচ শ্রমিক নিহত হওয়ার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, উপত্যকায় কর্মরত ১৩৮ জন শ্রমিককে ফিরিয়ে আনা হবে রাজ্যে। সেই উদ্যোগেই রাজ্য সরকারের তরফে সোমবার ফিরিয়ে আনা হয় কাশ্মীরে কর্মরত শ্রমিকদের।
দিল্লি থেকে ফিরলেন বাংলার শ্রমিকেরা। এক্সপ্রেস ফোটো- পার্থ পাল
Advertisment
রাজ্য সরকারের উদ্যোগে তাঁদের জন্য কলকাতা স্টেশনের বাইরে পাঁচটি বাসও রাখা হয়। বীরভূম, দক্ষিণ দিনাজপুর, মালদা জেলা থেকে আসা শ্রমিকদের জন্য আলাদা করে বাস রাখা হয়েছে। তাঁদের খাবার দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে। জানা গিয়েছে, এই ১৩৮ জন শ্রমিকদের মধ্যে ৫ জন আসামের বাসিন্দা। তাঁদেরকেও যথাযথ দায়িত্ব নিয়ে আসামে পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
তবে নিজের রাজ্যে ফিরে কতটা শান্তিতে শ্রমিকেরা? দিনাজপুরের শ্রমিক বলেন, "ওখানে থাকতে ভয় করছিল, কখন কেটে ফেলে ওরা। এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যের মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "পাঁচ জন মারা যাওয়ার জন্য ওঁরাও আতঙ্কে ছিলেন। এখন আমরা ওদের ফিরিয়ে এনেছি। তাঁদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থাও করেছি। ওদের জন্য বাসের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এখন ওঁদের মা বাবারা স্বস্তিতে থাকবেন যে ছেলেরা ঘরে ফিরে এসেছে। ৩৭০কে বিলুপ্ত করে অস্থির পরিস্থিতি তৈরি করেছে বিজেপি সরকার। কাশ্মীরে যেতেই ভয় পাচ্ছে সকলে। এখন কেন ৫২ ইঞ্চি ছাতি চুপসে গেছে?"
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামে পাঁচজন বাঙালি শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। আপেল বাগানে এরা শ্রমিকের কাজ করতেন। কুলগামের কাতরাসু গ্রামে যে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন মুর্শিদাবাদের এই শ্রমিকরা সেখানে হানা দেয় সশস্ত্র জঙ্গিরা। এরপর তাদের বাড়ি থেকে বের করে জঙ্গির দল। প্রায় ২০০ মিটার দূরে গিয়ে শ্রমিকদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্য হয় পাঁচ জনের। এরপরই শুক্রবার ইকো পার্কে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রশাসন খোঁজ খবর নিয়েছে। এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে এ রাজ্যের মুর্শিদাবাদ, মালদা ও দিনাজপুর থেকে ১৩১ জন মানুষ কাজ করতে বর্তমানে কাশ্মীরে রয়েছেন। তাদের রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ফিরিয়ে আনা হবে।’ জানা গিয়েছিল, শ্রমিকদের ফিরিয়ে সরকারের দুই আমলা কাশ্মীরে পৌঁছে গিয়েছিলেন। এই প্রক্রিয়া মসৃণ করতে রাজ্য থেকে কাশ্মীরে পুলিশ পাঠানোর কথা বিবেচনা করে নবান্ন। ১৩১ জনের বাইরেও এ রাজ্যের কোনও শ্রমিক সেখান থেকে বাংলায় ফিরতে চাইলে তাদেরও নিয়ে আসা হবে এমনটাই জানিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।