মধ্য এশিয়ার দেশ কিরগিজস্তানে ডাক্তারি পড়তে গিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন ভারতীয় ও পাকিস্তানি ছাত্ররা। বিদেশি পড়ুয়াদের সেদেশের টার্গেট করা হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে। বেশ কয়েকটি সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুসারে দাবি করা হয়েছে পাকিস্তানি পড়ুয়াদের উপর হামলায় বেশ কয়েকজন ছাত্র আহত হয়েছেন। যদিও দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, এই ঘটনায় কোন পাকিস্তানি পড়ুইয়া আহত হয় নি। স্থানীয় লোকজন অন্য পাকিস্তানি ছাত্রদেরও টার্গেট করছে। যেহেতু ভারতীয় এবং পাকিস্তানিরা ছাত্রদের মধ্যে ফারাক বিশেষ নেই তাই বিদেশমন্ত্রক ভারতীয় ছাত্রদের জন্য বিশেষ নির্দেশ জারি করেছে। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক কিরগিজস্তানে বসবাসরত ভারতীয় পড়ুয়াদের হোস্টেল বা ক্যাম্পাস ছেড়ে না বেরোনোর পরামর্শ জারি করেছে।
কিরগিজস্তানে পাকিস্তানি ছাত্রদের উপর হামলার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিওগুলিতে দাবি করা হচ্ছে যে কিছু মিশরীয় এবং আরব ছাত্র স্থানীয় মানুষের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দাবি করা হচ্ছে, এই ঘটনায় দায়ি পাকিস্তানি ছাত্ররা। এরপরই স্থানীয় লোকজন পাকিস্তানি ছাত্রদের উপর হামলা চালায়। হামলায় তিন পাকিস্তানি পড়ুয়া আহত হয়েছেন বলেও একাধিক সংবাদ মাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে। স্থানীয় লোকজন হোস্টেলে ঢুলে হামলা চালায় বলেও জানা গিয়েছে। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, যে হোস্টেলে হামলা চালানো হয় সেখানে অনেক ভারতীয় ও বাংলাদেশি পড়ুয়াও থাকে।
ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এ এ সংক্রান্ত একটি পরামর্শ জারি করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা একটি পোস্টে বিদেশ মন্ত্রক লিখেছে, 'আমরা ভারতীয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে পড়ুয়াদের ক্যাম্পাস ছেড়ে না বেরোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কোন সমস্যা হলে দূতাবাসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে'।
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও কিরগিজস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেছেন। এতে তিনি লিখেছেন, 'ভারতীয় পড়ুয়ারা যাতে নিরাপদ থাকে তার জন্য আমরা বিশকেকের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছি। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যাইহোক, ভারতীয় শিক্ষার্থীদের আপাতত বাড়ির ভিতরে থাকার এবং দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে'।
পাকিস্তানের দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, 'গত ১৩ মে কিরগিজ ও মিশরীয় পড়ুয়াদের মধ্যে ঝামেলা-মারপিট হয়। সেখান থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে'। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফও পরিস্থিতি নিয়ে "গভীর উদ্বেগ" প্রকাশ করে বলেছেন, "পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে সমস্ত প্রয়োজনীয় সাহায্যর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমি নিজে দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।"