পাঁচ মাস অতিক্রান্ত। ভারত-চিন সীমান্তের পূর্ব লাদাখে এখনও উত্তেজনা রয়েছে। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে রয়েছে দুই দেশের সেনা। এর আগে সেনা প্রত্যাহার ও স্থিতাবস্থা পুনপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছয়'বার ভারত-চিন সেনা কম্যান্ড পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। কিন্তু, তাতে কাজের কাজ হয়নি। চিন নিজের দখলদারি মনোভাব থেকে নড়বে না। এদিকে, সামরিক প্রস্তুতি থাকলেও আলোচনার রাস্তা থেকে সরবে না বলে জানিয়েছে ভারত। এই পরিস্থিতিতে সোমবার ভারত-চিন সেনা পর্যায়ের সপ্তম বৈঠক হতে চলেছে। ভারত সীমান্তের চুশুল মলডোতে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বৈঠকে প্রথমবারের জন্য উপস্থিত হওয়ার থাকার কথা দুই দেশের বিদেশমন্ত্রকের প্রতিনিধির।
গত ছয়'টি সেনা বৈঠকে ভারতীয় হয়ে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন ১৬ কর্পস কম্যান্ডার লেফটানেন্ট জেনারেল হরিন্দার সিং। আগামী ১৪ অক্টোবর তিনি অন্যত্র বদলি হবেন। তাঁর জায়গায় আসবেন লেফটানেন্ট জেনারেল পি জি কে মেনন। তাই এ দিনের বৈঠকই শেষবারের মতো অংশ নেবেন জেনারেল হরিন্দার সিং শেষ বৈঠক।
এ দিনের দুই দেশের সেনা বৈঠক থেকে সীমান্তের পরিস্থিতি প্রশমণ হবে বলে আশা করছে না ভারতীয় সেনাবাহিনী। বর্তমান প্রেক্ষিত বিবেচনা করে প্যাংগং লেকের উত্তর এবং দক্ষিণ প্রান্ত-সহ লাদাখের সংঘাতের জায়গাগুলিতে যথেষ্ট উত্তেজনা থাকায় বাহিনীকে শীতকালেও লাদাখে মোতায়েন রাখার প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে ভারতীয় সেনা। বর্তমানে লাদাখ সীমান্তেদ দুই দেশের প্রায় ৫০ হাজার করে সেনা মোতায়েন রয়েছে। আকাশ পথে সুরক্ষার জন্য সামরিক সম্ভাব, সামরিক ট্যাঙ্ক, সমরাস্ত্র মজুত রেখেছে দুই দেশের তরফেই। শীতে অধিক উচ্চতায় প্রতিকূল পরিস্থিতি হলেও চিনের গতিবিধি মেপেই পদক্ষেপ করতে চাইছে নয়াদিল্লি।
মূলত লাদাখ সীমান্তে সেনা কমানোর মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমন করা, প্যাংগং এলাকায় টহলদারি প্রোটোকল তৈরি করার মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা চলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর দুই দেশের ষষ্ঠ সেনাস্তরের বৈঠকে উভয় বাহিনী সহমতে পৌঁছায় যে, পূর্ব লাদাখের বিতর্কিত সীমানায় দু-দেশের কেউই এর মধ্যে আর নতুন করে সেনা পাঠাবে না। নয়াদিল্লি ও বেজিংয়ের তরফে যৌথ বিবৃতিতে এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। বিবৃতিতে বলা হয়, আপাতত লাদাখ সীমান্তের প্রকৃত নিয়ন্ত্ররেখায় আর অতিরিক্ত বাহিনী পাঠাবে না ভারত এবং চিন। সীমান্তে ভুল বোঝাবুঝি কমাতে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগও বাড়াবে দু'পক্ষ। যৌথ বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সমস্যা সমাধানে দু-দেশের প্রতিনিধিরাই নিজেদের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা করেছেন। সমস্যার গভীরে গিয়ে আলোচনা হয়েছে। যদিও, বর্তমানে মোতায়েন থাকা দু-দেশের সেনা প্রত্যাহার বিষয়ে সেই বৈঠকে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন