লখিমপুর কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্ট তলব করতেই নড়েচড়ে বসেছে যোগী প্রশাসন। বৃহস্পতিবার শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পরই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আশিসকে জেরা করার জন্য ডেকে পাঠাল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। লখনউয়ের আইজি লক্ষ্মী সিং জানিয়েছেন, "আশিস মিশ্রকে তলব করা হয়েছে তদন্তের স্বার্থে জেরা করার জন্য। তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হবে। তার ভিত্তিতে আমরা প্রমাণ জোগাড় করব। এই ঘটনায় আরও দুজনকে জেরা করা হয়েছে।"
উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর লখিমপুর খেরিতে কৃষকদের মিছিলে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালিয়ে চারজনকে পিষে মারার ঘটনায় অভিযুক্ত হিসাবে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর ছেলে আশিসের নাম উঠে আসে। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, কনভয়ের একটি এসইউভি চালিয়ে কৃষকদের পিষে দেন আশিস। এরপর হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। মোট আটজন নিহত হন লখিমপুরে। এই ঘটনায় বিরোধীরা আশিসের গ্রেফতারির দাবি জানিয়েছে। পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি এই ঘটনায়।
প্রসঙ্গত, লখিমপুর খেরিতে চার কৃষক-সহ আটজনের মৃত্যুর ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। বৃহস্পতিবার এইভাবেই মর্মান্তিক ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে যোগী প্রশাসনের কাছে গোটা ঘটনার স্টেটাস রিপোর্ট তলব করল শীর্ষ আদালত। জানতে চাইল, এই ঘটনায় এফআইআর দায়ের এবং কজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি এন ভি রামান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে এদিন লখিমপুর কাণ্ডের স্বতঃপ্রণোদিত মামলার প্রথম শুনানি হয়। উত্তরপ্রদেশ সরকারের সিনিয়র আইনজীবী গরিমা প্রসাদ এদিন আদালতে জানান, রাজ্য সরকার একটি স্টেটাস রিপোর্ট কোর্টে জমা দেবে। একদিন সময় চেয়েছে রাজ্য সরকার। বিচারপতিদের বেঞ্চ আগামিকাল সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে শুনানি করবে।
এদিন বেঞ্চের অন্য বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, "আমরা জানতে পেরেছি আট জন ঘটনায় মারা গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কৃষকরাও রয়েছেন। একজন সাংবাদিক ও অন্যান্যদের মৃত্যুর খবরও পেয়েছি। আমরা জানতে চাই, কাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে এবং কাউকে গ্রেফতার করা হয়েছে কি না। দয়া করে সেই স্টেটাস রিপোর্ট আদালতে জমা করুন।"
আরও পড়ুন লখিমপুর-কাণ্ডের সমালোচনার ‘শাস্তি’! বিজেপিতে পদ খোয়ালেন বরুণ গান্ধি
প্রসঙ্গত, বুধবারই শীর্ষ আদালত লখিমপুর কাণ্ডে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করে। উত্তরপ্রদেশের আইনজীবী শিবকুমার ত্রিপাঠী এবং সি এস পাণ্ডার চিঠির ভিত্তিতে মামলা দায়ের হয়। আইনজীবী ত্রিপাঠী চিঠিতে জানান, "আমার আশা আপনারা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করবেন। বেশ কয়েকজন কৃষক মারা গিয়েছেন প্রশাসনের গাফিলতিতে। এই ইস্যুতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন