লখিমপুর খেরি মামলায় জামিনে মুক্ত মন্ত্রী-পুত্র আশিস মিশ্র। যদিও এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সুপ্রিম কোর্ট। হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদজালতে মামলাও হয়েছে। উত্তরপ্রদেশ সরকারকে এই মামলায় জবাব দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যেই হোলির আগে এই মামলায় অন্যতম সাক্ষী দিলজ্যোত সিংয়ের উপরে হামলার অভিযোগ উঠেছিল। দায়ের হয় এফআইআর। যার ভিত্তিতে রাজ্য সরকারের ব্যাখ্যা চায় শীর্ষ আদালত ও লখিমপুর মামলায় সাক্ষীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার আদালতে যোগী সরকার জানিয়েছে যে, লখিমপুর মামলার সঙ্গে সাক্ষীকে নিগ্রহের কোনও সম্পর্ক নেই। হোলিতে কয়েকজন তাঁর দিকে রঙ ছুঁড়েছিল, সেই সময় আপত্তি করেন দিলজ্যোত সিং। যা নিয়েই বচসা এ পরে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল।
এফআইআরে সাক্ষী দিলজ্যোত জানিয়েছিলেন যে, 'আমাকে হুমকি দেওয়া ও আক্রমণ করা হয়েছে। হামলাকারীরা বলছিল যে, 'ঘটনায় এক নম্বর অভিযুক্ত আশিস মিশ্র জামিনে মুক্ত, শাসক দলই ফের ভোটে জিতেছে। ফলে আমাকে তারা দেখে নেবে।' এর প্রেক্ষিতেই আদালতে রাজ্য সরকার হলনামা দিয়ে জানিয়েছে যে, 'সাক্ষী গানার মনোজ সিং (কোর্টের নির্দেশের পর সাক্ষীদের সুরক্ষা কর্মী) সহ বাকি ৩ জন স্বতন্ত্র প্রত্যক্ষদর্শীর নিরাপত্তার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হয়েছে। ওই ৪ জনের সবাই বলেছে যে, গালাগাল দেওয়ার কারণে ঘটনাটি হঠাৎ করেই ঘটেছিল।'
হলফনামায় রয়েছে যে, 'উল্লিখিত প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য অনুসারে, সাক্ষী আখ বোঝাই একটি ট্রাক্টর ডাঙ্গার কাছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দিকে আসেন। এই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুলিশের বন্দুকধারী মনোজ সিং। ওই সময় স্কুলের কাছে কিছু লোক হোলির রং নিয়ে খেলছিল এবং দিলজ্যোত সিংয়ের ওপরও রং ছুড়ে মারে। দিলজ্যোত সিং এতে আপত্তি করে, ফলে তাঁর সঙ্গে অন্যদের ঝগড়া শুরু হয়, যার মধ্যে একজন দলজ্যোতকে বেল্ট দিয়ে আঘাত করে এবং অন্যরা তাকে লাথি ও ঘুষি মেরেছিল।'
গত বছরের ৩ অক্টোবর উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র ও উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্যের বিরুদ্ধে পথ আটকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল কৃষকরা। সেই সময়ই একটি কালো এসইউভি গাড়ি এসে কৃষকদের ধাক্কা মারে। গাড়ি চাপা পড়ে চারজন কৃষকের মৃত্যু হয়। অভিযোগ ওঠে, মন্ত্রীপুত্র আশিস মিশ্রই ওই গাড়িতে ছিলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। এক সাংবাদিক সহ আরও চারজনের মৃত্যু হয়।
লখিমপুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা দেশে উত্তেজনা ছড়াতেই সুপ্রিম কোর্টের তরফে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা গ্রহণ করা হয় এবং বিশেষ তদন্তকারী দলের হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয়। গত বছরই সিটের রিপোর্টে জানানো হয়, দুর্ঘটনা নয়, ইচ্ছাকৃতভাবেই গাড়ি চাপা দিয়ে মারা হয়েছিল কৃষকদের। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এলাহাবাদ হাইকোর্ট জামিন দেয় আশীষ মিশ্রকে।
Read in English