লখিমপুর খেরির ঘটনার সাক্ষীদের উপযুক্ত নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। উত্তর প্রদেশ সরকারকে এই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ৩ অক্টোবর উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে কৃষকরা অবস্থান বিক্ষোভ করছিলেন। ঠিক সেই সময়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের কনভয়ের গাড়ি বিক্ষোভরত কৃষকদের পিষে দিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় চার কৃষকের মৃত্যু হয়। ঘটনা-পরবর্তী সংঘর্ষের জেরে দুই বিজেপি কর্মী-সহ আরও চারজন নিহত হন। ইতিমধ্যেই লখিমপুর খেরির ঘটনায় ৩০ জনের ১৬৪টি বিবৃতি রেকর্ড করেছে উত্তর প্রদেশ সরকার। যাঁদের মধ্যে ২৩ জন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। এবার এই প্রত্যক্ষদর্শীদের নিরাপত্তার উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে উত্তর প্রদেশ সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৮ নভেম্বর।
এর আগে ৮ অক্টোবর লখিমপুর খেরির ঘটনার পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি এনভি রমানার নেতৃত্বে থাকা বেঞ্চ শ্যাম সুন্দরের হত্যার তদন্তের একটি স্ট্যাটাস রিপোর্ট চেয়েছিল উত্তর প্রদেশ সরকারের কাছে। লখিমপুর খেরির ঘটনায় তদন্তে ফরেনসিক ল্যাবরেটরিগুলিকে সাক্ষীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা ভিডিও ক্লিপ-সহ অন্যান্য জিনিসের ডিজিটাল ডেটা নথিভুক্ত করে রাখতে বলেছে। পুলিশকে এই মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত প্রাসঙ্গিক আরও কিছু সাক্ষীর বক্তব্য রেকর্ড করতেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানির শুরুতে সিনিয়র অ্যাডভোকেট হরিশ সালভে বেঞ্চকে জানান, লখিমপুর খেরির হিংসার তদন্তে তৈরি সিট ৬৮ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩০ জনের বয়ান রেকর্ড করেছে। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ওই বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। আইনজীবী হরিশ সালভে আদালতে বলেন, “৩০ জন সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে ২৩ জন প্রত্যক্ষদর্শী। বেশ কয়েকজন আবার সাধারণ সাক্ষী। তাই তাদের ১৬৪টি জবানবন্দি নেওয়া হয়নি।” এরপরই প্রধান বিচারপতি সালভেকে প্রশ্ন করেন, “আপনার বা অন্য আর কারও এমন কোনও মামলা আছে, যেখানে শতাধিক কৃষক একটি সমাবেশে রয়েছেন এবং মাত্র ২৩ জন সেখানে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী?”
উত্তরে সালভে প্রধান বিচারপতিকে বলেন, “যাঁরা সেদিন ঘটনাস্থলের কাছাকাছি ছিলেন এবং গাড়িতে থাকা যাত্রীদের দেখেছিলেন তাঁদেরই বয়ান নেওয়া হয়েছে।” এদিন মামলার শুনানি চলাকালীন বিচারপতি সূর্য কান্তন উল্লেখ করেছেন “যে একটি জায়গায় ৪-৫ হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তাঁদের অধিকাংশই স্থানীয় বাসিন্দা। তাই অভিযুক্তদের শনাক্তকরণ বড় সমস্যা হওয়া উচিত নয়।”
আরও পড়ুন- আরও কমল অ্যাক্টিভ কেস, ৮ মাসে দেশে সর্বনিম্ন করোনার দৈনিক সংক্রমণ
উল্লেখ্য, কেন্দ্রের কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে অনড় কৃষকরা ৩ অক্টোবর উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। সেই সময়ে লখিমপুরে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্র। ফেরার পথে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের কনভয়ের গাড়ি বিক্ষোভরত কৃষকদের পিষে দিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় চার কৃষকের মৃত্যু হয়। পরবর্তী সময়ে সংঘর্ষে আরও চারজনের মৃত্যু হয়। লখিমপুরের ঘটনা নিয়ে উত্তাল হয় গোটা দেশ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলের বিরুদ্ধে কৃষকদের সমাবেশের উপর দিয়ে গাড়ি চালানোর অভিযোগ ওঠে। শেষমেশ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর ছেলে আশিস মিশ্রকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন