ঋষিকেশ বললেই ভ্রমণপ্রিয় বাঙালি বলবেন লছমনঝুলা, সুবিখ্যাত এই তীর্থস্থানে গঙ্গার ওপর অতি পরিচিত সেতু। শুক্রবার থেকে সবরকম যান চলাচলের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হলো এই সেতু, কারণ বিশেষজ্ঞদের মতে, আর কোনোরকম ভার সহ্য করতে পারছে না সেটি।
উত্তরাখণ্ড রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব ওম প্রকাশ জানিয়েছেন, বিশেষজ্ঞদের একটি দলের পরামর্শেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে লছমনঝুলা, কারণ সেতুটির অধিকাংশ অংশই ‘ফেল’ অথবা ‘কোল্যাপ্স’ অবস্থায় রয়েছে। শুধু যানবাহন নয়, পথচারীদের জন্যও বন্ধ হয়ে গেল লছমনঝুলা। এমনটাই নিদান দিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা, কারণ আর বিন্দুমাত্রও ভার বইতে পারছে না এই সেতু, জানিয়েছেন ওম প্রকাশ।
ওই আধিকারিক আরও জানিয়েছেন, সম্প্রতি অভূতপূর্বভাবে বেড়েছে সেতুর ওপর দিয়ে যানবাহন এবং পথচারীদের চলাচলের মাত্রা, যার ফলেই সম্ভবত সেতুর একটি স্তম্ভকে দেখলে মনে হচ্ছে, একদিকে হেলে পড়েছে সেটি। তাঁর বক্তব্য, সেতু খোলা রাখা বিপজ্জনক বুঝেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের রিপোর্টে বিশেষজ্ঞরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, “এই মুহূর্তে সেতু বন্ধ করে দেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন, নাহলে যে কোনও সময় বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”
গঙ্গার ওপর দিয়ে ১৯২৩ সালে নির্মিত লছমনঝুলা উত্তরাখণ্ডের ঋষিকেশ শহরের অতি পরিচিত দৃশ্যগুলির একটি। যোগাসন এবং তপস্যার জন্য খ্যাত ঋষিকেশ অতি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রও বটে। লছমনঝুলার একদিকে, অর্থাৎ গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে, তেহরি জেলার তপোবন গ্রাম, অন্যদিকে পাউরি জেলার জঙ্ক।
শহরে পর্যটক হোন বা তীর্থযাত্রী, তাঁদের কাছে অন্যতম প্রধান আকর্ষণগুলির একটি অবশ্যই লছমনঝুলা। আদতে পথচারীদের জন্য নির্মিত এই সেতুর ওপর দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করে থাকে দু-চাকার গাড়ি। সেতুর নামকরণ করা হয় লক্ষণের নামে, কারণ কথিত আছে, পাটের দড়ির সাহায্যে এই জায়গা দিয়েই নদী পেরোন তিনি।
বহু সফল হিন্দি ছবি, যেমন ‘গঙ্গা কি সৌগন্ধ’ বা ‘সন্ন্যাসী’, অথবা ‘সিআইডি’-র মতো জনপ্রিয় সিরিয়ালের শুটিং হয়েছে লছমনঝুলায়।