প্রবল বৃষ্টি, ভুমধস, হড়পা বানের কবলে হিমাচল। ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ছুঁয়েছে ৭৪। ১৭ অগাস্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিমলায় শিব মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ থেকে আরও একটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃষ্টি-বিধ্বস্ত হিমাচল প্রদেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭৪-এ দাঁড়িয়েছে। সিমলায় ভূমিধসের বলি ২১ জন।
বৈজ্ঞানিকভাবে পাহাড় কেটে রাস্তা নির্মাণ হয়নি, নির্বিচারে চলেছে অবৈধ নির্মাণ কাজ। যেখানে সেখানে পাহাড় কেটে বসতি স্থাপনের ফলেই ঘটে গিয়েছে মর্মান্তিক বিপর্যয়। রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এমনটাই জানিয়েছেন হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু। তিনি আরও বলেছেন, ভবিষ্যতে এবিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে রাজ্য সরকার।
রাজ্যে ভারী বর্ষণ, ভূমিধস ও হড়পা বানে কমপক্ষে ৭৪ প্রাণ হারিয়েছেন। এবং এক হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী গতকালই ক্ষতিগ্রস্ত জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানান,“লোকসান কাটিয়ে উঠতে আমাদের এক বছর সময় লাগবে। আগামী ১০ বছরের মধ্যে, দেশের এক নম্বর রাজ্যে পরিণত হবে হিমাচল’। তবে প্রশ্ন উঠেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ-এর তরফে (NDMA) ২০১৯-এই এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট সামনে আনা হয়। যেখানে যথাযথ পরিকল্পনার অভাব, অবৈধ নির্মাণ, অত্যধিক পর্যটনের ওপর আলোকপাতকরা হয়। তারপরেই সেই রিপোর্টকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কীভাবে দিনের পর হিমাচল সহ একাধিক পার্বত্য রাজ্যে নির্বিচারে চলেছে অবৈধ নির্মাণ কাজ?
সাম্প্রতিক ভূমিধসের চিত্র চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে ব্যাপক সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির মধ্যে হড়পা বান, ভুমিধসে যে বাড়িঘড় গুলি ভেসে গিয়েছে সেগুলির বেশিরভাগ নির্মাণ পরিকল্পনায় ছিল বড় আকারের ত্রুটি। নথিতে বলা হয়েছে “হিমালয়ের শহরগুলি ক্রমবর্ধমান এবং আবর্জনা এবং প্লাস্টিকের পাহাড়ে পরিণত হতে শুরু করেছে, ড্রেনেজ সিস্টেমের ঘাটতি, দীর্ঘস্থায়ী জলের ঘাটতি, বেআইনি নির্মাণ এবং এমনকি যানবাহনের কারণে স্থানীয় বায়ু দূষণ শহর গুলিকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে পর্যটকদের ভিড়ের কথা মাথায় রেখে এই শহরগুলির বিস্তৃত পরিকল্পনা করা দরকার৷ অনেক রাজ্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করা থেকে শুরু করে পর্যটকদের উপর ট্যাক্স আরোপ করার জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। কিন্তু সেগুলি রয়ে গিয়েছে খাতায় কলমে। সেগুলির যথাযথ প্রয়োগ দরকার।
পাশাপাশি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে দু'দশকে ২৫হাজার থেকে ৩লক্ষ বসতি স্থাপন করা হয়েছে শুধুমাত্র সিমলায়। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে ৬০ ডিগ্রি ঢালে নির্মিত কেন্দ্রীয় সিমলা প্রায় ৯০%, চার থেকে পাঁচ তলা উঁচু ভবন দিয়ে আচ্ছাদিত। ৪৫ ডিগ্রির চেয়ে বেশি ঢালে বিল্ডিংগুলি যে কোন মুহূর্তেই ভেঙে পড়তে পারে।"