গত সপ্তাহেই বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল একটি রিপোর্ট, যাতে বলা হয়েছিল ভারতে খেলাধূলা সংক্রান্ত বেটিং এবং জুয়া আইনসিদ্ধ করে দেওয়ার পক্ষে সুপারিশ করেছে আইন কমিশন। এই পদক্ষেপ মূলত ক্রিকেটে বেটিং চক্রগুলির মোকাবিলা করার জন্যই জরুরি, এমন মতামতও তুলে ধরা হয়েছিল তখন।
কিন্তু আজ একটি সংবাদ পোর্টালকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সম্পূর্ণ ভিন্ন সুর গাইলেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বি এস চৌহান। বললেন এই ধরনের কোনও সুপারিশ করে নি কমিশন। তাঁর বক্তব্য, "আমরা জানি না কীভাবে এই ধারণা ছড়াল যে আমরা এই সুপারিশ করেছি, কিন্তু এটা সত্যি আশ্চর্যের যে কোনও সংবাদ মাধ্যমেই সঠিক তথ্য প্রকাশিত হলো না।"
বিভ্রান্তির মূলে সম্ভবত কমিশনেরই তৈরি একটি রিপোর্ট, যাতে বেটিং এবং জুয়া নিয়ে কিছু শরিকদের দেওয়া সুপারিশের উল্লেখ করা হয়। যেখানে বলা হয় যে কমিশনের কোনও কোনও শরিক মনে করেন, বেটিং বৈধ করে দিলে তা ঘিরে বিভিন্ন অপরাধ এবং গর্হিত কাজের সংখ্যা হ্রাস পাবে, এবং আধার কার্ডের কাঠামো ব্যবহার করে এই বৈধতা দেওয়া সম্ভব। শ্রী চৌহানের বক্তব্য, তা বলে এটা মনে করার কোনও কারণ নেই যে কমিশনও এই মত পোষণ করে।
বরং কমিশনের রিপোর্টের সারমর্ম এই, যে দেশের বর্তমান সামাজিক ও নৈতিক অবস্থা এবং সরকারি নীতি বিবেচনা করলে বেটিং এবং জুয়া শুধু বন্ধই নয়, কঠিনভাবে দণ্ডনীয় হওয়া উচিৎ। কিন্তু একইসঙ্গে রিপোর্টে এও বলা আছে, যে যেহেতু আইন করে বেটিং বা জুয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করা যাবে না, এবং যেহেতু এই সব কাজের সঙ্গে কোটি কোটি কালো টাকার লেনদেন জড়িত, হয়ত সরকারের তরফ থেকে বেটিংয়ের ওপর কিছুটা নিয়ন্ত্রণ রাখা প্রয়োজন। এই কথার খেলাতেই সত্যিটা কোথাও হারিয়ে গেছে, এমনটাই মত শ্রী চৌহানের।
গত বছরের জুলাই মাসে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ভারতে বেটিং বৈধ করা যায় কী না তা আইন কমিশনকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছিল। শ্রী চৌহান জানাচ্ছেন, "বিষয়টি গভীরভাবে পর্যালোচনা করে আমাদের মত, ভারতে বেটিং আইনসিদ্ধ হতে পারে না। কিন্তু সংবাদ মাধ্যমের অপপ্রচারের ফলে মনে হচ্ছে যেন কমিশন বেটিং ব্যাপারটা সমর্থন করে।"