একটা সময় ছিল অক্সিজেনের অভাবে ধুঁকছিল দিল্লি। করোনায় মৃতদের দাহ কোর্টে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছিলেন শ্মশানকর্মীরা। কিন্তু সেই আবহের অনেকটা উন্নতি হয়েছে দিল্লিতে। শুধু লকডাউনে ভর করে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আটকাতে পেরেছে দিল্লি। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এই আশার কথা শোনালেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল। তিনি জানিয়েছেন, আপাতত শুধু টিকারই অভাব রয়েছে দিল্লিতে। তবে দেশে যে গতিতে টিকা তৈরি হচ্ছে, তাতে সমস্ত দেশবাসীকে টিকা দিতে দিতে বছর দুয়েক লেগে যাবে। ততদিনে সংক্রমণের আরও অনেকগুলি ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে দেশে, আশঙ্কা কেজরিওয়ালের।
তিনি বলেন, ‘শুধুমাত্র দুটি টিকা উৎপাদনকারী সংস্থার ভ্যাকসিন দিয়ে চাহিদা মেটানো যাবে না। দরকারে আরও বেশি সংখ্যক সংস্থাকে টিকা উৎপাদনের বরাত দেওয়া হোক। টিকার চাহিদা বাড়ছে। আগামী দিনে ভারতকে করোনামুক্ত করতে হলে প্রচুর টিকা দরকার। এই বিপুল চাহিদার যোগান দিতে কেন্দ্রের উচিত বেশ কয়েকটি সংস্থার মধ্যে টিকা উৎপাদনের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া।’
এ ব্যাপারে একটি পরিসংখ্যান দিয়ে কেজরী বলেন, ‘ভারতে এই মুহূর্তে মাসে মাত্র ৬-৭ কোটি টিকা উৎপাদন হচ্ছে, এমন চললে দেশের সবাইকে টিকা দিতে ২ বছর পেরিয়ে যাবে। ততদিনে আরও অনেক ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে দেশে।’
এদিন তাঁর রাজ্যে করোনার গ্রাফ নিম্নমুখী হওয়া প্রসঙ্গে কেজরিওয়াল জানান, গত কয়েকদিন যাবৎ দিল্লিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। দিল্লি জুড়ে অক্সিজেনের জন্য যে হাহাকার দেখা গিয়েছিল, তাও এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এমনকি হাসপাতালে সাধারণ শয্যা এবং আইসিইউ শয্যার আকাল নেই। কেজরি বলেন, ‘লকডাউনেরই সুফল পাচ্ছে দিল্লি, সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউকে আটকানো গিয়েছে। এখন আর অক্সিজেন বা আইসিইউ শয্যার অভাবও নেই।’
তবে, যদিও দিল্লিবাসীর টিকাকরণ নিয়ে সরকার এখনও চিন্তিত। কেজরী বলেন, ‘আমাদের সামনে এখন একটাই লক্ষ্য। টিকাকরণ। এই মুহূর্তে শুধুমাত্র টিকারই অভাব রয়েছে দিল্লিতে।’ তিনি জানিয়েছেন, এখন দিনে ১.২৫ লক্ষ টিকা দেওয়া হচ্ছে দিল্লিতে। তবে খুব শীঘ্রই সংখ্যাটা দিনে ৩ লাখে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগামী তিন মাসের মধ্যে প্রত্যেক দিল্লিবাসীর টিকাকরণের লক্ষ্য স্থির করেছি আমরা।’