কর ফাঁকি দিতে বিদেশের নিরাপদ স্থানে ধনীরা অর্থ সরান। সেনিয়ে দীর্ঘদিন নজরদারি চালিয়েছে উবের। এরপর ব্যবসা বাড়াতে এই টেকনোলজি সংস্থা গ্রাহকের সুবিধা পূরণে নজর দেয়। যার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে গাড়ি পরিষেবার চেহারাটাই বদলে গিয়েছে। কীভাবে ব্যবসা চালায় উবের? ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট (ICIJ)-এর সঙ্গে এনিয়ে যৌথভাবে খতিয়ে দেখেছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
এধরনের তদন্তমূলক সাংবাদিকতা অবশ্য দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের কাছে নতুন কিছু না। শুধুমাত্র ICIJ-এর সঙ্গেই যৌথভাবে এর আগে সাত বার তদন্তমূলক সাংবাদিকতা করেছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। এবার খতিয়ে দেখা হয়েছে উবেরের ফাইলগুলো। যার মধ্যে রয়েছে ১,২৪,০০০ অভ্যন্তরীণ ইমেল, বার্তা এবং উবারের অভ্যন্তরীণ নথি। আর্থিক আদানপ্রদান। এজন্য সময়ে লেগেছে চার মাস।
দ্য গার্ডিয়ান দ্বারা প্রাপ্ত এবং ওয়াশিংটন পোস্ট, বিবিসি-সহ ৩০টি দেশে আইসিআইজে এবং নিউজরুমের একটি গ্লোবাল কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে শেয়ার করা, এই রেকর্ডগুলো বলছে যে কীভাবে একটি নড়বড়ে সিলিকন ভ্যালি স্টার্ট-আপ ৪,৩০০ কোটি মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক পরিবহণ দৈত্য হয়ে উঠল। আজ যার ব্যবসা চলছে বিশ্বের ৭২টি দেশে।
তদন্তমূলক সাংবাদিকতাতেই ধরা পড়েছে, কীভাবে নিয়ন্ত্রকদের পাশ কাটানোর জন্য উবের স্টিলথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে। কীভাবে লবির ব্যবহার করে। যে লবি ছড়িয়ে আছে বিশ্বজুড়ে। সেই লবিকে ইতিমধ্যেই সাংবাদিকরা চিহ্নিত করতে পেরেছেন। জানতে পেরেছেন, কীভাবে নানা কৌশলে, ফাঁক ফোঁকড় গলে উবের এড়িয়ে যাচ্ছে আইনের নানা প্রতিবিধান। এমনকী, উবেরের এক শীর্ষ কর্তা দিল্লি ধর্ষণের পর মন্তব্য করেছিলেন, 'আমরা শুধু বেআইনি কাজ করছি।'
আরও পড়ুন- অর্থ-শাসন-শৃঙ্খলায় শ্রীহীন, জ্বলছে লঙ্কা, তবুও পাশে ভারত
যে তথ্যগুলো সাংবাদিকরা সংগ্রহ করেছেন, উবেরের সেই তথ্যগুলো ২০১৩ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যেকার। সেই সময় এই কোম্পানি সাবলীলভাবে তার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ট্র্যাভিস ক্যালানিকের নেতৃত্বে, বিশ্বের এক থেকে অন্য বাজারে ক্যাব ব্যবসা ছড়াচ্ছিল।
কালানিক তাঁর মুখপাত্র, ডেভন স্পারজিওনের মাধ্যমে ICIJ-এর কাছে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। ডেভন বলেছেন, 'যখন কালানিক ২০০৯ সালে সহ-প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে Uber-এর প্রতিষ্ঠা করেন, সেই সময় তিনি এবং সংস্থার বাকিরা একটি শিল্পসংস্থার পথপ্রদর্শন করেছিলেন। যা এখন চলছে। বলতে গেলে একচেটিয়া ব্যবসা করছে।'
এই সংস্থা ২০১৩ সালে ভারতে ক্যাব পরিষেবা চালুর পর থেকে, দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশে তার দ্রুততম ক্রমবর্ধমান বাজার খুঁজে পেয়েছে। যেখানে আনুমানিক প্রায় 8 লক্ষ গাড়িচালক প্রায় ১০০টি শহরে গাড়ি চালাচ্ছে। শহুরে কর্মশক্তির ওপর ভর করে শহরজুড়ে ছড়িয়ে থাকা সরকারি পরিবহণের অপ্রতুলতা এবং সীমাবদ্ধ ট্যাক্সি পরিষেবার সুযোগ নিয়েছে।
একটি ইমেল বলছে, উবেরের তৎকালীন এশিয়ার প্রধান, অ্যালেন পেন, ২০১৪ সালের আগস্টে লিখেছিলেন, 'আমরা অবশ্যই ভারতে আমাদের প্রথম বছরে একটি প্রবেশ করেছি। আমাদের সম্ভবত স্থানীয় এবং জাতীয় উভয় সমস্যাই সামলাতে হবে। ভারতের প্রায় প্রতিটি শহরেই উবেরের ব্যবসা চালাতে হবে।' পেনের সেই বক্তব্য যে কতটা অর্থবহ, তা ধরা পড়েছে GST এবং আয়কর বিভাগ, কনজিউমার ফোরাম, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক এবং পরিষেবা কর বিভাগ-সহ একাধিক ভারতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে Uber-এর অগণিত যোগাযোগের নথি।
Read full story in English