এত গবেষণা, এত পরীক্ষামূলক পদ্ধতি চলছে তবু যেন অধরাই থেকে যাচ্ছে করোনাকে আটকানোর সূত্র। ভারতে ফের করোনা উপসর্গের চরিত্রে বদল এল। প্রাথমিকভাবে যে লক্ষণগুলি ছিল করোনা চেনার উপায়, এবার সেখানে যোগ হল আরও দুটি উপসর্গ, ঘ্রাণ-স্বাদহীনতা। এমনকী চরিত্র বদলান উপসর্গের সঙ্গে লড়াই করতে রেমডেসিভির এবং টোসিলিজুমাব ওষুধকে আনা হল নয়া তালিকায়।
রেমডিসিভির সাধারণত ব্যবহার করা হয় ইবোলা ভাইরাস মোকাবিলা করার জন্য। অন্যদিকে, টোসিলিজুমাব দেহে রোগ প্রতিরোধ মড্যুলেটর (চিকিৎসাবিজ্ঞানে অটোইমিউনো ডিসঅর্ডারে মূলত ব্যবহৃত হয়) হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সম্প্রতি করোনা মোকাবিলায় কনভালসেন্ট প্লাজমা থেরাপি (সিপিটি)-কেও করোনা রোগীর দেহে ব্যবহার করা হচ্ছিল। যদিও এটি কোনও ওষুধ নয়, এটি একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে করোনায় সুস্থ রোগীর দেহ থেকে রক্তরস বা প্লাজমা নিয়ে তা থেকে অ্যান্টিবডি তৈরি করে তা রোগীর দেহে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন, মাস্কেই আটকাচ্ছে করোনা সংক্রমণ, মত সমীক্ষার
এছাড়াও কোভিড চিকিৎসায় এখনও ভারতে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার চলছে। তবে সম্প্রতি করোনা চিকিৎসার নিয়মে অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাজিথ্রোমাইসিন ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে। কয়েক মাস আগেই ঘ্রাণহীনতাকে করোনা উপসর্গের তালিকায় রেখেছিল বিশ্বের শীর্ষ স্বাস্থ্যসংস্থাগুলি। জ্বর, কাশি, ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, গলা ব্যথা, ডায়েরিয়ার পাশাপাশি গন্ধ এবং স্বাদহীনতাও ছিল সেই তালিকায়।
শনিবার নয়া যে স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে যে কোভিড সমীক্ষায় (n=15,366 যেখানে n হল যতসংখ্যক মানুষের উপর সমীক্ষা করা হয়েছে) দেখা গিয়েছে উপসর্গের নিরিখে জ্বর থাকছে ২৭ শতাংশ রোগীর দেহে, ২১ শতাংশের দেহে থাকছে কাশি, গলায় ব্যথা থাকছে ১০ শতাংশ রোগীর দেহে, ৮ শতাংশ শ্বাসকষ্টজনিত কারণে আসছেন, শারীরিক দুর্বলতা থাকছে ৭ শতাংশের, নাক দিয়ে জল পড়ার মতো লক্ষণ থাকছে ৩ শতাংশের। বাকি ২৪ শতাংশের দেহে অন্যান্য উপসর্গ থাকছে।
নয়া স্বাস্থ্যবিধিতে করোনা রোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রেও বেশ কিছু বদল আনা হয়েছে। কারণ দেখা যাচ্ছে কোভিড-১৯ ভাইরাসের সংক্রমণে অনিশ্চয়তা থাকছে। এখনও পর্যন্ত যা প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে সেক্ষেত্রে আক্রান্তের দেহে করোনাভাইরাসের লক্ষণগুলি শুরু হচ্ছে দু'দিন আগে এবং প্রায় আটদিন অবধি থাকছে। তবে অসংক্রামিতদের থেকে কীভাবে সংক্রমিত হচ্ছে করোনা তা এখনও গবেষণাধীন।
কীভাবে করোনায় ব্যবহার করা ওষুধগুলি?
রেমডেসিভির মূলত ব্যবহার করা হচ্ছে যেসব করোনাক্রান্ত রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। টোসিলিজুমাব দেওয়া হচ্ছে সেই সব রোগীদের যাদের স্টেরয়েড দেওয়ার পরও শারীরিক অবস্থার কোনও উন্নতি হচ্ছে না, উপরন্তু দেহে অক্সিজেনের চাহিদা বৃদ্ধির জন্য ভেন্টিলেশনে রাখতে হচ্ছে। আর প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হচ্ছে সেই সব করোনা রোগীদের যাদের দেহ স্টেরয়েড ওষুধেও সাড়া দিচ্ছে না এবং অক্সিজেনের মাত্রা বাড়াতে হচ্ছে দেহে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন