দেশে গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা রোজনামচা হয়ে গিয়েছে বলা চলে। চোর সন্দেহে হোক বা ছেলেধরা সন্দেহে কিংবা গরু পাচারকারী সন্দেহে পিটিয়ে মারার ঘটনার সংখ্যা এ দেশে দিন দিন বাড়ছে বৈকি কমছে না। দেশে জনরোষে লাগাম টানতে তাই তৎপর হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। গণপিটুনির ঘটনা কীভাবে এড়ানো সম্ভব তা নিয়ে প্রস্তাব দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশেষ প্যানেল। সেই প্যানেলের প্রস্তাব নিয়েই এদিন আলোচনায় বসেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের একটি দল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বে ওই দল প্যানেলের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় বসে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব গৌবার নেতৃত্বাধীন কমিটির অন্যতম সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় নজরদারির কথা। এই প্রথমবার গণপিটুনির ঘটনা রুখতে কমিটির সুপারিশ নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা বৈঠকে বসলেন বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে খবর।
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে যে, ভারতীয় দণ্ডবিধি ও ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে এ ধরনের ঘটনা রুখতে আইন আরও কড়া করার প্রস্তাব দিয়ে থাকছে পারে কমিটি। গণপিটুনির ঘটনা রোখা নিয়ে কমিটির প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করতে আগামী কয়েক সপ্তাহেই ফের বৈঠকে বসতে পারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের ওই দল। প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হলেই তা পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে। এরপর এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের দলে রয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গড়কড়ী, আইনমন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ ও মন্ত্রী তাওহার চাঁদ গেহলত।
আরও পড়ুন, গণপিটুনি রুখতে আইনী সংশোধনের পথে কেন্দ্র
প্রসঙ্গত, গত এক বছরে দেশে গণপিটুনির ঘটনায় প্রায় ৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। চলতি বছরের জুলাই মাসেই গণপিটুনির ঘটনা নজরে রাখতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলোতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
গণপিটুনির ঘটনা ঠেকাতে রাজ্যগুলিতে প্রতিটি জেলায় পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন করে অফিসার নিয়োগ করার কথা বলেছিল কেন্দ্র। একইসঙ্গে বিশেষ টাস্ক ফোর্স তৈরি করতে বলা হয়েছিল। চোর সন্দেহে গুজব ঠেকাতে সোশাল মিডিয়ায় নজরদারির কথাও বলা হয়েছিল।