কথা’ শব্দের অৰ্থ কাহিনী ও ‘কলি’ শব্দের অৰ্থ অভিনয়। কথাকলি হল ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের একটি অন্যতম প্রধান ধারা। কেরলে কলামণ্ডলের কথাকলি শাস্ত্রীয় নৃত্যের প্রতি গভীর আগ্রহ প্রকাশ করে তা শিখতে প্রথম মুসলিম কন্যা হিসাবে উঠে এসেছে বছর ১৪-এর বয়সী এন. সাবরির নাম। তিনি কোল্লামের আঁচলের বাসিন্দা। ছয় বছর বয়স থেকে মেয়েটি কথাকলির পোশাক, রঙ এবং অভিনয়ের প্রতি গভীরভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন।
কলমণ্ডলকে কথাকলির সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কলামণ্ডলম পরিচালনা পরিষদের সদস্য, কলামণ্ডলম গোপী,, বলেছেন ‘যারা কথাকলি শিখতে আগ্রহী তাদের সবাইকে সুযোগ দেওয়া উচিত’। তিনি বলেন, "ধর্ম, বর্ণ, ভাষার মতো বাধা পেরিয়ে মানুষকে একত্রিত করার জন্য শিল্পের মধ্যেই রয়েছে এক অপার সম্ভাবনা”। কলমণ্ডলম কথাকলিরপ্রধান রবিকুমার আসান বলেন, “সাবরি প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ারও সুযোগ পাবেন”।
এ বিষয়ে সাবরি বলেন, “আমি কথাকলি শেখা বন্ধ করব না। শিল্পকলা আমার ধর্ম বা কোন ধর্মীয় মতাদর্শকে কোন ভাবেই প্রভাবিত করবে না। সাবরির বাবা, নিজাম একজন ফটোগ্রাফার। তিনি বলেন, ‘সাবরি তখন থেকে কথাকলির প্রতি আকৃষ্ট হন যখন কথাকলি পারফরম্যান্সের ফটো তোলার জন্য অ্যাসাইনমেন্ট পেতাম এবং মেয়ে সেই ফটোশুটের জন্য আমার সঙ্গেই যেত”। বাবার ও পরিবারের সমর্থন পেয়ে সাবরি বলেন, "কথাকলি শেখার ফলে আমার আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। আমি জানতাম আমি পারব,"।
সাবরির এই ইচ্ছা শুধুমাত্র ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের প্রতি তার আবেগকে প্রতিফলিত করে না বরং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পার্থক্যের মধ্যে বোঝার জন্য শিল্পের ক্ষমতাকে তুলে ধরে। প্রয়াত বিশিষ্ট কথাকলি গায়ক কালামণ্ডলম হায়দারালী কথাকলিকে একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ করার রক্ষণশীল প্রচেষ্টা ভাঙতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।