মহারাষ্ট্রের নাসিকে পরিযায়ী শ্রমিকদের এক ত্রাণ শিবিরে এবার মিলল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। বুধবার রাতে COVID-19 পজিটিভ ঘোষিত হলেন ২৪ বছরের এক শ্রমিক, যিনি ওই শিবিরে আশ্রয় নিয়েছিলেন আরও ৩১৮ জন শ্রমিক সমেত।
এর আগে কয়েক হাজার শ্রমিকের সঙ্গে মুম্বই থেকে উত্তর ভারত অভিমুখে পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছিলেন ট্রাকের খালাসির কাজ করা ওই যুবক। তবে নাসিকে ৩০ মার্চ তাঁদের আটকে দেয় স্থানীয় পুলিশ।
মহারাষ্ট্রে এই মুহূর্তে রয়েছেন দেশের ২৫টি রাজ্য এবং পড়শি রাষ্ট্র নেপাল থেকে আসা প্রায় ৩.৩২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক, যাঁদের রাখা হয়েছে রাজ্যের ২,৬৯১ টি ত্রাণ শিবিরে। দেশের অন্যান্য জায়গাতেও খোলা হয়েছে ত্রাণ শিবির, তবে কোনও শিবিরে করোনা সংক্রমণের খবর এর আগে পাওয়া যায় নি।
নাসিকে ৩২ মার্চ থেকে উপরোক্ত ৩১৮ জন শ্রমিককে রাখা হয়েছে মহারাষ্ট্র রাজ্য সামাজিক ন্যায় দফতরের একটি হস্টেলে, যা ত্রাণ শিবিরে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সামাজিক দূরত্ব বা 'সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং'-এর কথা মাথায় রেখে হস্টেলের প্রতিটি ঘরে চারজনকে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভয়াবহ দুর্দশা, এখনও সরকারি রেশন পান নি ৯৬ শতাংশ শ্রমিক, বলছে রিপোর্ট
হস্টেলে ঢোকার আগে অধিকাংশ শ্রমিকেরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়, তবে করোনা আক্রান্ত ওই যুবক ১৩ এপ্রিল জানান যে তাঁর কাশি হয়েছে, এবং অসুস্থ বোধ করছেন তিনি। এরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নাসিক পুরসভা পরিচালিত একটি হাসপাতালে, যেখানে তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়। বুধবার রাতে পরীক্ষার ফলাফল মেলার পর COVID-19 পজিটিভ ঘোষিত হন ওই যুবক।
সংক্রমণের খবর নিশ্চিত হওয়া মাত্রই সিল করে দেওয়া হয় গোটা এলাকা। ওই যুবকের ঘর এবং পাশের ঘর থেকে মোট আটজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাঁদের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। এছাড়াও ওই একই বাড়িতে থাকা ১১৪ জনেরও স্ক্রিনিং শুরু হয়েছে।
নাসিকের জেলা কালেক্টর সুরজ মান্ধারে জানিয়েছেন, "ওই রোগীর সঙ্গে একই বিল্ডিংয়ে ছিলেন ১১৪ জন ব্যক্তি। তাঁদের আমরা পৃথক করছি 'হাই রিস্ক' এবং 'লো রিস্ক' দলে। এ পর্যন্ত আটজনকে কোয়ারান্টাইনে সরানো হয়েছে, এবং তাঁদের পরীক্ষা চলছে।"
ইতিমধ্যে ওই ত্রাণ শিবির সংলগ্ন এলাকা সিল করে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। নাসিকে এই নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজার, মৃতের সংখ্যা ৪২০। করোনা কাটিয়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১,৫১৪ জন। সবচেয়ে বিপর্যস্ত রাজ্য মহারাষ্ট্র, যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ৩,০০০ ছাড়িয়েছে, মৃত ১৮৭ জন। তালিকায় এর পরেই রয়েছে দিল্লি, যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১,৫৭৮, এখন পর্যন্ত মৃত ৩২ জন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন