মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সংকট এখানে সুপ্রিম কোর্টে ঘুরপাক খাচ্ছে। আগেই বিধানসভায় শিবসেনার দলনেতার পদ থেকে একনাথ শিন্ডেকে অপসারণের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। পাশাপাশি, বিদ্রোহী ১৫ জন শিবসেনা বিধায়কের বিধায়কপদ খারিজ সংক্রান্ত নোটিসের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে মামলা। এবার, মামলা দায়ের হল রাজ্যপালের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে।
রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেকে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় অধিবেশনকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে দেখাতে বলেছেন। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় শিবসেনার মুখ্য সচেতক সুনীল প্রভুর দায়ের করা একটি আবেদন জমা পড়ে শীর্ষ আদালতে। জরুরি ভিত্তিতে সেই আবেদন গ্রহণ করে বুধবার শুনানিও হল সুপ্রিম কোর্টে।
শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টে শিবসেনার মুখ্য সচেতক সুনীল প্রভুর আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি জানান এই মুহূর্তে আস্থাভোট হওয়া উচিত না। কারণ, বিধায়কপদ খারিজের মামলা সুপ্রিম কোর্টে চলছে। আস্থাভোট হওয়ার পর হয়তো দেখা যাবে, বিধানসভার সদস্য সংখ্যাতেই হেরফের হয়ে গিয়েছে। তখন কি তাহলে, এই আস্থাভোটের ফল বাতিল হবে? বৃহস্পতিবার আস্থাভোট না-হলে, আকাশ ভেঙে পড়বে না। সিংভি আদালতকে জানান, এনসিপির দুই বিধায়ক বর্তমানে করোনা আক্রান্ত। দুই বিধায়ক বাইরে আছেন। তার মধ্যেই বিরোধী দলনেতা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখার করার পরই রাজ্যপাল আস্থাভোটের কথা বলতে শুরু করেছেন। অথচ, রাজ্যপাল একবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ডেকে কথাও বলেননি।
এর আগে বিদ্রোহী শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে বুধবার তাঁর বিদ্রোহী বিধায়ক ও নির্দলদের মিলিয়ে তাঁর প্রতি ৫০ জন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে বলে দাবি করেন। বিজেপি বিধায়করাও তাঁকে সমর্থন করার কথা জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তিনি মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ার দাবি জানিয়েছেন। তার মধ্যেই বুধবারই বিদ্রোহী শিবসনা বিধায়করা গুয়াহাটির হোটেল ছেড়ে ফেরার পথে রওনা হন। একইসঙ্গে শিন্ডে জানান, তাঁরা আস্থাভোটে নিশ্চিতরূপে জয়ী হবেন। এরপরই মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল ভগত সিং কোশিয়ারি শিবসেনা প্রধান তথা মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহাবিকাশ আঘারি (এমভিএ) সরকারকে আস্থা ভোটের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন- ফের কমল টাকার দাম, ডলারের তুলনায় পৌঁছল সর্বনিম্নের কাছাকাছি
যার পালটা হিসেবে শিবসেনা রাজ্যপালের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। এই পরিস্থিতিতে বুধবার বিকেলে মহারাষ্ট্র মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। তার আগে সকালের দিকে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির নেতা তথা মহাবিকাশ আঘারি জোটের আহ্বায়ক শরদ পাওয়ারের সঙ্গে উদ্ধবের দীর্ঘক্ষণ বৈঠক হয়। বিভিন্ন মহলের দাবি ছিল, উদ্ধব পদত্যাগ করতে চাইছিলেন। কিন্তু, শরদ পাওয়ার পদত্যাগ করতে নিষেধ করেছেন।
যদিও, সেই জল্পনা উড়িয়ে দেন শিবসেনার মুখপাত্র তথা সাংসদ প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী। তিনি বলেন, 'উদ্ধব ঠাকরে আগেই জানিয়েছেন যে পদত্যাগের প্রশ্নই নেই। মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতারা তাঁদের দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি যাচ্ছেন। সেটা তাঁরা যেতেই পারেন। কিন্তু, গুয়াহাটিতে বেড়াতে যাওয়া কিছু শিবসেনা বিধায়কের জন্য উদ্ধব ঠাকরে পদত্যাগ করবেন না।'
Read full story in English