করোনা জয় করেই মাউন্ট এভারেস্ট জয়! বিস্ময়কর এক অসাধ্যকে সাধন করে দেখিয়েছেন মহারাষ্ট্রের হর্ষবর্ধন যোশী। ৬৫ দিনেই সে পৌঁছতে পেরেছে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গে। সবচেয়ে প্রতিকূল পর্বতারোহণের পরেই সবচেয়ে অপরূপ দৃশ্য। করোনামুক্ত হওয়ার একসপ্তাহের মধ্যে এই সাফল্য প্রতিবন্ধকতায় মোড়া হলেও মহার্ঘ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এভাবেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ভাসাইয়ের এই যুবক।
জানা গিয়েছে হর্ষবর্ধন, তাঁর এই অভিযানের নাম দিয়েছিল ‘প্রজেক্ট সংঘর্ষ’। পরিবেশ বান্ধব এই অভিযানে প্রকৃতি এবং মানুষের মধ্যে সহাবস্থান বজায় রাখাই ছিল প্রজেক্ট সংঘর্ষের উপলক্ষ্য। তিনি জানান, মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসে পাঁচ বছর প্রশিক্ষণ নিয়ে ৬৫ দিনে এভারেস্ট জয়কে শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা হিসেবেই দেখেছেন তিনি। শুরু থেকে বেসক্যাম্প অবধি পৌছনো এবং সেখান থেকে শৃঙ্গজয়, গোটাটাই কণ্টকদীর্ণ। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেছেন, ‘তুষারআবৃত হিমালয়কে চোখের সামনে দেখার মতো স্বর্গীয় অনুভূতি হয় না। তাই শারীরিক দুর্বলতা ও বেসক্যাম্পের অন্যদের করোনা উপসর্গের মধ্যেও লক্ষে ছিলাম অবিচল। তবে খানিকটা উদ্বেগ বাড়ে যখন খবরে পড়ি করোনা ছুঁয়েছে এভারেস্ট বেসক্যাম্পকেও।‘
হর্ষবর্ধনের মন্তব্য, ‘এভারেস্ট জয়ের সঙ্কল্প এবং ছোট থেকে এই অভিযানের জন্য নিজেকে তৈরি করার মধ্যে আলাদা প্রাপ্তি। কিন্তু ওপরে যা হয়েছিল, সেটা অনেক হিসেব গণ্ডগোল করে দিয়েছিল।‘ তিনি বলেন, ‘অতিমারী আমাদের সতর্ক করে দিয়েছিল। তাই যতক্ষণ না পর্যন্ত আমাদের সংক্রমণ ছুঁয়েছিল, ততক্ষণ যাত্রাপথ পরিকল্পনামাফিক ছিল।‘
তবে আমরা নিশ্চিত ছিলাম না বেসক্যাম্পে এই সংক্রমণের বাহক কে? তাই সহ-অভিযাত্রীরা কেউ কারও সঙ্গে কথা বলতাম না। কোভিড বিধি মেনেই বেসক্যাম্পে রাত রাত কাটিয়েছি। ফোনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে এই তথ্যও দিয়েছেন ওই যুবক। তিনি বলেছেন, ‘মাউণ্ট এভারেস্ট আরোহণের আগে খুম্বু উপত্যকা পড়ে। সেই উপত্যকায় পৌঁছন মাত্রই আপনি নিশ্চিত হয়ে যাবেন এভারেস্ট আর বেশি দূরে নয়। অনেকের সেই পর্যায়ে কাশি-সর্দি হয়। যাকে খুম্বু কাশি বলে। করোনা উপসর্গ আর খুম্বু কাশির উপসর্গ প্রায় এক। তাই কে সংক্রমিত আর কে খুম্বু কাশিতে ভুগছে পার্থক্য করা একটু জটিল ছিল।‘
তাঁর অভিযোগ, ‘মহামারী আবহে এভারেস্ট অভিযান চললেও, ছিল না নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা। আমরা যখন অনেকে একসঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়ি, তখন বেসক্যাম্পের এক চিকিৎসকের স্ত্রীয়ের উদ্যোগে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হয়। আমরা শুধু এটাই জানতাম চূড়ান্ত অভিযানের আগে আমাদের নমুনা পরীক্ষা করাতেই হবে।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন