Advertisment

রেলওয়ে ট্র্যাকের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণে ঢিলেঢালা মনোভাব, বাড়ছে লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনা

লাইনচ্যুত হওয়ার প্রধান কারণ রেলওয়ে ট্র্যাকের রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। ২০২২-এর ডিসেম্বরে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট সংসদে পেশ করা হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Odisha train accident, ওডিশায় ট্রেন দুর্ঘটনা, Odisha train death toll, Odisha train news, Odisha news, Coromandel Express accident, Odisha train derailment, Indian Express, India news, Coromandel Express Accident, করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা

সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এমন বড় ট্রেন দুর্ঘটনা আগে দেখেনি দেশ। এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় ট্রেন দুর্ঘটনার পর প্রায় দু’দিন কাটতে চললেও এখনও যাত্রীদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান জারি। ২ হাজারেরও বেশি কর্মী উদ্ধার অভিযানে সামিল রয়েছেন।

Advertisment

ওডিশার বালাসোরের কাছে শুক্রবার সন্ধ্যায় যে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে তার রেশ যেন এখনও রয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৮৮টি মৃতদেহ উদ্ধার করতে পারা গিয়েছে। ১১০০-এরও বেশি যাত্রীকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। গত দুই দশকের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় রেল দুর্ঘটনা। ওড়িশা ট্রেন দুর্ঘটনায় শোকাহত গোটা দেশ। দেশে এর আগেও একাধিক ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে, যাতে প্রাণ হারিয়েছে শতাধিক মানুষ। তার পরেও কেন যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে এত উদাসীনতা উঠেছে প্রশ্ন।

পরিকাঠামোর আপগ্রেডেশন এবং নিরাপত্তার জন্য রেকর্ড বাজেট বরাদ্দ থাকা সত্ত্বেও, ভারতীয় রেলে ২০২২-২০২৩ সালে দুর্ঘটনা ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। ক্যাগের রিপোর্ট অনুসারে ২০১৭-২০১৮ থেকে ২০২০-২০২১ সারা দেশে ২১৭টি ট্রেন দুর্ঘটনার মধ্যে চারটির মধ্যে তিনটি দুর্ঘটনার ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়ার কারণে ঘটেছে। লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনা এবং তার পরিসংখ্যান ২০২২সালে সংসদে পেশ করা হয়।

কী কারণে লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে? রিপোর্ট অনুসারে দায়ি করা হয়েছে “রেলওয়ে ট্র্যাকের রক্ষণাবেক্ষণ”কেই। রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে রেলওয়ে ট্র্যাকের পুনর্নবীকরণ সংক্রান্ত কাজের জন্য তহবিল বরাদ্দ বছরের পর বছর ধরে হ্রাস পেয়েছে এবং এমনকি বরাদ্দ তহবিলও "পুরোপুরি ব্যবহার" করা হয়নি।

রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে ২১৭টি ট্রেন দুর্ঘটনার মধ্যে ১৬৩টি ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার কারণে হয়েছে। ১৬টি জোনে দুর্ঘটনার কারণে রেলের প্রায় ৩৩.৬৭ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। রিপোর্টে যেটা উল্লেখ করা হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে রেলওয়ে ট্র্যাক রিনিউন্যাল সংক্রান্ত তহবিল ২০১৮-১৯ সালে ছিল ৯৬০৭.৬৫কোটি টাকা। তা ২০১৯-২০সালে ৭,৪১৭টাকায় নেমে এসেছে। পাশাপাশি রেলওয়ে ট্র্যাক মেরামতি ও রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত তহবিলও পুরোপুরি ব্যবহার করা হয়নি।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বালেশ্বরের বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস, এসএমভিটি বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেস এবং একটি পণ্যবাহী ট্রেনের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ ঘটে। দুর্ঘটনার কবলে পড়া ১১০০-রও বেশি যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৫০০ জন এখনও বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

শনিবার গভীর রাতেও দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দলের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। সার্চলাইটের ব্যবহারে ভারী যন্ত্রপাতি দিয়ে NDRFএ-র কর্মীদের বগি কাটতে দেখা গিয়েছে। গ্যাস কাটার ব্যবহার করে কোচের স্তূপের উপর বারবার দেখা হচ্ছে। যদি ভিতরে কেউ থাকে – জীবিত বা মৃত – যাঁদের এখনও উদ্ধার করা যায়নি। তাঁরা রাতভর কাজ চালিয়ে গিয়েছেন।

ওডিশা ফায়ার সার্ভিসের ডিরেক্টর জেনারেল সুধাংশু সারঙ্গি উজ্জারকাজের তদারকিতে রয়েছেন। দ্য সানডে এক্সপ্রেসকে তিনি বলেন, “রাজ্য সরকার উদ্ধার কাজে আরও গতি আনতে এবং সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য যে ব্যবস্থা করেছে তার জন্যই উদ্ধার অভিযান সফলভাবে করা গিয়েছে। আমাদের অগ্রাধিকার ছিল জীবিত সবাইকে উদ্ধার করা এবং তাঁদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। এরপর আমরা মরদেহ উদ্ধারের কাজ শুরু করি। আমাদের পক্ষ থেকে প্রায় ২৫০ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী এবং ODRAF-এর ১২০ জন সদস্যকে কাজ করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি।”

Train Accident
Advertisment