Advertisment

‘সামান্য ভুল বড় বিপদ ডেকে আনবে, আমেরিকা ছেড়ে কথা বলবে না’, চরম হুঁশিয়ারি ইরানকে

আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্য থেকে তার কয়েক হাজার নাগরিককে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
"US Iran, US Israel, US Iran war, middle east conflict, US, UN on israel hamas war, isarel hamas war live, israel hamas war live updates, israel,israel news, israel vs palestine, israel population, israel capital, israel war, israel war history, israel war war live, israel war news, israel palestine war, israel palestine, israel palestine",

‘সামান্য ভুল বড় বিপদ ডেকে আনবে, আমেরিকা ছেড়ে কথা বলবে না’, চরম হুঁশিয়ারি ইরানকে

ইজরায়েল-হামাসের যুদ্ধে নাক না গলার চরম সতর্কবার্তা ইরানকে। মার্কিনীদের ওপর হামলার জবাব দেবে আমেরিকা। কার্যত হুঙ্কার ছুঁড়লেন মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ব্লিঙ্কেন বলেন, "আমেরিকা ইরানের সঙ্গে সংঘাত চায় না। আমরা চাই না যে এই যুদ্ধ বাড়ুক কিন্তু ইরান যদি কোথাও মার্কিনীদের ওপর আক্রমণ করে,তার উপযুক্ত জবাব দেবে আমেরিকা”

Advertisment

মার্কিন বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন হুঁশিয়ারি দিয়ে ইরানকে বলেছেন, যে ‘ইরান মার্কিন নাগরিকদের ওপর হামলা চালালে আমেরিকা ইরানকে উচিৎ শিক্ষা দেবে’। এর আগে বাইডেন  প্রশাসন তেহরানকে ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধে নাক গলানো থেকে বিরত থাকার বার্তা দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আমেরিকা ইরানের সঙ্গে সংঘাত চায় না। "আমরা চাই না যে এই যুদ্ধ  বাড়ুক। কিন্তু ইরান যদি কোথাও আমেরিকান কর্মীদের আক্রমণ করে, তাহলে তার যোগ্য জবাব ফেরত পাবে”।

গাজায় স্থল অভিযানের মাধ্যমে হামাসকে স্থায়ীভাবে নির্মূল করার অঙ্গীকার করেছে ইজরাইল। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে এই ধরনের সামরিক পদক্ষেপ সংঘাত আরও বাড়াতে পারে। সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের হামলার জবাবে গত ১৮ দিন ধরে গাজায় লাগাতার বোমাবর্ষণ করছে ইজরায়েলের সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘের প্রধান আন্তোনিও  গুতেরেস ইজরায়েলের নীরবছিন্ন বোমাবর্ষণকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘কোন পক্ষই আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ঊর্ধ্বে নয়’।

ইজরাইল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে বিশ্বের কাছে তার অবস্থান তুলে ধরে ভারত জানাল বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ভারত গভীরভাবে চিন্তিত। ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রথমবারের মত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের রাষ্ট্রদূত আর.রবীন্দ্র বলেন, "ইজরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি এবং ব্যাপক হারে সাধারণ মানুষের মৃত্যু নিয়ে ভারত গভীরভাবে উদ্বিগ্ন” । তিনি আরও বলেন, "ইজরায়েলে ৭ই অক্টোবরের সন্ত্রাসবাদী হামলা মর্মান্তিক এবং আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে সেই হামলার নিন্দা জানাই। আমাদের প্রধানমন্ত্রী প্রথম বিশ্বনেতাদের মধ্যে একজন যিনি প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং নিরীহ সাধারণ মানুষের মৃত্যুতে তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ও ইজরায়েলকে এই কঠিন সময়ে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে’।

'নারী শিশুদের রক্ষা করতে হবে'

রবীন্দ্র বলেন, "ইজরায়েলের সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনায় তখন আমরা এই সংকটের সময়ে ইজরায়েলের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি। তিনি বর্তমান সংঘাতে সাধারণ মানুষের মৃত্যুর ঘটনাকে গুরুতর এবং ক্রমাগত উদ্বেগের বিষয় বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে সকল পক্ষকে অবশ্যই নিরীহ সাধারণ মানুষদের রক্ষা করতে হবে, বিশেষ করে মহিলা ও শিশুদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে”।

তাঁর বক্তৃতায়, রবীন্দ্র ইজরায়েল এবং হামাসের মধ্যে চলমান যুদ্ধের মধ্যে গাজা  উপত্যকায় সাধারণ লোকদের জন্য মানবিক সাহায্য পাঠানোর জন্য ভারতের প্রচেষ্টার  উপরও জোর দিয়ে বলেন, ‘ভারত ইতিমধ্যে গাজায় ৩৮ টন খাদ্যসামগ্রী এবং অত্যাবশ্যক  চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠিয়েছে। ভারত বরাবরই আলোচনার মাধ্যমে ইজরাইল-প্যালেস্তাইন সমস্যা সমাধানের কথা বলেছে। ভারত এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে প্যালেস্তানি সাধারণ মানুষকে  মানবিক সহায়তা প্রদান করবে। দুই দেশের মধ্যে আলোচনা পুনরায় শুরু করার জন্য অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য সম্ভাব্য সব প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাবে। ভারত ইজরায়েল-প্যালেস্তানি সংঘাতের একটি ন্যায্য, শান্তিপূর্ণ এবং স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"  

ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ দিনের পর দিন ভয়ঙ্কর আকার নিচ্ছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চ থেকে সন্ত্রাসবাদের কড়া সমালোচনা করে মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের প্রতিটি কাজই বেআইনি ও অযৌক্তিক। এর পাশাপাশি তিনি ইরানকে  সতর্ক করে বলেন, ‘যুদ্ধে মার্কিন নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমেরিকা ছেড়ে কথা বলবে না’। অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আরও বলেছেন যে সন্ত্রাসবাদের সমস্ত কাজই বেআইনি এবং  অন্যায্য। হামাস সহ অনান্য জঙ্গি গোষ্ঠীকে  মদত তাদের অস্ত্র, অর্থায়ন ও প্রশিক্ষণ প্রদানকারী দেশগুলোর নিন্দা করে তাদের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তিনি। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন, ‘আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে ৭ অক্টোবর হামাসের হাতে নিহত ১৪০০ জনেরও বেশি লোকের মধ্যে ৩০ জনেরও বেশি রাষ্ট্রসংঘের সদস্য দেশগুলির নাগরিক ছিল। নিহতদের মধ্যে অন্তত ৩৩ জন মার্কিন নাগরিক রয়েছেন। প্রেসিডেন্ট বাইডেন এই সঙ্কটের শুরু থেকেই তাঁর অবস্থান স্পষ্ট করেছেন, ইজরায়েলের আত্মরক্ষা অধিকার রয়েছে। সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ইজরায়েলের পাশে  থেকে সব ধরণের সাহায্যের বার্তা দিয়েছে আমেরিকা।   

এদিকে ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে এবার কড়া মন্তব্য করলেন রাষ্ট্রসংঘ প্রধান। তিনি বলেন, গাজায় ইজরায়েলের ক্রমাগত বোমাবর্ষণ অত্যন্ত উদ্বেগজনক। পাশাপাশি গুতেরেস বলেছেন যে তিনি গাজায় আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের জন্য অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। যুদ্ধবিরতির রাষ্ট্র সংঘের প্রধানের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে ইজরায়েল। হামাসকে ধ্বংস করার তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে ইজরায়েল ঘোষণা করেছে যে গাজার যুদ্ধ কেবল নিজের জন্য নয় বরং 'মুক্ত বিশ্বের জন্য একটি যুদ্ধ'।  আইডিএফ প্রধান হার্জি হালেভি একটি মিডিয়া ব্রিফিংয়ে বলেছেন যে তার বাহিনী "আক্রমণের জন্য প্রস্তুত।" ইজরায়েলের বিদেশমন্ত্রী এলি কোহেন রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইজরায়েল-গাজা সংঘাত নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, ৭ই অক্টোবর সমগ্র মুক্ত বিশ্বের জন্য একটি সতর্কবার্তা। তিনি বলেন, 'উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা। সেদিন, হামাস এবং ইসলামিক জিহাদের ১৫০০ এরও বেশি জঙ্গি দক্ষিণ দিক থেকে ইজরায়েলে অনুপ্রবেশ করেছিল। ১৪০০-এর বেশি নিরীহ নাগরিককে হত্যা করেছে।  এই হামলায় ৪০০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।  তিনি বলেন, “এই হত্যাকাণ্ড ISIS এর চেয়েও নিষ্ঠুর-বর্বর।  

হামাস-ইজরায়েলের যুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে বলেছেন যে হামাস 'কারণ ছাড়া' ইসরায়েল আক্রমণ করেনি। তার মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ইজরায়েল। অবিলম্বে রাষ্ট্রসংঘ প্রধানের পদত্যাগ ও তার এই মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছে। মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘ প্রধান আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, সশস্ত্র সংঘাতে কোন পক্ষই আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তিনি ইজরায়েলি বাহিনীর যেভাবে হামাস-শাসিত গাজা উপত্যকায় "নিরবিচ্ছিন্ন বোমাবর্ষণ" করে চলেছে তা  নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গুতেরেস বলেন, “সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি আরও সংকটজনক হয়ে উঠছে। গাজায় যুদ্ধপরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে এবং যুদ্ধ পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই সংকটময় সময়ে, আমি সকলের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি যে সংঘাত বৃদ্ধি পাওয়ার আগেই তা পরিত্যাগ  করুন।" গুতেরেস বলেছেন যে তিনি গাজায় আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের জন্য অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘের প্রধান অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিরও আবেদন জানান।

রাষ্ট্রপ্রধানের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ইজরায়েলের বিদেশসচিব প্রশ্ন তোলেন গুতেরেস কোন বিশ্বে বাস করেন, যিনি ইসজরায়েলের সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ এবং সন্ত্রাসবাদী হামলার পালটা আক্রমণে ঘটনার বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতির আবেদন জানাচ্ছেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ইজয়েলের পদক্ষেপেকে বিশ্বের একাধিক দেশ সমর্থন করেছে।  রাষ্ট্রসংঘ প্রধানের বক্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান বলেছেন  যে গুতেরেস রাষ্ট্রসংঘের মতো একটি সংস্থার নেতৃত্ব দিতে সক্ষম নন। অবিলম্বে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব, হামাসের পক্ষে দাঁড়িয়ে মন্তব্য করছেন। যারা ইজরায়েলের নাগরিকদের নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। যাদের জঘন্য অপরাধে কেঁপে উঠেছে তামাম বিশ্ব। তাদের প্রতি তিনি সহানুভূতিশীল। ইজরায়েলে শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের গণহত্যা সত্ত্বেও তিনি হামাসের প্রতি নম্রতা দেখাচ্ছেন” ।  

আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্য থেকে তার কয়েক হাজার নাগরিককে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইকরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাত বাড়তে থাকলে মধ্যপ্রাচ্য থেকে কয়েক হাজার মার্কিন নাগরিককে সরিয়ে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে জো বাইডেন প্রশাসন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় স্থল হামলার জন্য প্রস্তুত: আইডিএফ প্রধান

দ্য জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইজরায়েলি সেনাবাহিনী মঙ্গলবার বলেছে যে দক্ষিণ সীমান্তে জড়ো হওয়া তাদের সৈন্যরা গাজায় 'স্থল হামলা চালাতে প্রস্তুত'। দক্ষিণ সীমান্তের পরিস্থিতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে আইডিএফ চিফ অফ স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল হার্জি হালেভি বলেছেন, 'আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা আক্রমণ করতে প্রস্তুত।' আইডিএফ প্রধান বলেন, 'প্রতিটি মিনিট কেটে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বাহিনী শত্রুকে আরও বেশি আক্রমণ করতে প্রস্তুত হচ্ছে।'

USA Israel-Palestine clash
Advertisment