মনোনয়ন জমা দিয়ে বুধবার নন্দীগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় মন্দিরে মন্দিরে পুজো দিচ্ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁকে ঘিরে এদিন মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত। সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের ভাড়া বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। সেই সময়ই আহত হন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, ভিড়ের মধ্যে নন্দীগ্রামের বিরুলিয়ায় ধাক্কা-ধাক্কিতে মুখ থুবড়ে পড়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর পায়ে প্রচণ্ড চোট লেগেছে। গাড়িতে বসে কথা বলতে বলতেই তাঁর চোখে মুখে যন্ত্রণার ছাপ ধরা পড়েছে। চোট এতটাই গুরুতর যে মুখ্যমন্ত্রীকে তড়িঘড়ি কলকাতায় আনা হচ্ছে। জানা গিয়েছে এসএসকেএম-এ তাঁর চিকিৎসা হবে। প্রস্তুত রয়েছেন হার্ট-মেডিসিন-অর্থপেডিক সহ নানা বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের। রয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব। লিফটে দ্রুত মুখ্যমন্ত্রীকে সাড়ে ১২ নম্বর কেবিনে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাখা হয়েছে হুইল চেয়ার ও ট্রলি। পাঁচ চিকিৎসককে নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ।
চোটগ্রস্ত অবস্থাতেই গাড়িতে বসে চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'চক্রান্ত করে চার-পাঁচ জন ধাক্কা মেরেছে। আমি তাতেই পড়ে গিয়েছি। আমার পা ফুলে গিয়েছে। জেনেশুনে হামলা হয়েছে আমার উপর। গাড়ির দরজা জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হল। ঘটনার সময় পুলিশ সুপার বা কোনও রাজ্য পুলিশ ছিল না।'
গোটা ঘটনা নির্বাচন কমিশনকে অভিযোগ আকারে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে, খবর জানাজানি হতেই পদক্ষেপ করেছে কমিশন। জানা গিয়েছে, জেলা প্রশাসনের থেকে রিপোর্ট তলব করেছে কমিশন।
ভোটের বাংলায় এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গেল। জেড প্লাস নিরাপত্তা পান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার মধ্যেই নিরাপত্তার বেড়াজাল ভেঙে কীভাবে এত মানুষ এলেন ও মুখ্যমন্ত্রীকে ধাক্কা দিলেন তা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
যদিও মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ও ষড়যন্ত্রের দাবিকে 'নাটক' বলে দাবি করেছেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। তিনি বলেন, 'মমতা তো নিজেই পুলিশ মন্ত্রী। তাঁকে চারশো নিরাপত্তা কর্মী ঘিরে থাকেন। সবাইকে টপকে কীভাবে এই ধাক্কাধাক্কি হতে পারে? অবিলম্বে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আইপিএসদের বরখাস্ত করা উচিত।'
'চোট পাওযার কথা বলে ভোটের আগে সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।' দাবি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের। 'রাজনৈতিক ভণ্ডামি' বলে কটাক্ষ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন