শেষ পর্যন্ত টিকাকরণ বৈঠকেকে নিজের সংশয়ের কথা প্রধানমন্ত্রী মোদীকে জিজ্ঞাসাই করে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশবাসীকে আতঙ্কমুক্ত করতে টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। জানান, ভ্যাকসিনকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেওয়ার আগে বিজ্ঞানসম্মত মতামত নেওয়া দরকার। ছাড়পত্র মেলা দুটি টিকার বৈজ্ঞানিক নথি-প্রমাণ আছে কিনা তাও জিজ্ঞাসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়ও মমতার জানতে চাওয়ার তালিকায় রয়েছে, প্রথাম সারির করোনা যোদ্ধা ছাড়া বাকি দেশবাসীর টিকাকরণের ব্য়য়ভার কে বহন করবে।
টিকার কার্যকারিতা সংক্রান্ত বৈজ্ঞানিক নথিপ্রমাণ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর ডাকা ভার্চুয়াল বৈঠকে জানতে চেয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, 'কোন দুটো টিকা দেশবাসীকে দেওয়া হবে, তা কেন্দ্রই ঠিক করে দিয়েছে। রাজ্যকে সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া হয়নি। ভ্যাকসিনকে চূড়ান্ত ছাড়পত্র দেওয়ার আগে বিজ্ঞানসম্মত মতামত নেওয়া দরকার। কোভিশিল্ড ও কোভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে যথাযথ বৈজ্ঞানিক নথিপ্রমাণ আছে তো?' এরপরই মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, 'দুটি ভ্যাকসিনের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি?তাহলে তা আগেভাগেই তা জনানো দরকার।'
৩ কোটি প্রথম সারির করোনাযোদ্ধাকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার কথা এদিনের বৈঠকেই জানান প্রধানমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, 'ফ্রন্টলাইন কর্মীদের না হয় বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হল, কিন্তু বাকিদের কী হবে? এক্ষেত্রে টিকাকরণের খরচ রাজ্যকে দিতে হবে কি?' মমতার প্রশ্নের জবাবা না মিললেও প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন যে টিকাকরণ সংক্রান্ত পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য দ্বিতীয় দফায় বৈঠক হবে।
১৬ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে কোভিড টিকাকরণ। তার আগে টিকাকরণ সংক্রান্ত প্রস্তুতি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা সারতে সোমবার সব রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতেই পারে। সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও রয়েছে।
কোভিড টিকার কার্যকারিতা নিয়ে বিভ্রান্তি-সংশয় দূর করেছেন নীতি আয়োগের সদস্য অধ্যাপক বিনোদ কে পাল। তিনি জানিয়েছেন, দুটি করোনা টিকাই ১০০ শতাংশ কার্যকর ও নিরাপদ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, টিকাকরণের জন্য রাজ্য সরকার প্রস্তুত। মঙ্গলবার থেকে জেলায় জেলায় টিকা পোঁছানোর কাজ শুরু হবে। প্রথম ধাপে যে ৪৪ হাজার সরকারি-বেসরকারি যেসব স্বাস্থ্যকর্মীদের টিকা দেওয়া হবে তাঁদের তালিকাও তৈরি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন