মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভা মানেই তটস্থ হয়ে থাকেন অফিসাররা। সে যে পর্যায়েরই হোন না কেন! টেলিভিশন ক্যামেরার মাধ্যমে দুনিয়ার সর্বত্র পৌঁছে যেতে পারে প্রশাসনিক প্রধানের নাম ধরে করা তিরস্কার, সে ভাবনায় ব্যাজার থাকেন বহু আধিকারিক। কিন্তু সেটাই যে তাঁর একমাত্র মুখ নয়, তা এবারের জেলাসফরে গিয়ে বুঝিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
১১ জুলাই, ২০১৮। এ তারিখটাকে নিশ্চিতভাবেই কর্মজীবনের শেষেও মনে রাখবেন নিখিল নির্মল। ১১ জুলাই তাঁর জন্মদিন। কিন্তু ২০১৮-র জন্মদিনের মতো সারপ্রাইজ তিনি আগে কখনও পাননি, এ কথা প্রায় হলফ করেই বলা যায়। এবার তাঁর জন্মদিনের সময়ে তাঁর কর্মস্থলের জেলায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর সেদিনই ছিল আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক বৈঠক। ফলে জন্মদিনে ছুটি নেওয়ার কোনও সুযোগই ছিল না জেলাশাসকের। হ্যাঁ, নিখিল নির্মল, আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক।
সব অফিসারদের জন্মদিনেই তাঁদের কাছে পৌঁছে যায় মুখ্যমন্ত্রীর স্বাক্ষরিত কার্ড।
সেদিনের সভার শুরুতে সকলকে চমকে দিয়ে মঞ্চে উঠে কর্মসূচি শুরুর আগেই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, জেলাশাসক নিখিল নির্মলের জন্মদিন পালন করা হবে। জন্মদিনের প্রথা মেনে কেক এল, মঞ্চের উপরে দাঁড়িয়ে সে কেক কাটলেন জেলাশাসক নিজে। মুখ্যমন্ত্রীকে সে কেক খাওয়ালেনও তিনি। এসবই ঘটল সমস্ত আধিকারিকদের উপস্থিতিতে, সংবাদমাধ্যমের সামনে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বললেন, ‘‘বৈঠক না থাকলে জেলাশাসক বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতেন। বৈঠকের জন্য তিনি এখানে উপস্থিত হয়েছেন। ফলে আমাদের দায়িত্ব এ ব্যাপারটা দেখা।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই চমকপ্রদ আচরণে জেলাশাসক নিজে তো বটেই, আপ্লুত অন্য আধিকারিকরাও। তবে সরকারি আধিকারিকদের জন্মদিন মনে রাখার ব্যাপারে নিখিলই প্রথম বা একমাত্র নন, সব অফিসারদের জন্মদিনেই তাঁদের কাছে পৌঁছে যায় মুখ্যমন্ত্রীর স্বাক্ষরিত কার্ড।