Advertisment

হায়দরাবাদে কয়েকশো প্রত্যক্ষদর্শীর সামনে কাটারির কোপে খুনিকে সাবাড় মৃতের পরিবারের

শহরের সবচেয়ে ব্যস্ত রাস্তা আত্তাপুর রোড। শয়ে শয়ে মানুষ হেঁটে যান ওই রাস্তা দিয়ে, সঙ্গে থাকে যানজটও। এরকম এক জনবহুল রাস্তায়ও মহেশের বাবা-কাকাকে আটকানো গেলো না।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ভি কিষাণ (ডানদিকে) ও লক্ষন গাউড় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছেন রমেশকে

অন্ধ্র প্রদেশের রাজধানী হায়দরাবাদের ব্যস্ততম এলাকায় প্রকাশ্যে খুনিকে শাস্তি দিলেন মৃতের বাবা এবং কাকা। কোর্টের দেওয়া রায়ে অখুশি ছিলেন তাঁরা। রাগে, ক্ষোভে, দুঃখে তাই এই চরম পদক্ষেপ নিলেন। খুনের দায়ে বর্তমানে আটক করা হয়েছে দুজনকেই। গত বছর ২৫ ডিসেম্বর শামশাবাদে মহেশ গাউড়কে হত্যা করেন বছর ২৪-এর জেরিগাল্লা রমেশ। সেই হত্যাকান্ডের মামলা চলছিল কয়েকমাস ধরে। গতকাল আদালত থেকে ফেরার সময়, কাস্তে নিয়ে আত্তাপুর পিলার নম্বর ১৪০-এর কাছে ওই দুজন আক্রমণ করেন অভিযুক্তকে। রাস্তায় তখন লোকজনের ভীড়, কিন্তু তার তোয়াক্কা করেন নি বাবা ভি কিষাণ এবং কাকা লক্ষণ গাউড়। উপস্থিত লোকজন বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলেও শেষরক্ষা হয় না। কাস্তে এবং কাটারি দিয়ে কোপ বসানো হয় 'খুনির' গায়ে। সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে পড়ে যায় রামেশ। মাথা এবং ঘাড়ের গুরুতর আঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।

Advertisment

ঘটনাটি ঘটেছে রাজেন্দ্রনগর থানার আওতায়। ঘটনার সময় ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল সাইবারাবাদ পুলিশের একটি পেট্রোল গাড়ি, কিন্তু গাড়িটি থামে নি। পরে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গাড়িতে শুধুমাত্র চালক ছিলেন, যিনি বুঝতে পারেননি কী ঘটছে।

আরও পড়ুন: প্রাক্তন প্রেমিকের ধর্ম বিশ্বাসে আঘাত হানার চেষ্টা, জেল লন্ডনবাসিনীর 

শহরের সবচেয়ে ব্যস্ত রাস্তা আত্তাপুর রোড। শয়ে শয়ে মানুষ হেঁটে যান ওই রাস্তা দিয়ে, সঙ্গে থাকে যানজটও। এরকম এক জনবহুল রাস্তায়ও মহেশের বাবা-কাকাকে আটকানো গেলো না। অনেকেই সম্ভবত তাঁদের রণমূর্তি দেখে ভয় পেয়ে যান। তবুও কয়েকজন ভি কিষাণকে আটকানোর চেষ্টা করেন এবং রমেশকে পালিয়ে যেতে বলেন। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। বেশিক্ষণ আটকে রাখা সম্ভব হয়নি কিষাণকে। ইতিমধ্যে কাকা লক্ষণ ছুটে যান রমেশের দিকে। বলাই বাহুল্য, ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় ওই এলাকায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা ভীড় জমান এই নাটকের প্রধান চরিত্রদের ঘিরে। উপস্থিত অনেকেই পুরো ঘটনাটি মোবাইলে রেকর্ড করে রাখেন।

ত্রিকোণ প্রেমের কারণে ২৫ ডিসেম্বর মহেশকে জুমারনাথ বাজার এলাকায় হত্যা করে রমেশ বলে খবর। নজর এড়াতে মহেশের দেহ গাড়ির ডিকিতে রেখেছিল সে। সেই গাড়ি রমেশ নিয়ে যায় সার্ভিস সেন্টারে, যেখানকার কর্মচারীরা দেখতে পান, গাড়ি থেকে চুঁইয়ে পড়ছে রক্ত। রাতারাতি গাড়ির ডিকি খুলে উদ্ধার করা হয় মৃত মহেশের দেহ। ওই সার্ভিস সেন্টার থেকেই থানায় খবর দেওয়া হয়। ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করার পর রমেশকে জেরা করা হয়। পুলিশকে সে জানায়, ত্রিকোণ প্রেমের জেরেই এই খুন, যার সঙ্গে যুক্ত ছিল রমেশের এক বন্ধুও। তাদের পরিকল্পনা ছিল, মহেশের দেহ ওই গাড়িতে রেখে মদনাপল্লী গ্রামে গিয়ে গাড়ি সমেত পুড়িয়ে সমস্ত প্রমাণ মুছে ফেলবে। কিন্তু অতদুর যাওয়ার আগেই খারাপ হয়ে যায় গাড়ি। সার্ভিস সেন্টারে গাড়ি নিয়ে গেলে তাদের কুকর্ম চোখে পড়ে সবার।

Advertisment