Advertisment

জালিয়াতের টাকায় ভোটপ্রচার? প্রবল অস্বস্তিতে পদ্মশিবির

সূত্রের খবর কেবল উত্তরপ্রদেশ নয় দিল্লি ও গুজরাট সহ একাধিক রাজ্য থেকে পিএমও নাম ভাঙিয়ে কোটি কোটি টাকা আদায় করেছেন সঞ্জয় রাই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Sanjay Rai Sherpuria, Sanjay Rai Sherpuria arrest, fake PMO Sanjay Rai,fake PMO Sanjay Rai arrest , Sanjay Rai chreating case, Enforcement Directorate (ED), Indian Express, India news, current affairs

PMO নাম ভাঙিয়ে কোটি কোটির জালিয়াতি…! যোগীরাজ্যে গ্রেফতার বিজেপি ঘনিষ্ঠ ‘হেভিওয়েট’ সঞ্জয় রাই। প্রধানমন্ত্রী দপ্তর বা পিএমও’র নাম ভাঙিয়ে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার দায়ে সঞ্জয় রাই নামক এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে উত্তর প্রদেশ পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স। মঙ্গলবার রাতে লক্ষ্ণৌয়ে পুলিশের জালে আটক হন অভিযুক্ত সঞ্জয় রাই। গ্রেফতারির পর রাজ্যজুড়েই তুমুল হইচই শুরু হয়েছে।

Advertisment

এর মাঝেই সামনে এসেছে এক বিস্ফোরক তথ্য, তদন্তে উঠে এসেছে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহাকে ভোটপ্রচারের জন্য ২৫ লক্ষ টাকা ‘ধার’ দিয়েছিলেন তিনি। এর পাশাপাশি গত বছরের ডিসেম্বরে, কেন্দ্রীয় মৎস্য, পশুপালন ও দুগ্ধজাত মন্ত্রক সঞ্জয় রাইয়ের সংস্থা যুব গ্রামীণ উদ্যোক্তা ফাউন্ডেশনকে (YREF) ২ কোটি টাকা ভর্তুকি দেয়। সেই সঙ্গে ডালমিয়া ফ্যামিলি ট্রাস্ট সহ আরও বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সঞ্জয় রাইয়ের ফাউন্ডেশনে বিপূল পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করে।

জম্মু ও কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা ২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর লোকসভা আসনে নির্বাচিত হন, তিনি ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) প্রার্থী আফজাল আনসারির কাছে পরাজিত হন। এরপর জম্মু কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের পর তাঁকে ২০২০ সালের আগস্টে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্যপাল হিসাবে নিযুক্ত করা হয়।

মনোজ সিনহা, ১৯৯৬ এবং ১৯৯৯ সালে গাজিপুর থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরেও তিনি তার লোকসভা এলাকায় রাজনৈতিকভাবে বেশ সক্রিয় ছিলেন। ২৫ লক্ষ টাকা ভোটের কাজে ‘ধার’ প্রসঙ্গে মনোজ সিনহার এক ঘনিষ্ঠ সূত্র দাবি করেছে যে ২০১৫-২০১৬ সাল থেকে রাইয়ের সঙ্গে মনোজ সিনহার কোন যোগাযোগ নেই।

গাজিপুর জেলা বিজেপির সভাপতি ভানুপ্রতাপ সিংয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ ধৃত সঞ্জয় রাইয়ের সঙ্গে দলের কোন যোগ নেই, তিনি বিজেপির সদস্যও ছিলেন না”। বারাণসীর এক বিশিষ্ট বিজেপি নেতা, যিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছেন, " সঞ্জয় রাই দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। যখনই তিনি এখানে আসতেন, দলের নেতারা নিয়মিত তাঁর সঙ্গে দেখা করতেন।"

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে আরএসএস প্রধান মোহন ভগবতের সঙ্গে একাধিক ছবি রয়েছে তার সোশ্যাল মিডিয়ায়। ‘দিব্যদর্শী মোদী’ নামের একটি বইও লিখেছেন। বিভিন্ন ধর্মগুরুদের সঙ্গেও দেখা যাচ্ছে তাকে। বিজেপি প্রধান জেপি নাড্ডা, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর সহ বহু বিশিষ্ট মানুষের সঙ্গে সঞ্জয় রাইয়ের ছবি প্রকাশ পেতেই আসরে নেমেছে বিরোধী দলগুলি।

পুলিশ সূত্রে খবর ২৫ এপ্রিল গাজিপুরের বাসিন্দা সঞ্জয় রাই ওরফে সঞ্জয় শেরপুরিয়াকে কানপুর স্টেশন থেকে গ্রেফতার করে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের টাস্ক ফোর্স। STF-এর ডিজি শচীন কুমার জানিয়েছেন রাইয়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির 420, 467, 468 এবং 471 ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তথ্য প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন, 2008-এর 66D-এর অধীনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সূত্রের খবর কেবল উত্তরপ্রদেশ নয় দিল্লি ও গুজরাট সহ একাধিক রাজ্য থেকে পিএমও নাম ভাঙিয়ে কোটি কোটি টাকা আদায় করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ঋণ খেলাপির মামলাও রয়েছে। পুলিশি জেরায় রাই শিল্পপতি গৌরব ডালমিয়ার নাম সামনে এনেছেন বলেই খবর। রাইয়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর অনুসারে, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি আর্থিক অনিয়মের একটি মামলায় ডালমিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত করছিল। মামলা তুলে নিতে রাইকে এই বিপূল পরিমাণ টাকা দিয়েছিলেন তিনি।

এছাড়াও রাইয়ের কাছ থেকে দুটি ভিন্ন ঠিকানা সহ আধার কার্ড এবং অন্যান্য আইডি কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। যার একটির ঠিকানা মধ্য দিল্লিতে এবং অন্যটি গুরগাঁওয়ের। এসটিএফ বলেছে যে অভিযুক্ত দাবি করেছেন যে তিনি লোকেদের বিভিন্ন আইডি কার্ড দিয়ে প্রতারণা করতেন যাতে তার আসল পরিচয় সামনে না আসে।

PMO
Advertisment