ফের অশান্ত হয়ে উঠল মণিপুর। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই রাজ্যের তেঙ্গনৌপাল এলাকার লেইথুতে গোলাগুলি চলেছে বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযানে নেমে অসম রাইফেলস ১৩টি দেহ উদ্ধার করল। মৃতদের পরিচয় এখনও জানা না-গেলেও নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রে খবর, ঘটনাস্থলে কোনও অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। কারা ওই ব্যক্তিদের খুন করেছে, তা-ও স্পষ্ট নয়। এই ঘটনার মাত্র একদিন আগেই মণিপুরের কয়েকটি জায়গা বাদে সর্বত্র মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হয়েছে। তার পরেই ঘটনাটি সামনে এল। অসম রাইফেলস সূত্রে খবর, যে এলাকা থেকে দেহগুলো উদ্ধার হয়েছে, সেখান থেকে সাম্প্রতিক অতীতে কোনও গন্ডগোলের খবর নেই। এমনকী, গত মে থেকে শুরু হওয়া মেইতেই এবং কুকিদের মধ্যে সংঘর্ষের প্রভাবও লেইবুতে পড়েনি।
তবে, এই জায়গা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সাইবোলে সম্প্রতি একটি আইইডি হামলার মাধ্যমে অসম রাইফেলসের টহলদারি বাহিনীকে নিশানা করার চেষ্টা হয়েছিল। এসবের মধ্যেই গত ৩ ডিসেম্বর মোদী সরকার এবং মেইতেই জঙ্গি সংগঠন ইউএনএলএফ (পাম্বেই)-এর মধ্যে শান্তিচুক্তি হয়েছে। যাকে স্বাগত জানিয়েছেন তেঙ্গলৌপালের কুকি-জো জাতির বাসিন্দারাও। সেসব দেখেই রবিবার কিছু এলাকাকে বাদ দিয়ে রবিবার মণিপুরে ইন্টারনেট পরিষেবা চালু করেছিল সরকার। যা আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত চালু থাকবে বলেই সরকার জানিয়েছিল। এই ব্যাপারে এক নির্দেশিকায় মণিপুর সরকার বলেছে, 'রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার উন্নতি হচ্ছে। মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা না-থাকায় সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়ছেন। এসব দেখেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে।'
আরও পড়ুন- খাড়গের বাড়িতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠক, বিস্ফোরক অভিযোগ মমতার
এর আগেও মণিপুরে একাধিকবার ইন্টারনেট পরিষেবা চালু হলেও তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। গত ৩ মে থেকেই এমনটা চলছে। কারণ, গত ৩ মে থেকে মণিপুরে জাতিগত সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই পার্বত্য রাজ্যের ৫৩ শতাংশ বাসিন্দা মেইতেই জনগোষ্ঠীর। তারা মূলত ইম্ফল উপত্যকার বাসিন্দা। মণিপুরের বাকি ৪০ শতাংশ জনগণ কুকি সম্প্রদায়ের। যারা পার্বত্য এলাকায় থাকে। মেইতেইদের জনগোষ্ঠীর বাসিন্দাদের তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা ঘিরেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পার্বত্য রাজ্য। যাতে কয়েক হাজার বাসিন্দা বাস্তুচ্যুতও হয়েছেন।