বৃহস্পতিবার মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়েছে। রাজধানী ইম্ফলে বেশ কয়েকটি বাড়ি উত্তেজিত জনতা পুড়িয়ে দিয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে নিরাপত্তা বাহিনী ইম্ফলের নিউ চেকনে জনতাকে লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়তে বাধ্য হয়েছে। একদিন আগেই মণিপুরের কাংপোকপি জেলার আইগেজাং গ্রামে গুলি চলেছে, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তাতে মোট নয় জন প্রাণ হারান। কাংপোকপির বিধায়ক এবং মণিপুরের ক্যাবিনেট মন্ত্রী নেমচা কিপগেনের সরকারি বাসভবনেও বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন উত্তেজিত জনতা।
এই পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনী এবং অসম রাইফেলসের জওয়ানরা সংঘর্ষ-বিধ্বস্ত এই পার্বত্য রাজ্যে টহলদারি বাড়িয়েছে। যেখানে হামলাকারীরা বাধা তৈরি করেছিল, সেই সব বাধা সরিয়ে দিয়েছেন জওয়ানরা। একমাস আগে মণিপুরে মেইতি এবং কুকি সম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে জাতিগত হিংসায় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩০০ জনেরও বেশি। মেইতেই সম্প্রদায়ের তফসিলি উপজাতি (এসটি) মর্যাদার দাবির প্রতিবাদে পার্বত্য জেলাগুলিতে একটি 'উপজাতি সংহতি মিছিল' সংগঠিত হয়েছিল। তার পরই গত ৩ মে প্রথম সংঘর্ষ শুরু হয়।
মণিপুরে কর্মসংস্থানের হাল বেশ খারাপ। সেই কারণে তফসিলি মর্যাদা পেলে মেইতেইরাও সরকারি চাকরিতে বেশি করে সুযোগ পাবে। এই আশাতেই তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সেই ব্যাপারে আদালত সুর নরম করতেই প্রতিবাদে নেমেছিল কুকি-সহ অন্যান্য উপজাতিরা। তারা মেইতেইেদর তফসিলি তালিকাভুক্তির বিরোধী। ইতিমধ্যে এই হামলার জেরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। উলটে বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনী ও জনতার মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেছে। যদিও নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি, জনতার ছদ্মবেশে এই হামলার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে মণিপুরের বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠী। তারাই বকলমে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ছায়াযুদ্ধ চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন- ভয়াবহ আগুনের গ্রাসে কোচিং সেন্টার, দড়ি বেয়ে প্রাণ বাঁচলেন পড়ুয়ারা, দেখুন ভিডিও
মোদী সরকার এই পরিস্থিতিতে মণিপুরে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের নেতৃত্বে শান্তি কমিটি গড়ে দিয়েছে। কিন্তু, তাতেও পরিস্থিতি বাগ মানেনি। উপজাতি নেতারা বীরেন সিংয়ের শান্তিকমিটিকে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। তাঁরা পালটা কমিটি তৈরি করেছেন।