অসম রাইফেলসের কর্মীদের বিরুদ্ধে একটি স্বতঃপ্রণোদিত এফআইআর দায়ের করল মণিপুর পুলিশ। এফআইআরে অভিযোগ করা হয়েছে, অসম পুলিশের কর্মীরা বিষ্ণুপুর এলাকার পুলিশ কর্মীদের কাজে বাধা দিয়েছেন। হিংসা চলাকালীন, গত ৬ আগস্ট কোয়াকতা শহর কেঁপে ওঠে। সেই সময় তৎপরতার সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে চেয়েছিল মণিপুর পুলিশ। তাঁদের অভিযোগ, তখনই বাধা দিয়েছেন অসম রাইফেলসের জওয়ানরা। অসম রাইফেলসের সঙ্গে মণিপুর পুলিশের জওয়ানদের বিবাদ নতুন কিছু নয়। এর আগেও অসম রাইফেলসের জওয়ানদের সঙ্গে মণিপুর পুলিশের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছিল।
এবারের ঘটনায় বিষ্ণুপুর জেলার ফুগাকচাও থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের নথিভুক্ত এফআইআরে সরকারী কর্মচারিকে দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া, সরকারি কর্মচারীকে আঘাতের হুমকি, সংযমহীনতা, অপরাধমূলক ভয় দেখানোর ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। গত ৩ আগস্ট ভোরে মেইতেই সম্প্রদায়ের তিন জনকে কোয়াকতায় তাঁদের বাড়িতে নিহত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার পরেই মেইতেই অধ্যুষিত বিষ্ণুপুর জেলা এবং কুকি-জোমি অধ্যুষিত চুরাচাঁদপুর জেলার সীমান্তে, শহরের কাছাকাছি এলাকায় ভারী গুলিবর্ষণ শুরু হয়। মণিপুর পুলিশের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে 'সন্দেহজনক কুকি জঙ্গিদের' হাত রয়েছে।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছিল। ফুগাকচাও থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ আধিকারিক বলেন যে সেদিন সকাল সাড়ে ৬টার দিকে, বিষ্ণুপুর জেলা থেকে অসম পুলিশের দল তল্লাশি চালানোর জন্য কোয়াকটা ৮ নম্বর ওয়ার্ড ধরে ফোলজং রোডের দিকে যাচ্ছিল। পুলিশের সন্দেহ ছিল, 'অভিযুক্ত কুকি জঙ্গিরা কোয়াকতা এবং ফোলজং গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় আশ্রয় নিয়ে থাকতে পারে।' এই ফোলজং হল চুরাচাঁদপুর জেলার একটি গ্রাম।
মণিপুর পুলিশের অভিযোগে বলা হয়েছে যে তাদের পথে, কুয়াকতা ফোলজং রোডের মাঝখানে, ৯ অসম রাইফেলসের কর্মীরা আটকে দেয়। এটা পুলিশের গাড়ি না, সেনার গাড়ি, এমন নানা বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘ সময় নষ্ট করে। আর, তার জেরে কুকি জঙ্গিরা নিরাপদ অঞ্চলে নির্বিবাদে পালিয়ে যায়। একটি ভিডিওতে উভয়পক্ষকে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতেও দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- কেন্দ্রের সঙ্গে অযথা বিবাদে নারাজ নবীন, অবস্থান স্পষ্ট করল বিজেডি
প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, অসম রাইফেলসের জওয়ানদের যানবাহনগুলো মেইতেই এবং কুকি-জোমি-অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি 'বাফার জোন'-এ রাখা হয়েছিল। বিষ্ণুপুর জেলা বা চুরাচাঁদপুর জেলার মণিপুর পুলিশ কর্মীদের সেই 'বাফার জোন' লঙ্ঘনেরই অনুমতি দেয়নি অসম রাইফেলস।