হিংসায় জ্বলছে মণিপুর, সেনাবাহিনীর ফ্ল্যাগ মার্চ, মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন অমিত শাহের

মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
"Manipur violence, Manipur tribal protests, imphal violence, Manipur violence indian army, Indian army news, Indian Express news

হিংসায় জ্বলছে মণিপুর, মোতায়েন সেনা, নিরাপদ স্থানে সরানো হল কয়েক হাজার মানুষকে। আদিবাসীদের বিক্ষোভ ঘিরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি পার্বত্য রাজ্যে মনিপুরে। জানা গিয়েছে, শান্তি বজায় রাখতে ফ্ল্যাগ মার্চ করছে সেনা। এর আগে গত মাসে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল উত্তেজিত জনতা। আর সম্প্রতি মৈতেই গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষ বেঁধেছে আদিবাসী সম্প্রদায়ের। এই আবহে রাজ্যের আট জেলায় জারি হয়েছে কার্ফু। ৫ দিনের বন্ধ হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা।

Advertisment

মণিপুর হাইকোর্টের একটি রায় পার্বত্য রাজ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর জওয়ানরা রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ফ্ল্যাগ মার্চ করছেন। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মণিপুর প্রশাসনের আবেদনে বিভিন্ন এলাকায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। ৩ মে সন্ধ্যা থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষার চেষ্টা চলছে।

বুধবার বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়নের ব্যানারে মণিপুরের ১০টি জেলায় মিছিল করেছে, যাতে বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নেয়। বিক্ষোভকারীরা মৈতেই সম্প্রদায়কে উপজাতি মর্যাদা দেওয়ার বিরোধিতা করছে। গত ১৯শে এপ্রিল, মণিপুর হাইকোর্ট তার একটি সিদ্ধান্তে জানায় যে সরকারের মৈতেই সম্প্রদায়কে উপজাতি বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত এবং হাইকোর্ট এর জন্য রাজ্য সরকারকে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছে। রায়ের প্রতিবাদে মণিপুরের বিষ্ণুপুর ও চন্দ্রচুড়পুর জেলায় হিংসা ছড়ায়। সরকার পাঁচ দিনের জন্য রাজ্যে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করেছে। চন্দ্রচুড়পুর জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ

Advertisment

মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। র‍্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের বেশ কিছু কোম্পানিও মণিপুরে পাঠানো হয়েছে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিমানে করে RAF এর সদস্যদের মণিপুরে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় মণিপুরে শুরু থেকেই পর্যাপ্ত সংখ্যক সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর আসাম রাইফেলসের কর্মীরা মণিপুরের হিংসা কবলিত এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত সাড়ে সাত হাজার নাগরিককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং একটি বিবৃতি জারি করে বলেছেন যে 'গত ২৪ ঘণ্টায় কিছু জায়গায় হিংসা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। আমাদের সমাজের দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এই ধরণের ঘটনা ঘটছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে’।

মণিপুরে মৈতেই সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা প্রায় ৬০ শতাংশ এবং এই সম্প্রদায়টি ইম্ফল উপত্যকা এবং এর আশেপাশের এলাকায় বসবাস করেন। মৈতেই সম্প্রদায় বলছে যে মায়নামার ও বাংলাদেশ থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের কারণে তারা রাজ্যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। একইসঙ্গে, বিদ্যমান আইনে তাদের রাজ্যের পাহাড়ি এলাকায় বসতি স্থাপনের অনুমতি নেই। এই কারণেই মৈতেই সম্প্রদায় তাদের আদিবাসী সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে।

আদিবাসী শ্রেণী কেন প্রতিবাদ করছে?

অন্যদিকে, হাইকোর্টের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে রাজ্যের আদিবাসী সম্প্রদায়। আদিবাসী সম্প্রদায়ের আশঙ্কা, মৈতেই সম্প্রদায়কে আদিবাসী তকমা দেওয়া হলে তারা তাদের জমি ও সম্পদ দখল করে বসতি স্থাপন করবে।

Manipur Violence