হিংসার ৪০ দিন অতিক্রান্ত। এখনও শান্তি ফেরার কোন নামই নেই মণিপুরে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাংলোতে আগুন। একের পর এক বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া, অবরুদ্ধ জাতীয় সড়ক। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দশহাজারের বেশি সেনা মোতায়েন করা হলেও মণিপুর আছে মণিপুরেই। বৃহস্পতিবার রাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আর কে রঞ্জন সিংয়ের ইম্ফলের বাসভবনে পেট্রোল বোমা হামলা হয়, যার ফলে আগুন ধরে যায় বাসভবনে। এরপর মন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা একেবারে ভেঙে পড়েছে। মঙ্গলবার রাজ্যে জাতিগত হিংসার কারণে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজ্য সফরের পরও কেন মিলছে না সমাধানসূত্র উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। এর মাঝেই
ইম্ফলের আর্চবিশপ, ডমিনিক লুমন, শনিবার একটি চিঠিতে লিখেছেন যে মণিপুরের কুকি এবং মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে লড়াইয়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গুলিকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হচ্ছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, জাতিগত সংঘর্ষ শুরু হওয়ার মাত্র ৩৬ ঘন্টার মধ্যে মেইতি খ্রিস্টানদের ২৪৯ টি গীর্জায় হামলা চালানো হয়েছে। রাজ্যে হিংসা শুরু হওয়ার পর থেকে কমপক্ষে ১০টি ক্যাথলিক চার্চের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের সরকার ও কেন্দ্রীয় বাহিনী কেন শান্তি বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিং এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের চার দিনের রাজ্যসফরের রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার সর্বোত্তম চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। রাস্তায় সশস্ত্র বাহিনী টহল দেওয়া সত্ত্বেও এই হত্যাকাণ্ড চলছে৷
পরিবহন, স্বাস্থ্যপরিষেবা এবং শিক্ষার মতো মৌলিক পরিষেবাগুলি মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে হিংসার কারণে। রাজ্যের এক সরকারি হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার জানিয়েছেন, ‘কুকি অঞ্চলের প্রধান স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানকারী চুরাচাঁদপুর জেলা হাসপাতালের ১৩ জন মেইতেই চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে। ফলস্বরূপ, হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাব দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্মীরাও যে সকল স্থানে তাদের সম্প্রদায় সংখ্যালঘু, সেখানে কাজ করতে চাইছেন না। রাজ্যের অনেক হাসপাতালের পরিস্থিতি সংকটজনক।