Advertisment

‘মেয়েদের সম্মান করতে শেখান’! মায়েদের প্রতি আর্জি নগ্ন ‘প্যারেডের’ শিকার মণিপুরের মহিলার

হাল ছাড়তে নারাজ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
"manipur,manipur violence,women paraded naked,gangrape,গণধর্ষণ,নগ্ন করে মহিলাদের রাস্তায় ঘোরানো,মণিপুর,মণিপুর হিংসা

‘সমাজের সব মায়েদের বলতে চাই’...নগ্ন ‘প্যারেডের’ শিকার কাণ্ডে মণিপুরী মহিলার আবেগঘন বার্তা!

নগ্ন অবস্থায় 'প্যারেড' করানো হয় মহিলাদের, চলে গণধর্ষণ।  বিভীষিকার সেই দিনের কথা ভুলে গিয়ে নতুন করে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে নিজেদের তিল তিল করে আবার নতুন ভাবে তৈরি করছেন তাঁরা। এর মাঝেই সমগ্র ভারতীয় সমাজকে একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন নির্যাতিতা এক মহিলা। তিনি বলেছেন, “প্রতিটি মায়ের উচিৎ তাঁদের সন্তানদের শেখানো মহিলাদের সম্মান করা”।  ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে ২ মণিপুরি মহিলাকে নগ্ন করে প্রকাশ্যে হাঁটতে বাধ্য করছে একদল লোক। সেদিনের ঘটনার সেই বীভৎসতা অবাক করে তুলেছে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে।

Advertisment

এই ঘটনায় মণিপুর হিংসার টানা প্রায় ৮০ দিন পর খোদ দেশের প্রধানমন্ত্রী মোদীকেও এ বিষয় নিয়ে বিবৃতি দিতে হয়। এই ভয়ঙ্কর ঘটনার সাক্ষী থাকা দুই মহিলা বর্তমানে অজানা এক স্থানে নতুন জীবন শুরু করার জন্য লড়াই করছেন। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই দুই মহিলা তাদের সংগ্রামের কথা সেই সঙ্গে সেদিনের বীভৎসতার কথা তুলে ধরেছেন।

আরও পড়ুন: < রাজনৈতিক অনুদান প্রভাবিত করে নির্বাচনের ফলাফলকে, জেনে নিন কী বলছে গবেষণা? >

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্লোরি (নাম পরিবর্তিত) বলেন, "আমার সঙ্গে সেদিন পশুর মতো আচরণ করা হয়েছিল। এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা নিয়ে বেঁচে থাকা আমার পক্ষে খুব কঠিন ছিল। কিন্তু দুই মাস পর সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেল এবং  আমি ভেবেছিলাম সব শেষ হয়ে গেছে। আমার বেঁচে থাকার সব আশা হারিয়ে গেল। আপনারা জানেন আমাদের ভারতীয় সমাজ কেমন। আপনি কল্পনা করে দেখুন এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাওয়া মহিলাদের দিকে লোকেরা কোন নজরে দেখে। এই ঘটনার পর, নিজের সমাজেও আমার আত্মসম্মান নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এখন আমি আর আগের মত স্বাধীন ভাবে বাঁচতে পারব না"।

আরও পড়ুন : < আদানির বিরুদ্ধে সুর চড়াতেই ‘চক্ষুশূল’ মহুয়া? কমিটির সুপারিশের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন বিরোধীরা >

এই ভয়াবহ ঘটনার আগে, গ্লোরি একটি কলেজে পড়াশুনা করতেন। ঘটনার পর ঠিক তার মতই মার্সির (নাম পরিবর্তিত) জীবনটাই আমূল বদলে গিয়েছে। সেই বীভৎসতার পর তাদের ২ জনকেই অন্যত্র চলে যেতে হয়েছে। অচেনা এক স্থানে নিজেদের প্রায় ঘর বন্দী করে রেখেছেন সেদিনের নির্যাতিতা ২ মহিলা।

এখন গ্লোরির মাইতেই সম্প্রদায়ের প্রতি রয়েছে প্রচণ্ড ক্ষোভ। তিনি বলেন, “আমি আর কখনও আমার শহরে ফিরে যাব না। আমি সেখানে বড় হয়েছি। আশেপাশে বসবাসকারী মেইতিদের সঙ্গে প্রতিদিনের মুখোমুখি হতাম। আমি তাদের আর কোনদিন দেখতে চাই না”। তিনি আরও বলেন, "ভিডিওটি ভাইরাল না হলে, কেউ আমাদের কথা বিশ্বাস করত না।  মার্সি বলেন, ‘আমার সন্তানদের কি হবে? সবকিছু শেষ..”।

এতসব কিছুর পর  দুজন যারা জীবনকে অন্যভাবে ভাবতে শুরু করেছেন। গৌরব (নাম পরিবর্তিত) তার শিক্ষা শেষ করে পুলিশ বা আর্মি অফিসার হতে চায়। তিনি বলেন, “আমি এমন একজন অফিসার হতে চাই যে সবার সঙ্গে সমান আচরণ করবে। এবং আমি এর বিচার চাই যাতে অন্য কোনও মহিলার সঙ্গে এমনটা না  ঘটে"।  

 মার্সি শেষে আক্ষেপের সুরে বলেছেন, “একজন উপজাতি নারী হিসেবে আমরা শক্তিশালী, সক্ষম। আমরা হাল ছাড়ব না। আমি সকল সম্প্রদায়ের সকল মায়েদের একটি কথা বলতে চাই। আপনার সন্তানদের শেখানো উচিত মহিলাদের সম্মান করা”।

Manipur
Advertisment