লিসিপ্রিয়া কাঙ্গুজাম। নামের মতোই মিষ্টি একটা মেয়ে। ওর বয়সে বাকি মেয়েদের দাবি থাকে খেলনা বা পছন্দের পোশাক কিনে দেওয়ার। লিসিরও দাবি আছে। না মানায় প্রধানমন্ত্রীর ডাকেও সাড়া দিচ্ছে না সে। লিসি এক খুদে পরিবেশকর্মী। তবে তাঁর দাবিগুলোও যেমন তেমন নয়। দেশের নানা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন, এমন মহিলাদের কথা প্রকাশ্যে আনার জন্য সম্প্রতি হ্যাশট্যাগ শিইন্সপায়ারসআস প্রচার চলছে। শুক্রবার সেই প্রচারের অংশ হিসেবেই ভারত সরকার তাদের টুইটার হ্যান্ডেলে শেয়ার করে ৮ বছরের লিসিপ্রিয়া কাঙ্গুজামের কথা।
কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে মনিপুরের লিসিপ্রিয়াকে তাঁর কাজের জন্য সম্মান জানাতে চাওয়া হয়েছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ৮ মার্চের এক অনুষ্ঠানে।
পরিবেশ বাঁচানোর জন্য নিরলস পরিশ্রম করে চলেছে লিসি। ২০১৯ সালে পেয়েছে এপিজে আব্দুল কালাম শিশু পুরস্কার। বিশ্ব শিশু শান্তি পুরস্কার এবং ভারতের শিশু শান্তি পুরস্কারও রয়েছে তার ঝোলায়।
@LicypriyaK is an child environmental activist from Manipur. In 2019, she was awarded a Dr. APJ Abdul Kalam Children Award, a World Children Peace Prize, and an India Peace Prize. Isn't she inspiring?
Do you know someone like her? Tell us, using #SheInspiresUs . pic.twitter.com/bJLEDIwfpH— MyGovIndia (@mygovindia) March 5, 2020
কেন্দ্রের টুইটের উত্তরে খুব গুছিয়ে লিসি জানিয়েছে, "প্রিয় নরেন্দ্র মোদী জি, আমার আওয়াজ আপনাদের কাছে না পৌঁছলে আমায় সম্মানিত করবেন না। #SheInspiresUs উদ্যোগে আমায় মনোনিত করার জন্য ধন্যবাদ। অনেক ভেবেই এই সম্মান ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জয়হিন্দ"।
আরও পড়ুন, ‘আমার শৈশব ছিনিয়ে নিয়েছেন’, বিশ্বনেতাদের তীব্র আক্রমণ গ্রেটা থুনবার্গের
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে লিসিপ্রিয়া জানিয়েছে, "মহিলাদের সম্মানিত করার কেন্দ্রীয় উদ্যোগ ভালো। তবে শিশু এবং নারীদের ওপর যে হারে হিংসা বাড়ছে, তাতে আমি আশার আলো দেখছি না। এভাবে কয়েকজনকে সম্মানিত করা ফেয়ারনেস ক্রিম লাগানোর মতো হবে। মুখ ধুয়ে নিলেই ক্রিম মুছে যাবে তো। বরং আমি চাই মোদী জি আমার কথা শুনুক। আমাদের দেশের নেতারা জলবায়ুর পরিবর্তনের বিষয়টিকে আরও গুরুত্ব দিক"।
#SheInspiresUs উদ্যোগে মনোনীত হয়ে কেমন লেগেছিল আট বছরের ছোট্ট লিসার? "প্রথমে বিশ্বাস করিনি। গর্ব হয়েছিল। কিন্তু একই সঙ্গে খুব মন খারাপ হয়েছিল। আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছিলাম, আমার কি এই সম্মান গ্রহণ করা ঠিক হবে? নাকি পরিবেশ নিয়ে যে একাধিক দাবি রয়েছে, সেসব নিয়ে সরকারের কাছে ক্রমাগত দাবি রেখে যেতে হবে"?
"আমি বিশ্বাস করি, আমার এই পুরস্কার ফিরিয়ে দেওয়াই সরকারকে বাধ্য করবে আমার দাবি দাওয়াগুলোর দিকে নজর দিতে। আমাকে এর আগে একবারও ডাকা হয়নি। আমার দাবি জানতে চাওয়া হয়নি, আলোচনার জন্যেও ডাকা হয়নি। আমাদের দেশের নেতারা জলবায়ুর পরিবর্তনকে যথেষ্ট গুরুত্বই দেন না, সেটাই সবচেয়ে ভয়াবহ ব্যাপার", আক্ষেপের সুরে বলে উঠল ভারতের গ্রেটা থুনবার্গ।