মদ কেলেঙ্কারি মামলায় ফের CBI দফতরে হাজিরার নির্দেশ গতকালই পান দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়া। আজ সকালেই তাঁকে সিবিআই সদর দফতরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও, তিনি জানান, তিনি আজ সিবিআই দফতরে হাজির হতে পারবেন না। কারণ হিসাবে তিনি বলেন, "বাজেট তৈরিতে" ব্যস্ত রয়েছেন। এরজন্য তিনি আরও একসপ্তাহের সময় চেয়েছেন সিবিআইয়ের কাছে।
দিল্লির উপ-মুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়াকে আজ রবিবার দিল্লির মদ কেলেঙ্কারির ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (সিবিআই) অফিসে ডাকা হয়, কেন্দ্রীয় সংস্থাকে জিজ্ঞাসাবাদ ‘অন্য এক তারিখের’ অনুরোধ করেছেন সিসোদিয়া।
মামলায় চার্জশিট দাখিলের প্রায় তিন মাস পর সিসোদিয়াকে তলব করে সিবিআই। সিসোদিয়া দিল্লির অর্থমন্ত্রী হিসাবেও দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। তিনি সিবিআইয়ের কাছে অনুরোধ করেন, তাকে আর ও এক সপ্তাহের অতিরিক্ত সময় দেওয়া হোক, কারণ তিনি এই মুহূরতে "বাজেট তৈরিতে" ব্যস্ত রয়েছেন।
সিসোদিয়া বলেন, "আমি ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে সিবিআই অফিসে যাব, যখনই তারা (সিবিআই) আমাকে ফোন করবে আমি তাদের সঙ্গে সহযোগিতা করব। দিল্লির অর্থমন্ত্রী হওয়ার কারণে বাজেট তৈরি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তাই আমি নির্ধারিত দিন পরিবর্তন করার অনুরোধ করেছি। আমি সবসময় তদন্তে সহযোগিতা করেছি। ভবিষ্যতেও করব”।
সিসোদিয়ার বিরুদ্ধে পাওয়া নতুন প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছিল। ১৯ ফেব্রুয়ারি ফের সিবিআই তাকে সদর দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেয়। তিনি টুইটে উল্লেখ করেছেন, তিনি সর্বদা তদন্তে সহযোগিতা করে চলেছেন এবং ভবিষ্যতেও সিবিআইকে সবধরণের সহযোগিতা করবেন। সিবিআই সূত্রের খবর, মণীশ সিসোদিয়াকে মদ কেলেঙ্কারির ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক নতুন প্রমাণ হাতে এসেছে। সেগুলিকে সামনে রেখেই মনীশ সিসোদিয়াকে জেরা করতে চাইছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: < বিয়ের পরও কেন লিভ-ইন পরিচয়? ভিনধর্মে বিয়ের জেরেই নিক্কির এই মর্মান্তিক পরিণতি! >
সমন পাওয়ার পরই দিল্লির উপমখ্য মন্ত্রী রবিবার বলেন যে তিনি সিবিআই সদর দফতরে গিয়ে সহযোগিতা করবেন। তিনি আরও বলেন, “সিবিআই ১৪ ঘন্টা ধরে আমার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। আমার ব্যাঙ্কের লকার তল্লাশি করেছে কিন্তু কিছুই পাওয়া যায়নি। আমার গ্রামে গিয়েও তারা কিছুই পায়নি। এখন আমাকে আগামীকাল সকাল ১১টায় সিবিআই সদর দফতরে ডাকা হয়েছে। আমি দফতরে হাজির হয়ে তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করব।”
দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নর বিকে সাক্সেনার নির্দেশে সিবিআই রাজ্যের আম আদমি (AAP) সরকারের আবগারি নীতি নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। পরে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটও (ED) একই মামলায় তদন্ত শুরু করে। অভিযোগ, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকার আবগারি নীতির মাধ্যমে মদ ব্যবসায়ীদের বাড়তি রোজগারের ব্যবস্থা করে দিয়ে কোষাগারের ক্ষতি করেছে। সিবিআইয়ের এফআইআরে মণীশের নাম রয়েছে। ইতিমধ্যে এই মামলায় সিবিআই এবং ইডি বেশ কয়েকজন মদ ব্যবসায়ী এবং কর্পোরেট কনসালট্যান্টকে গ্রেফতার করেছে।
দিল্লির ‘মদ কেলেঙ্কারি’র ঘটনায় নতুন চার্জশিট দাখিল করেছে ইডি। এতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ডেপুটি সিএম মণীশ সিসোদিয়া, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর কন্যা কবিতাসহ অনেক হেভিওয়েটের নাম রয়েছে। সিবিআই দিল্লির মদ নীতির মামলায় তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসিআর কন্যার প্রাক্তন হিসাবরক্ষকে গ্রেপ্তার করেছে। এই বিষয়ে তথ্য দিয়ে সিবিআই জানিয়েছে যে হায়দরাবাদের চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বুচিবাবু গোরান্টলাকে দিল্লির আবগারি নীতি মামলায় সিবিআই গ্রেফতার করেছে, সিবিআই অভিযোগ করেছে বাতিল করা দিল্লি আবগারি নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে বাবুর ভূমিকা সন্দেহজনক। দিল্লি মদ কেলেঙ্কারির ঘটনায় এর আগে কবিতাকে গত বছর ১২ ডিসেম্বর হায়দ্রাবাদে সাত ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই।