গোয়ার প্রতিটি ভোটারের গ্রামের নাম মুখস্থ ছিল পারিক্করের

২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে। সেনাবাহিনী এবং দালালদের মধ্যে অশুভ আঁতাত ভেঙে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার একমাত্র মন্ত্রী, যিনি তাঁর জন্ম তারিখ ১৩ কে শুভ মানতেন।

২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে। সেনাবাহিনী এবং দালালদের মধ্যে অশুভ আঁতাত ভেঙে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার একমাত্র মন্ত্রী, যিনি তাঁর জন্ম তারিখ ১৩ কে শুভ মানতেন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
parrikar

বম্বে আইআইটি থেকে সদ্য স্নাতক হয়ে আসা তরুণ একদিন ঠিক করলেন, গোয়ায় একটা দোকান দেবেন। সেখানে পাটের বস্তা বানিয়ে বিক্রি করা হবে। মাস তিনেকের মধ্যে নিজের মায়ের কাছ থেকে মোটা টাকা ধার নিয়ে শুরু করে দিলেন কাজ। মফঃস্বলে বড় হওয়া মুদির দোকান চালানো বাবার ছেলে হলে কী হবে? ছেলের উচ্চাকাঙ্খার শেষ নেই। বলছি সদ্য প্রয়াত গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিক্করের কথা।

Advertisment

যেমন ভাবা, তেমনি কাজ, পারিক্করের এই স্বভাবই তাঁকে বেশ কিছুটা ব্যতিক্রমী করে রাখল তাঁর রাজনৈতিক জীবনেও। আরএসএস-এ তাঁর গুরুর হাত ধরেই একদিন বিজেপির মাধ্যমে যে জীবন বেছে নিয়েছিলেন মনোহর গোপালকৃষ্ণ প্রভু পারিক্কর।

সে সময় অবশ্য রাজনীতি নয়, ব্যবসাতেই মন দিয়েছিলেন মনোহর। মুসলিম এক পার্টনারের সঙ্গে খুলে ফেললেন হাইড্রলিক কারখানা। তিন দশক পর রাজনৈতিক জীবনে চলে এলেন একেবারে সামনের সারিতে। তিনিই প্রথম গোয়ার রাজনীতিক, যিনি কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হন।
রাজনীতিতে হেভিওয়েট নেতা হলেও জীবনযাপন ছিল অত্যন্ত ছাপোষা। মা আর লক্ষ্মী দেবীর আশীর্বাদ নিয়ে শুরু করতেন কাজ। প্রায়ই তাঁকে রাস্তায় দেখা যেত আর পাঁচটা আম আদমির মতোই। রাস্তার দোকান থেকে রুটি-মাংস, অমলেট খাচ্ছেন, এমন দৃশ্য বিরল ছিল না। অনায়াসে রাজ্যের প্রতিটি ভোটারের গ্রামের নাম মুখস্থ বলে দিতে পারতেন জনপ্রিয়তার শিখরে থাকা এই রাজনীতিবিদ।

publive-image তিনিই প্রথম গোয়ার রাজনীতিক যিনি দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হন

Advertisment

২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্ব সামলেছেন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে। সেনাবাহিনী এবং দালালদের মধ্যে অশুভ আঁতাত ভেঙে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার একমাত্র মন্ত্রী, যিনি তাঁর জন্ম তারিখ ১৩ কে শুভ মানতেন। গাড়ির নম্বরেও উল্লেখ থাকত একই নম্বরের। কী আশ্চর্য! ২০০০ সালে যখন প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হলেন পারিক্কর, মন্ত্রিসভায় তখন ১৩ জন বিজেপি বিধায়ক।

আরও পড়ুন, ভারতের প্রথম লোকপাল হতে চলেছেন পিনাকী চন্দ্র ঘোষ

দিল্লির রাজনীতিক মহলে জনপ্রিয় নাম হয়ে ওঠার আগে নিউ গোয়া ইংলিশ হাই স্কুলের ছেলেটা ছিল সঙ্ঘের চোখের মণি। ২০০০ সালে জোট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হন মনোহর। চার দফায় মুখ্যমন্ত্রী থেকেছেন। বিজেপিতে যোগ দিয়ে ধীরে ধীরে মহারাষ্ট্রের গোপীনাথ মুণ্ডে, প্রমোদ মহাজনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়িয়েছিলেন।

মনোহর পারিক্করের ব্যক্তিত্বই এমন ছিল যে গোয়ার চার্চ কর্তৃপক্ষ এবং কুরেশি সম্প্রদায় তাঁর নেতৃত্ব শুধু যে মেনে নিয়েছিলেন, তা নয়, সমর্থনও করেছিলেন। গো মাংসের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্যেও তাঁর কাছেই যাওয়া যায়, জানতেন গোয়ার মানুষ। মৃত্যুর মাসখানেক আগেও বিজেপির সদর দফতরে পৌঁছে গেছিলেন জনা দশেক ধর্মীয় প্রতিনিধি। মুখ্যমন্ত্রীর আরোগ্য কামনা করে কোরান পড়েন তাঁরা। গোয়ার আর্চবিশপ ফিলিপ নেরি ফেরাও ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন করেছিলেন তাঁরা যেন পারিক্করের জন্য প্রার্থনা করেন। বিজেপির মধ্যে এ হেন ধর্ম নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি সমৃদ্ধ নেতার সংখ্যা হাতে গোনা।

Read the full story in English

national news