সোমবার সকালে হাড়হিম করা দৃশ্যে ঘুম ভেঙেছে ইউপির হামিরপুর জেলার। পথচলতি মানুষ যমুনার মরা গাঙে মৃতদেহ ভাসতে দেখে শিউরে ওঠে। একটা-দুটি নয়, প্রায় এক ডজন দেহ ভেসে ওঠে যমুনা সংলগ্ন এলাকায়। কমবেশি এক ডজন মৃতদেহ এমনভাবে ভাসছে নদীর শুকিয়ে যাওয়ায় জলে। আর সেই দৃশ্য দেখতে ভিড় জমছে হামিরপুর জেলায় যমুনা নদীর উপর কানপুর-সাগর মার্গ সংযোগকারী একটি সেতুতে।তবে স্থানীয়দের দাবি, গত বৃহস্পতিবার ওই দৃশ্য চোখে পড়ছে। কোথাও মৃতদেহ, কোথাও আবার অর্ধদগ্ধ দেহ ভাসছে। কিছু এসে ভিড় করছে পাড়ে। আর সেখানে ভিড় করেছে কাকের দল। চড়ে বেড়াচ্ছে গরু-মহিষও। মৃতদেহ পাশ কাটিয়েই জলে মুখ লাগিয়ে তেষ্টা মেটাচ্ছে তারা।
বিষয়টি নজরে পড়তেই সেতুর রেলিংয়ের উপর থেকে ঝুঁকে পড়েন পথচলতি মানুষ। খবর দেওয়া হয় পুলিশকেও। ট্র্যাক্টর নিয়ে গিয়ে নদীর তীর থেকে দু’টি দেহ উদ্ধার করে নিয়ে গিয়ে সৎকার করে তারা। একসঙ্গে এত শব কোথা থেকে এল? করোনায় আক্রান্ত হয়ে সকলের মৃত্যু হয়েছে কি না, অন্য রোগে এমন হাজারো প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয়দের মন্তব্য, ‘মৃতের ভিড়ে কোথাও দাহকাজের কাঠ কম পড়ছে। ফলে অর্ধদগ্ধ দেহই ছুঁড়ে ফেলা হচ্ছে নদীতে। কোথাও আবার পয়সার অভাবে দাহ না করেই ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে জলে।’
এ নিয়ে পুলিশের তরফে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তবে করোনার প্রকোপে যে হারে মৃত্যু বেড়ে চলেছে রাজ্যে, তাতে স্থানীয়দের অভিযোগ উড়িয়ে দেননি হামীরপুরের এসপি অনুপকুমার সিংহ। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। মৃতদের শনাক্তকরণের কাজ চলছে।
একইভাবে যমুনার পাশাপাশি গঙ্গায় একই দৃশ্য। এবার বিহারের বক্সারে। গঙ্গার ধারে পড়ে রয়েছে শতাধিক মৃত দেহ। আর তাঁদের শরীর ছিঁড়ে খাচ্ছে সারমেয়। ঘটনাটি ঘটেছে বক্সার জেলার চৌসায়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যাঁদের দেহ মিলেছে, তাঁরা প্রত্যেকেই করোনা আক্রান্ত। যার ফলে রীতিমতো উত্তেজনা ছড়ায় ওই এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সকালের দিকে গঙ্গায় ভাসতে দেখা গিয়েছিল ওই দেহগুলিকে। তার পরই সেগুলিকে গঙ্গার ধারে তুলে এনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। স্থানীয়দের অনুমান, গঙ্গার উল্টো পাড়ে উত্তরপ্রদেশ, ওই দিক দিয়েই ভেসে এসেছে দেহগুলি। কারণ তাঁদের দাবি, এই এলাকায় একসঙ্গে এত মানুষের মৃত্যু হওয়া সম্ভব নয়। আপাতত জেলা প্রশাসনকে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বক্সারের এসডিও কেকে উপাধ্যায় বলেন, ‘‘দূর থেকে ১০-১২টি মৃতদেহ ভেসে আসতে দেখা গিয়েছিল। আপাতত যা বোঝা যাচ্ছে, বিগত ৫-৭ দিনে ধরে সেগুলি জলে ভাসছিল। জলে দেহ ভাসানোর প্রথা আমাদের এখানে নেই। দেহগুলির সৎকারের ব্যবস্থা করছি আমরা।‘