কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার 'প্রধানমন্ত্রী ই-বাস সেবা' থেকে শুরু করে ৩২,৫০০ কোটি টাকার ভারতীয় রেলের সাতটি মাল্টি-ট্র্যাকিং প্রকল্পের জন্য সিটি বাস পরিষেবা বাড়ানো-সহ একাধিক প্রকল্প অনুমোদন করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিইএ) বৈঠকে এই সিদ্ধান্তগুলো পাস হয়েছে।
🔴 পিএম ই-বাস সেবা
দূষণ কমাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সিটি বাস পরিষেবায় ই-বাসের সংখ্যা বাড়ানোয় জোর দিল। 'প্রধানমন্ত্রী ই-বাস সেবা' নামে এক প্রকল্পকে সামনে রেখে পরিষেবা বাড়ানোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে দেশের ১৬৯টি শহরে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে মোট ১০,০০০ বৈদ্যুতিক বাস মোতায়েন করা হবে। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পে 'গ্রিন আরবান মোবিলিটি ইনিশিয়েটিভ'-এর অধীনে মাল্টিমোডাল ইন্টারচেঞ্জ সুবিধা এবং এনসিএমসি-ভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় ভাড়া সংগ্রহ ব্যবস্থা ১৮১টি শহরে চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে ৩ লক্ষ বা তার বেশি জনসংখ্যার শহরেই বাসগুলো পরিষেবা দেবে। এছাড়াও, যে সব অঞ্চলে কোনও সংগঠিত বাস পরিষেবা নেই, সেই সমস্ত শহরকেও পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৭,৬১৩ কোটি টাকা। যার মধ্যে ২০,০০০ কোটি টাকা দেবে কেন্দ্রীয় সরকার।
🔴 প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা স্কিম
প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা প্রকল্পের কথা বলেছিলেন। যার লক্ষ্য হল তাঁতি, স্বর্ণকার, কামার, লন্ড্রি শ্রমিক এবং নাপিত-সহ ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পেশার কারিগরদের ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ভর্তুকিযুক্ত ঋণ দেওয়া। কারিগরদের প্রথম ধাপে ১ লক্ষ টাকা এবং দ্বিতীয় ধাপে ৫% সুদের হারে আরও ২ লক্ষ টাকা ভর্তুকিযুক্ত ঋণ দেওয়া হবে। ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বকর্মা জয়ন্তীতে ১৩,০০০ কোটি টাকার আর্থিক ব্যয়ের এই প্রকল্প চালু করা হবে।
🔴 ভারতীয় রেলের ৭টি প্রকল্প
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ৩২,৫০০ কোটি টাকার আনুমানিক ব্যয়-সহ রেল মন্ত্রকের ৭টি মাল্টি-ট্র্যাকিং প্রকল্পও অনুমোদন করেছে। প্রকল্পগুলোয় সম্পূর্ণরূপে কেন্দ্রীয় সরকারই অর্থ দেবে। দেশের ৯টি রাজ্যের (অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, গুজরাট, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গ) ৩৯টি জেলায় এই প্রকল্পগুলো কার্যকরী হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলোর লক্ষ্য, ভারতীয় রেলের বর্তমান নেটওয়ার্ক ২,৩৩৯ কিলোমিটার বৃদ্ধি করা। বর্তমান লাইনের ক্ষমতা বাড়ানো, ট্রেন চলাচল মসৃণ করা, যানজট কমানো এবং যাতায়াত ও পরিবহণ সহজতর করা।
🔴 ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচির সম্প্রসারণ
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ১৪,৯০৩ কোটি টাকা ব্যয়-সহ এক্সটেনশন ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রকল্পের অনুমোদনও বুধবার দিয়েছে। বর্ধিত কর্মসূচির লক্ষ্য হল ৬.২৫ লক্ষ আইটি পেশাদারদের পুনরায় দক্ষতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ দেওয়া। পাশাপাশি, আরও ২.৬৫ লক্ষ ব্যক্তিকে তথ্য সুরক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া। এআই-সক্ষম মাল্টি-ল্যাঙ্গুয়েজ ট্রান্সলেশন যন্ত্র– 'ভাষিণী'– ২২টি রাষ্ট্রীয় ভাষায় চালু করা হবে এবং ন্যাশনাল সুপার কমপিউটার মিশনের অধীনে আরও ৯টি সুপার কমপিউটার যুক্ত করা হবে। প্রকল্পটি মোদী সরকারের স্থির করা 'দ্বিতীয় এবং তৃতীয়স্তরের শহরে ১,২০০ নতুন শিল্পোদ্যোগকে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন- যেন বলিউডের রোমহর্ষক দৃশ্য! রাস্তায় ধাওয়া করে বিট্টু বজরঙ্গীকে ধরল নুহ পুলিশ
🔴 ডিজিলকার প্ল্যাটফর্ম
এর পাশাপাশি সরকারের ডিজিলকার প্ল্যাটফর্ম, যা ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের শংসাপত্র-সহ বিভিন্ন নথির ডিজিটাল সংস্করণ পাওয়ার সুবিধা দেয়, একটি আলাদা অ্যাপ হিসেবে মাইক্রো, স্মল অ্যান্ড মিডিয়াম এন্টারপ্রাইজে (এমএসএমই)-র সঙ্গে যুক্ত হবে। যার সাহায্যে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র এবং মাঝারি মাপের সংস্থাগুলি তাদের নথি ডিজিটাল পদ্ধতিতে পেয়ে যাবে।