কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর (সিএপিএফ) ৪৩৬ জন কর্মী গত তিন বছরে আত্মহত্যা করেছেন। আর, ২০১১ সাল থেকে সামগ্রিকভাবে দেশে ১,৫৩২ জন কর্মী আত্মহত্যা করে মারা গিয়েছেন। মঙ্গলবার, সংসদে এমনটাই জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক (এমএইচএ)। এই তথ্য অনুসারে, গত এক দশকে যে কোনও বছরের তুলনায় সিএপিএফ কর্মীদের আত্মহত্যার সংখ্যা গত তিন বছরে সবচেয়ে বেশি।
এই ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই এক প্রশ্নের লিখিত জবাবে লোকসভায় সিএপিএফ কর্মীদের আত্মহত্যার তথ্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, '২০২২ সালে ১৩৬ জন সিএপিএফ কর্মী, ২০২১ সালে ১৫৭ জন এবং ২০২০ সালে ১৪৩ জন সিএপিএফ কর্মী আত্মহত্যা করে। চলতি বছর এখনও পর্যন্ত এই ধরনের ৭১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।'
সিএপিএফের মধ্যে রয়েছে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ), বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ), সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি), ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি), সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ), অসম রাইফেলস এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড (এনএসজি)। সব মিলিয়ে দেশের আধাসামরিক বাহিনীতে প্রায় ৯ লক্ষ কর্মী আছেন। রাই জানিয়েছেন যে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীতে আত্মহত্যার ঘটনা রুখতে ইতিমধ্যেই প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়েছে সরকার। এই জন্য একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। সরকার বর্তমানে সেই টাস্কফোর্সের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছে।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস রিপোর্টে জানিয়েছিল যে কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনীর মধ্যে বৈষম্য, দুর্ব্যবহারের ট্রমা, কর্মক্ষেত্রে উত্পীড়ন, শাস্তিমূলক বা আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ভয় এবং কোম্পানি কমান্ডার এবং জওয়ানদের মধ্যে যোগাযোগের ছিল। সিএপিএফ-এ আত্মহত্যা এবং এক জওয়ানের অপর জওয়ানকে হত্যার ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখতে গঠিত টাস্ক ফোর্স ইতিমধ্যেই তা জানিয়েছে।
আরও পড়ুন- জোটের ‘INDIA’ নামকরণের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা, কোন ধারায়, কারণটা কী?
এবার রাই কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনীর জওয়ানদের বছরভিত্তিক আত্মহত্যার ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, '২০১১ সালে ১১৯টি, ২০১২ সালে ১১৮টি, ২০১৩ সালে ১১৩টি, ২০১৪ সালে ১২৫টি, ২০১৫ সালে ১০৮টি, ২০১৬ সালে ৯২টি, ২০১৭ সালে ১২৫টি, ২০১৭ সালে ১২৫টি, ২০১৮ সালে ৯৬টি, ২০১৯ সালে ১২৯টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।' রাই আরও জানান, প্রশাসনিক হয়রানির কারণে কোনও আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনি।