‘‘কাশ্মীর ছাড়া পাকিস্তান সম্পূর্ণ নয়’’, পুলওয়ামা হামলার ১০ দিন আগে এ ভাষাতেই দলের সদস্যদের বার্তা দিয়েছে মাসুদ আজহার। জইশ প্রধানকে এও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘শীঘ্রই স্বাধীন হবে কাশ্মীর। একইসঙ্গে ভারতের সব মুসলিমরা স্বাধীন হবে।’’ আজহারের এমন বক্তব্যের অডিও টেপই মিলেছে ভারতের হাতে। যা প্রমাণ হিসেবে ইসলামাবাদের হাতে তুলে দিয়েছে নয়া দিল্লি। সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, কাশ্মীরে জইশের সক্রিয়তার প্রমাণ হিসেবে মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে এই প্রমাণ পাকিস্তানকে দিয়েছে ভারত।
পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার প্রায় ১০ দিন আগে উপত্যকায় নিহত জঙ্গিদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে একথা বলেছে জইশ প্রধান। আজহারের অডিও বার্তা গত ৫ ফেব্রুয়ারির বলে মনে করা হচ্ছে। অডিও বার্তায় আফগানিস্তানে আমেরিকার অবস্থানের সঙ্গে কাশ্মীরে ভারতের অবস্থানের তুলনা টেনেছে মাসুদ। এ প্রসঙ্গে অডিও মেসেজে আজহারকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আফগানিস্তানে সমঝোতার পথে হাঁটতে হয়েছিল আমেরিকাকে। কাশ্মীর সংহতি দিবসের আগে ভারতকেও সমঝোতার পথে হাঁটতে হবে। যদি কাশ্মীরের সব মুসলিমরা ভারতের বিরুদ্ধে একজোট হয়, তবে এক মাসের মধ্যে জয় নিশ্চিত...।’’
আরও পড়ুন, ভোলবদল! শীঘ্রই মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ পাকিস্তানের?
নর্থ ব্লকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই অডিও বার্তায় স্পষ্ট, পাঠানকোট, উরি ও হালের পুলওয়ামা হামলার মাস্টারমাইন্ড আজহার ভারতে আরও হামলার ছক কষছে। ওই অডিও বার্তায় আজহার পুলওয়ামা হামলার নাম না নিলেও গোয়েন্দা আধিকারিকদের মতে, কাশ্মীরকে যেভাবে একজোট হওয়ার বার্তা দেওয়া হয়েছে, তাতে বড় হামলার পরিকল্পনা করেছিল জইশ প্রধান।
অন্যদিকে, এমন সময়ে মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদের হাতে নয়া দিল্লি প্রমাণ তুলে দিল, যখন রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা তালিকায় মাসুদ আজহারের নাম অন্তর্ভুক্তি নিয়ে জোর সওয়াল উঠেছে বিশ্ব দরবারে। পাশাপাশি ক’দিন আগেই পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি স্বীকার করেন, ‘‘আজহার পাকিস্তানেই রয়েছে। খুবই অসুস্থ।’’
আরও পড়ুন, হামলার দায় স্বীকার করেনি জইশ, বলছে পাকিস্তান
জইশ কার্যকলাপ নিয়ে সম্প্রতি যে ডসিয়ার পাঠানো হয়েছে, তাতে ৪০ জন জঙ্গির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সকলেই পাকিস্তানের নাগরিক বলে জানা গিয়েছে। এদের সকলেরই প্রশিক্ষণ হয়েছে বালাকোটের প্রশিক্ষণ শিবিরে। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এদের সকলেরই বয়স ১৭ থেকে ২৩ বছরের মধ্যে। পাকিস্তানের ৮টি জেলা থেকে এরা বালাকোটের প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দেয়।
অন্যদিকে, আরেক অডিও বার্তায় আজহারকে বলতে শোনা গিয়েছে, সকলে যেন উসমানের পথ বেছে নেয়। এমন কথাই উল্লেখ করা হয়েছে ডসিয়ারে। উল্লেখ্য, গত বছরের ৩০ অক্টোবর জম্মু-কাশ্মীরের ত্রালে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে মৃত্যু হয় আজহারের ভাইপো উসমান হায়দরের(১৮)। মাসুদের বড় ভাই ইব্রাহিম আজহারের ছেলে উসমান।
Read the full story in English