Advertisment

NRC নিয়ে দীর্ঘমেয়াদী আইনি কর্মসূচীর পরিকল্পনা মতুয়া সম্প্রদায়ের

আসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জির আওতার বাইরে যে ৪০ লক্ষ মানুষ রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন ৩ লক্ষ মতুয়া। পশ্চিমবঙ্গের মতুয়ারা তাই বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে চলেছেন, যার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এনআরসির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে মতুয়া মহাসঙ্ঘ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

কলকাতায় এনআরসি-র বিরুদ্ধে সর্বধর্ম প্রতিবাদ মিছিল। এক্সপ্রেস ছবি: পার্থ পাল

আসামে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি বা এনআরসি চূড়ান্ত খসড়া থেকে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়া, এবং পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি  দিলীপ ঘোষের সাম্প্রতিক মন্তব্য়ের প্রেক্ষিতে আজ সকালে শহরতলির ৩০টি রেলস্টেশনে অবরোধ করেন মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। মতুয়ারা হলেন সেই লোকসম্প্রদায়, যাঁরা হরিচাঁদ ঠাকুরের প্রচলিত সাধন পদ্ধতি মতুয়াবাদ মেনে চলেন।

Advertisment

শুধু রেল অবরোধ করেই ক্ষান্ত থাকছেন না মতুয়ারা। এবার তাঁরা আরও বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে চলেছেন, যার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে এনআরসির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবে মতুয়া মহাসঙ্ঘ। পাশাপাশি, কলকাতায় গান্ধী মূর্তির পাদদেশে এনআরসির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় স্তরে বড় ধরনের সভা আয়োজিত হবে। এরই সঙ্গে চলবে প্রতিটি ব্লকে বিক্ষোভ কর্মসূচি।

আরও পড়ুন: NRC-তে নাম না থাকলেই ভোটার তালিকা থেকে বাদ নয়

মতুয়া মহাসঙ্ঘের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য় এবং রাজ্যের খাদ্য়মন্ত্রী জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, "সুপ্রিম কোর্টে মামলা করা হবে। এই নিয়ে আমাদের সভায় বিস্তারিত আলোচনা হবে। সরকার আয়কর রিটার্ন নিয়েছে। ওই টাকায় সরকার চলেছে। তারপর বলছে দেশ থেকে বেরিয়ে যাও? সমস্ত দলিল এবং তথ্য পেশ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হবে। তৃণমূল কংগ্রেস মতুয়াদের সঙ্গে থাকবে। তাদের দাবি-দাওয়ার সঙ্গে সহমত তৃণমূল।" মন্ত্রী আরও বলেন, "আসামে কয়েক লক্ষ মতুয়া রয়েছেন। তাঁরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। কান্নাকাটি শুরু করেছেন। আমরা বরাবরই মতুয়াদের পাশে ছিলাম। মতুয়াদের মুক্তিদাতা মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। আমরা এঁদের সঙ্গে আন্দোলনে থাকব। এঁদের বিতাড়িত করার কথা কেউ যদি ভাবে তাহলে সে স্বপ্নের দেশে বাস করছে। এই কারণেই রেল অবরোধেও আমাদের সমর্থন ছিল। মতুয়ারা যোগ্য় জবাব দেবে দিলীপ ঘোষকেও তাঁর মন্তব্য়ের জন্য়।"

মতুয়া মহাসঙ্ঘের সম্পাদক অভিজিত বিশ্বাস বলেন, "আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি শনিবার মিটিংয়ে বসবে। সেখানে পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচি নেওয়া হবে। আমরা সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার কথা ভাবছি। তারপর প্রতিটি ব্লকে আন্দোলনের কথা ভাবছি। যে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম রয়েছে তার মধ্য়ে ৩ লক্ষ নাম রয়েছে মতুয়াদের। সেই সংখ্য়াটা বাড়তে পারে। এখনো সবার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।"

বিজেপি কথা রাখেনি বলে দাবি সংগঠনের সম্পাদকের। তিনি বলেন, "বারাসাতের কাছারী ময়দানে ২০১৪ সালে এক জনসভায় নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তারপর এই তঞ্চকতা করতে পারেন? ধর্মীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে কি করে এটা কেউ করতে পারেন? তারা যদি এত হিন্দু হিন্দু করে তাহলে একজন মতুয়াকেও নাগরিকত্ব থেকে বাদ দেওয়ার কথা নয়। এটাতে আমরা অশ্চর্য হয়ে গিয়েছি। বাংলাদেশের ভিটেমাটি ছেড়ে এসেছি। আমাদের বাংলাদেশ আবার নেবে কেন?"

Advertisment