মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকাকালীন বিরাট জালিয়াতি! ৪৬শতাংশ ছাড়ে ২৬১টি ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন মায়াবতীর ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী। অডিট রিপোর্টে চূড়ান্ত জালিয়াতি ঘিরে হুলস্থূল। বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) সুপ্রিমো এবং উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতীর আমলে, তার ভাই এবং ভগ্নিপতিকে নয়ডার একটি অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সে অবৈধভাবে ৪৬% ছাড়ে ২৬১টি ফ্ল্যাট বরাদ্দ করা হয়েছিল। অ্যাপার্টমেন্টটি রিয়েল এস্টেট ফার্ম Logix Infratech Pvt Ltd নামে এক বেসরকারি সংস্থা তৈরি করে।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এই চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত ‘অফিসিয়াল নথি’ পরীক্ষা করে এই জালিয়াতির বিষয়টি ফাঁস করেছে। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, তার প্রতিবেদনে, কোম্পানির সূচনা থেকে দেউলিয়া হওয়া পর্যন্ত এবং ২০২৩ সালের মে মাসে পরবর্তী ফরেনসিক অডিট এই ১২ বছরের দীর্ঘ সময়ের একের পর ঘটনা তুলে ধরে এই বিরাট জালিয়াতির ঘটনা সামনে আনে। রিপোর্ট অনুসারে ২০১০ সালের মে মাসে, Logix Infratech প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি প্রতিষ্ঠিত হয়।
২০০৭ সালের মে মাসে বিএসপি উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করে এবং মায়াবতী মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। প্রতিষ্ঠার পর মাত্র ২ মাসেরও কম সময়ের মধ্যে, Logix Infratech Pvt Ltd, মায়াবতীর ভাই আনন্দ কুমার এবং তার স্ত্রী বিচিত্রা লতার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে, নয়ডা প্রকল্প 'ব্লসম গ্রিনস'-এ প্রায় ২ লক্ষ বর্গফুট জায়গা কেনে। সেই সময় প্রতি বর্গফুট জায়গা কেনা হয় ২৩০০ টাকা দরে এবং প্রতি বর্গফুট ২৩৫০ টাকায় বিক্রির জন্য জন্য একটি চুক্তিও সাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির ৩ মাসের মধ্যে, নয়ডা কর্তৃপক্ষ, যা উত্তরপ্রদেশ সরকারের অধীনে, 'ব্লসম গ্রিনস'-এর ২২টি টাওয়ার তৈরি করার জন্য লজিক্স ইনফ্রাটেককে ২৪.১৭ একর জমি লিজ দেয়। ব্লসম গ্রিনসে মোট ২৫৩৮ আবাসিক ইউনিটের মধ্যে ২৩২৯ ইউনিট বিক্রি করেছে সংস্থা। ২০১৬ সালের ৪ এপ্রিল আনন্দ কুমারকে ২৮.২৪ কোটি টাকা অগ্রিম অর্থ ফেরতের পরেও ১৩৫টি অ্যাপার্টমেন্ট বরাদ্দ করা হয়েছিল এবং বিচিত্রাকে ২৮.১৯ কোটি টাকা অগ্রিম অর্থ প্রদানের পরে ১২৬টি অ্যাপার্টমেন্ট বরাদ্দ করা হয়।
২০২০ সালের ফ্রেব্রুয়ারিতে Logix Infratech নির্মাণ সংস্থা আহলুওয়ালিয়া কন্ট্রাক্টস লিমিটেডের থেকে ৭.৭২ কোটি টাকা বকেয়া দাবি করে তার প্রথম নোটিশ পায়। আহলুওয়ালিয়া কন্ট্রাক্টস (ইন্ডিয়া) লিমিটেডকে তার ব্লসম গ্রিনস প্রকল্পের জন্য ২৫৯.৮০ কোটি টাকার সিভিল এবং স্ট্রাকচারাল ওয়ার্কস কন্ট্রাক্ট দেওয়া হয়। ২০২০ সালের অক্টোবরে, Logix উল্লেখ করে আহলুওয়ালিয়া চুক্তির বকেয়া টাকা পরিশোধে নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে। কারণ হিসাবে বলা হয় কোভিড-১৯ এর প্রকোপ। লেনদেনের অডিট রিপোর্ট অনুসারে, ব্লসম গ্রিনস প্রকল্পে মায়াবতীর ভাই এবং ভগ্নিপতির কাছে বিক্রি করা ফ্ল্যাটগুলির মূল্য বাজার দরের থেকে অনেকটাই কল; ছিল। লেনদেনে জালিয়াতির পরিমাণও ছিল আকাশছোঁয়া।