জামিন পেলেন 'বিদেশি' তকমা প্রাপ্ত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মী মহম্মদ সানাউল্লাহ। অসমের একটি ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল তাঁকে। তবে এদিন জামিন মিললেও ফরেন ট্রাইব্যুনালের নির্দেশের বিরুদ্ধে গুয়াহাটি হাইকোর্টে সানাউল্লাহর আবেদন এখনও বিচারাধীন।
উল্লেখ্য, তিরিশ বছর ধরে দেশের সেবা করা বছর বাহান্নর ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সুবেদার তথা বর্তমানে অসম বর্ডার পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর মহম্মদ সানাউল্লাহকে ‘বিদেশি’ তকমায় দিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল। অসম পুলিশের সীমান্ত শাখার প্রাক্তন সাব ইন্সপেক্টর চন্দ্রমল দাসের তৈরি একটি রিপোর্টের ভিত্তিতে ‘বিদেশি’ তকমা দিয়ে গ্রেফতার করা হয় সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সুবেদার মহম্মদ সানাউল্লাহকে। এই ঘটনা সামনে আসতেই দেশজুড়ে সেনাবাহিনীর নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া মেলে। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে তৈরি একটি রিপোর্টে চন্দ্রমল তিনজনের নাম সাক্ষী হিসেবে উল্লেখ করেন। কিন্তু ওই তিনি সাক্ষী পুলিশের অভিযোগ জানিয়ে বলেন, তাঁরা বিবৃতি দেননি এবং তাঁদের সই জাল করা হয়েছিল। এরপরই বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত চন্দ্রমল দাসের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়।
আরও পড়ুন তিন দশক সেনাবাহিনীতে কাজ করেও ‘বিদেশি’ তকমা, সাক্ষীদের মতে ঘটনাটি ‘সাজানো’
এর আগে অসম পুলিশের অতিরিক্ত সুপার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, “বোকো থানার রিপোর্ট অনুযায়ী তিন সাক্ষীই চন্দ্রমল দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন এবং তাঁরা জানান, সাক্ষী হিসেবে চন্দ্রমল তাঁদের কোনও বিবৃতি নথিভুক্ত করেননি। এমনকি রিপোর্টে যে সই আছে তাও জাল করা হয়েছে”। ১৯৮৭ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত সুদীর্ঘ কর্মজীবনে সেনাকর্মী হিসাবে জম্মু-কাশ্মীর সহ উত্তর ভারতের একাধিক অশান্ত এলাকায় কাজ করেছেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত এই সানাউল্লাহ।
সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পরে ২০১৭ সালে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে তিনি কামরুপ জেলায় অসম বর্ডার পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর পদে যোগ দেন। এরপরই উপরিউক্ত তিন সাক্ষীর বয়ানের ভিত্তিতে (‘রেফারেন্স মামলা’) ২০০৮-০৯ সালে সন্দেহজনক অবৈধ বিদেশি হিসাবে সানাউল্লাহকে সনাক্ত করে ফরেনার ট্রাইবুন্যালে পাঠায় চন্দ্রমল দাস। বর্তমানে সাক্ষীদের বয়ান সামনে আসায় ঘটনাটির মোড় ঘুরে যায় এবং মনে করা হচ্ছে এই সব ঘটনা বিচার করেই জামিন দেওয়া হল ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রাক্তন এই সুবেদারকে।